প্রতিবেদন: সংসদ স্বাভাবিক হতেই বাংলার বঞ্চনার ইস্যুতে সরব হতে শুরু করলেন তৃণমূল সাংসদরা৷ মঙ্গলবার লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে মনরেগা প্রকল্পে বাংলার দীর্ঘদিনের বকেয়া আদায়ের দাবিতে সুর চড়ান প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ ও লোকসভায় দলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিনই মনরেগা নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নে পর্দাফাঁস হয়েছে মোদি সরকারের৷ তাদেরই তুলে ধরা পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ না পাওয়ার পরেও সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে বাংলায়৷
আরও পড়ুন-ত্রিপুরার হোটেলে বাংলাদেশি বয়কট
উল্লেখ্য, ১০০ দিনের কাজের রাজ্যের ন্যায্য প্রাপ্য বকেয়া টাকা না মিটিয়ে মোদি সরকার বারবার মিথ্যে দাবি করছে বলে উল্লেখ করে লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, বারবার বলা হচ্ছে বাংলায় এই প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে৷ তাহলে আপনারা সেই দুর্নীতি খুঁজে পাচ্ছেন না কেন? কেন তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? কেন কোনও দোষীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না এভাবে বাংলাকে বঞ্চনা করা যাবে না৷ অন্য রাজ্যকে টাকা দেওয়া হবে, কেন বাংলা এই প্রকল্পে তার ন্যায্য প্রাপ্য টাকা পাবে না? মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ সংবিধানের ১৪ ধারার পরিপন্থী বলেও লোকসভায় দাবি জানান তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর দাবি, আপনারা বাংলার মানুষকে দেখতে পারেন না, তাই কি বারবার বাংলাকে এই ভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে? প্রত্যেকবার বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে৷ এর পরেই সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সামনে কল্যাণ দাবি করেন, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মনরেগা খাতে বাংলাকে একটি টাকাও দেয়নি মোদি সরকার৷ কেন বারবার বাংলার মানুষকে বঞ্চিত হতে হবে? কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান৷
আরও পড়ুন-মহড়ায় ডুবে রোহিত, চর্চায় বিরাট, অ্যাডিলেডে গম্ভীর ফুরফুরে ভারত
অন্যদিকে, মঙ্গলবার লোকসভায় দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ান যে সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন তাতে দেখা যাচ্ছে, মনরেগা প্রকল্পে দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে বাংলায়৷ কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনও অর্থসাহায্য না আসার পরেও রাজ্য নিজের অর্থ দিয়ে দিনের পর দিন মনরেগা প্রকল্পের কাজের মাধ্যমে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির হাতে অর্থ পৌঁছে দিচ্ছে৷ তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের লিখিত প্রশ্নের জবাবে পেশ করা কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, পরপর তিন বছর অর্থাৎ ২০২১(২১,৭০,১৮,৬৭৫ শ্রমদিবস), ২০২২(৩,৬৩,২৪,৪৫৩ শ্রমদিবস) এবং ২০২৩(১৬৪৭৮০ শ্রমদিবস) সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রাজ্যে সব থেকে বেশি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে৷ এর পরেও কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে মনরেগা প্রকল্পে কোনও টাকা দিচ্ছে না৷