প্রতিবেদন : বাংলাদেশ জুড়ে যে অরাজকতা, অভব্যতা ও নৃশংস অত্যাচার চলছে তাকে বানানো গল্প-উপন্যাস বলায় বিশ্ব জুড়ে ক্ষোভের মুখে ইউনুস সরকার। একই সঙ্গে লাগাতার এই ঘটনার পরেও কেন্দ্রের তরফে মৌনব্রত পালন করায় ক্ষোভে ফুঁঁসছে বাংলা-সহ ভারতবাসী। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ স্রেফ রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতেই মৌনব্রত পালন করছে কেন্দ্র। তৃণমূলের বক্তব্য, বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক। তীব্র প্রতিবাদযোগ্য, নিন্দনীয়। প্রথাগতভাবে রাজ্য সরকার দিল্লি যা করবে তাতে পূর্ণ সমর্থন করবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তি সেনা পাঠানোর কথা বলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার রহস্যজনকভাবে নির্লিপ্ত। কেন্দ্র কেন এখনও কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে না বাংলাদেশ ইস্যুতে? দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এটা আন্তর্জাতিক ইস্যু। যা করার ভারত সরকারকে করতে হবে। এখানে পশ্চিমবঙ্গের কিছু করার নেই। কেন্দ্র সরকার যা করবে তাকে আমরা প্রথাগতভাবে সমর্থন করব। বাংলাদেশকে ইস্যু করে বিজেপি হঠাৎ রাজনীতি করতে নেমেছে মিছিল, মিটিং করছে। বিজেপি সরকার বাংলাদেশের যে ইস্যুটা হয়েছে তাকে থামাতে চায় না বরং সেটাকে এই রাজ্যে এনে প্ররোচিত করে ভোটের মার্কেটিং করছে। বাংলাদেশে এমন অশুভ শক্তি তৈরি করা হচ্ছে তাতে একটা ধর্মীয় ভেদাভেদ তৈরি হচ্ছে। মোদি সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশে গিয়ে ল্যান্ড করুন। মণিপুরে তো যাননি অন্তত ঢাকায় যান।
আরও পড়ুন: রেশনের ভর্তুকিতেও বঞ্চিত বাংলা, বলছে কেন্দ্রের তথ্যই
এটা ঘটনা, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা ঘিরে ক্রমেই রহস্য ঘনাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহঃ ইউনুসের নেতৃত্বে তুমুল অরাজকতা চলছে সেখানে, ভূলুণ্ঠিত মানবাধিকার, তবুও অদ্ভুতভাবে নিষ্ক্রিয়, নিশ্চুপ কেন্দ্র। মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী।
একটার পর একটা স্বেচ্ছাচার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। সরকারিভাবে কিছু না বলা হলেও, কোনও এক জায়গায় স্থানীয় উদ্যোগে শুরু হয়েছে ইসলামি শরিয়া শাসনও। নিষিদ্ধ করা হয়েছে মহিলাদের বাজারে যাতায়াত। দোকানদারদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, মহিলাদের যেন কোনওভাবেই কিছু বিক্রি করা না হয়। মাইকে রীতিমতো ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে এই হুঁশিয়ারি। এখানেই শেষ নয়, নামাজের সময় বাজার বন্ধ রাখারও ফতোয়া জারি করা হয়েছে। মৌলবাদীদের নির্দেশ, দোকানে দোকানে পর্দা ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কট্টর মৌলবাদীদের মাইকে এই ঘোষণা ক্যামেরাবন্দি করে তার ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে আপোলড করেছেন একটি ইংরেজি সাপ্তাহিকের সম্পাদক।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক খবর, বাংলাদেশে প্রতিহিংসার ধরপাকড় এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে উপচে পড়ছে সমস্ত জেল। আর জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না বন্দিদের। অথচ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধুয়ো তুলে ৫ অগাস্টের আগে যখন সেখানে একটার পর একটা জেল ভেঙে ফেলা হয়েছিল, তখন কারাগার থেকে পালিয়ে গিয়েছিল প্রায় ২ হাজার ২০০ বন্দি। তার মধ্যে ছিল মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৭৮ জন কুখ্যাত জঙ্গি এবং ১১ জন শীর্ষ সন্ত্রাসবাদী। এখনও খোঁজ নেই অন্তত ৭০০ জনের। দেশের পক্ষে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। বুধবার কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মহঃ মোতাহের হোসেন জানিয়েছেন, বন্দিসংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা অন্তত ১৭টি কারাগারের। বন্দিসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার। আসলে ইউনুস সরকার প্রতিহিংসার কারণে অজস্র নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দেওয়াতেই কারাগারগুলোর এই দশা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।