গঙ্গার ডলফিন (Dolphin)বা শুশুক দেখতে বহু লোক গঙ্গার ধারে ভিড় করেন। কিন্তু সমস্যা হল বিভিন্ন কারণে গঙ্গা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শুশুক। প্যাঙ্গোলিন ও ফিশিং ক্যাট-ও বিলুপ্তপ্রায়। এই সকল প্রাণীদের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে এবার উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য বন দপ্তর। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এদের জীবন বিপন্ন। এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিশদে জানতে সমীক্ষা চালিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।
আরও পড়ুন-পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল রোটাং পাস
বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে রাজ্যের বনাঞ্চলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শুধু তাই নয়, বনজঙ্গলের গাছপালাতেও এই প্রভাব পড়ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য একটি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। এই মর্মে আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থা জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সি)–র থেকে ১০৪ কোটি টাকা লোন পেতে চলেছে সরকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুশুক, প্যাঙ্গোলিন ও ফিশিং ক্যাট রক্ষায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। হাওড়া, নদিয়া, বর্ধমান,মুর্শিদাবাদ–সহ রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে গঙ্গায় ডলফিন দেখতে পাওয়া যায়। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার সাথে নজরদারি বাড়ানো হবে। ডলফিনের সংখ্যা যাতে বাড়ে, সে জন্যও যথেষ্ট পদক্ষেপ করা হবে। অন্যদিকে প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যা বাড়াতে কৃত্রিম ভাবে প্রজনন ঘটিয়ে সেগুলিকে জঙ্গলে আবার ছাড়া হবে। ফিশিং ক্যাট সংরক্ষণের জন্যও এই উপায় অবলম্বন করা হবে বলেই বন দপ্তর সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন-প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত বৌদ্ধচর্চার বিশিষ্ট পণ্ডিত সুনীতিকুমার পাঠক
সূত্রের খবর, গঙ্গায় যে সকল ডলফিনের দেখা মেলে সেগুলো নদীর গভীরে বসবাস করে। তবে আগে যত সংখ্যায় তাদের দেখা পাওয়া যেত এখন অনেকটাই কম। এর অন্যতম বড় কারণ গঙ্গার দূষণ। এর ফলে ডলফিনের প্রজনন ক্ষমতা কমছে, মৃত্যুও হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে বর্ধমানের কালনা অঞ্চলে কমপক্ষে ১০টি ডলফিনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জালে আটকেও অনেক ডলফিন মারা গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহলে আগে প্রচুর প্যাঙ্গোলিন দেখতে পাওয়া যেত। উই ও পিঁপড়ে খায় তারা। অতিরিক্ত মাত্রায় জঙ্গল সাফ করার ফলে প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যাও কমছে।
আরও পড়ুন-ইন্ডিয়া জোট থেকে রাজ্য রাজনীতি, খোলাখুলি মুখ্যমন্ত্রী
বঙ্গের আরো একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী হলো ফিশিং ক্যাট বা মেছো বেড়াল। পশ্চিমবঙ্গের ‘স্টেট অ্যানিম্যাল’ এই ফিশিং ক্যাট হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ও উত্তর চব্বিশ পরগনা, মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে বেশি দেখা যায়। তবে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে ফিশিং ক্যাটের সঙ্গে মানুষের সমস্যা হচ্ছে। গাড়ি চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে অনেক। হাওড়া জেলাতে পথ দুর্ঘটনায় ১৬টির মৃত্যু হয়েছে। তবে এবার সবদিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।