প্রতিবেদন : বিচার হবে গণহত্যাকারী ইউনুসের। অন্ধকার কেটে গিয়ে নতুন সূর্যোদয় হবে বাংলাদেশে। রবিবার লন্ডনে ৭১-এর শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল ভাষণে দৃঢ়তার সঙ্গে একথা বললেন বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর বক্তৃতার মাঝেই ইউনুসের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে অডিয়েন্স। স্লোগান ওঠে জয় বাংলা। এদিন লন্ডনের মিলনার রোডে একটি প্রেক্ষাগৃহে বিশেষ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল আওয়ামি লিগ। বক্তা দলের সুপ্রিমো শেখ হাসিনা। মহম্মদ ইউনুসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে তিনি মন্তব্য করেন, ইউনুস নিজেই খুনি, গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড।
আরও পড়ুন-দেশ ছাড়লেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ বিদ্রোহীদের দখলে রাজধানী দামাস্কাস
জুলাইতে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের নামে যা হয়েছে তা মোটেই ছাত্রদের আন্দোলন নয়। ইউনুসের সুপরিকল্পিত নিখুঁত চক্রান্ত। ক্লিনটনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের সময়ই বোঝা গিয়েছিল ব্যাপারটা। হাসিনার কথায়, ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়িত করে ফেলতাম এই ২০২৪-এই। কিন্তু ইউনুসের চক্রান্ত তা করতে দিল না। আসলে ইউনুস দল গড়তে গিয়েছিল। ২০১৭ সালেও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পারেনি। তারপরেই শুরু করে ঘৃণ্য চক্রান্ত। আজ বাংলাদেশে যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে, তা আর কোথাও হয় না। একজন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণকে অন্যায় ভাবে বন্দি করা হয়েছে। তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবীকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। পিটিয়ে মেরে ফেলার নিদান দেওয়া হচ্ছে। আশ্চর্যের ব্যাপার, যেখানে কেউ আইনজীবী দিতে না পারলে সরকারের সেই দায়িত্ব নেওয়া উচিত, সেখানে তাঁর হয়ে সওয়াল করতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। এই কি বৈষম্য বিরোধিতা? সব জায়গাতেই তো বৈষম্য। নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত সব কিছুতেই দলীয়করণ। মামলা করতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ আমাদের আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অজস্র মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধেই তো কত মামলা দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগই খুনের। ৩০ হাজার মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। খুনি ইউনুসের এজেন্ট সব জায়গায় রয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কোনও স্বাধীনতা নেই। খবর ছাপতে দেওয়া হচ্ছে না। আমার সময় কি এই স্বাধীনতা ছিল না? অবাধে চলছে হত্যা, লুঠপাট, অগ্নিসংযোগ। ছাত্র লিগের এক কর্মীকে না পেয়ে তাঁর মাকে খুন করা হয়েছে। আরেক জায়গায় যুব লিগের কর্মীর মা এবং চাচিকে হত্যা করা হয়েছে। রাস্তায় বেরতে পারছেন না আওয়ামি লিগের লোকেরা। কেউ দেখিয়ে দিলে তাঁর হাত কেটে নেওয়া হচ্ছে। পুলিশকেও মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রিন্সিপালকে গাছে বেঁধে রাখা হচ্ছে। এসব কী চলছে? এরপর তো কোন দিন এরা মা-বাবাকেও বলবে পদত্যাগ করতে। মানুষ কোথায় যাবে বিচার চাইতে? তবে দৃঢ়তার সঙ্গে মুজিব-কন্যা বলেন, ফ্যাসিবাদী গণহত্যাকারী ইউনুস এবং তাঁর চেলা-চামুণ্ডাদের বিচার হবেই। আমেরিকার পর লন্ডনে সভা বুঝিয়ে দিল, হাসিনার জনপ্রিয়তা অটুট। স্লোগান উঠল ইউনুসের ফাঁসি চাই। শেখ হাসিনা সরকার, বারবার দরকার। ইউনুসের দু’গালে, জুতো মারো তালে-তালে।
আরও পড়ুন-রাজ্যপালের আমন্ত্রণে রাজভবনে আজ মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে ভারতীয় কর্মীদের অবিলম্বে বাংলাদেশ ছাড়ার নির্দেশ দিলেন ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তাঁর হুমকি, কোনও ভারতীয়কে বাংলাদেশে কাজ করতে দেওয়া হবে না। আশ্চর্যের বিষয়, শস্যঘাটতির ভয়ে ইউনুসের খাদ্য দফতর বলছে, ভারত থেকে খাদ্য আমদানির ব্যাপারে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।