সেনার ছুরিতেই পরিবারকে খুন ২০ বছরের অর্জুনের

গতকাল অর্থাৎ, বুধবার সকালে রাজধানীর (Delhi) নেব সরাই এলাকায় ঘরের মধ্য থেকে একই পরিবারের তিনজনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।

Must read

গুছিয়েই সাজিয়েছিলেন মিথ্যেটা তবে শেষ রক্ষা হয় নি। গতকাল অর্থাৎ, বুধবার সকালে রাজধানীর (Delhi) নেব সরাই এলাকায় ঘরের মধ্য থেকে একই পরিবারের তিনজনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম রাজেশ কুমার (৫১), তাঁর স্ত্রী কোমল (৪৬) এবং তাঁদের মেয়ে কবিতা (২৩)। মৃত দম্পতির পুত্র অর্জুনের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকে দেখেন, ছুরি দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তিনজনকে। রক্তে ঘর ভেসে যাচ্ছে। এই অবস্থায় অর্জুন জানান তিনি প্রতিদিনের মতো প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন তিনজনেই মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরিবারের অন্যদের ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। অর্জুনও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় পরে যায়। তদন্ত শুরু করতেই অর্জুনের কথায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করে পুলিশ। ৪ঠা ডিসেম্বর, আনুমানিক সকাল ৬.৫৩ নাগাদ, একটি পিসিআর কলে দক্ষিণ জেলার নেব সরাই এলাকায় তিনজন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর আসে। পুলিশ অবিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন মৃতের ছেলে জানাচ্ছেন যে তিনি সকাল সাড়ে পাঁচটায় মর্নিং ওয়াক করতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে মা, বাবা ও বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ফলস্বরূপ, ধারা ১০৩ (১) বিএনএস এর অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু হয়।

আরও পড়ুন-আমডাঙায় গ্যাসের গোডাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের নজরে আসে বাড়ি থেকে কোনও জিনিস চুরি যায়নি। সন্দেহ হয় তবে কি খুনের অভিপ্রায়েই বাড়িতে ঢুকেছিল আততায়ীরা? পুলিশ অর্জুনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। সাউর্দান রেঞ্জের যুগ্ম সিপি এসকে জৈন এই মর্মে জানান জোর করে বাড়িতে ঢোকার কোনও চিহ্ন পুলিশ পায়নি। অন্যদিকে কোনও কিছু চুরি যায়নি। মৃতদেহগুলি বিছানায় পড়েছিল। এটা চুরির ঘটনা নয় সেই বিষয়ে সন্দেহ নেই। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। অর্জুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর কথায় অসঙ্গতি পাওয়ায় তাকেই প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে পুলিশ। অবশেষে তিনি স্বীকার করেছেন যে বাবা, মা এবং দিদিকে কুপিয়ে খুন করেছেন। এরপরেই খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন-নারী কবজ: মহিলা পুলিশ কর্মীদের ক্যান্সার সুরক্ষায় প্রকল্প চালু বারাসত পুলিশ জেলার

অর্জুনের এক মামা জানান, এই পরিবারের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না। রাজেশ সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। অবসর নেওয়ার পর সিকিউরিটি অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। তার ভাগ্নি কলেজে পড়ত এবং মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট। বছর কুড়ির অর্জুন মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্ট। সূত্রের খবর, অর্জুনের সঙ্গে পরিবারের সম্পর্ক একদমই ভাল ছিল না। প্রায়শই বাড়িতে ঝামেলা লেগেই থাকত। বাবার বকুনি এবং দিদির সঙ্গে ঝগড়ার পরেই তিনজনকে খুনের ছক কষেন অর্জুন। ৪ ডিসেম্বর বাবা-মার বিবাহ বার্ষিকী ছিল। সেদিনই সবাইকে খুনের পরিকল্পনা করেন অর্জুন। সেনার একটি ছুরি দিয়ে তিনজনকে কুপিয়ে খুন করেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন অর্জুন। তিনি বলেন, অন্যদের সামনে বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত করার কারণে তিনি গভীরভাবে অপমানিত বোধ করেন। কেউ তাকে সমর্থন করে না বলে তার বাবা এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি তার গভীর ক্ষোভ ছিল। এরপরেই তিনি যখন জানতে পারলেন যে তার বাবা তার বোনকে সম্পত্তি দিচ্ছেন তখন তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন| এরপরেই তিনি তাদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। তাই, ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে আগে থেকে রাখা ছুরিটি নিয়ে যায় এবং তার বাবা-মা এবং বোনকে ভোরবেলা ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করেন।

Latest article