প্রতিবেদন : ফের প্রমাণিত হল সিবিআইয়ের অপদার্থতা! আরজি কর মামলায় চূড়ান্ত ব্যর্থ কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ৯০ দিনেও সিবিআই চার্জশিট দিতে না পারায় জামিন পেয়ে গেলেন সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল। আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলায় তথ্য-প্রমাণ লোপাটের সপক্ষে কোনও প্রমাণ না থাকায় শুক্রবার শিয়ালদহ আদালত আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও টালা থানার অপসারিত ওসির জামিন মঞ্জুর করল। ২০০০ টাকা বন্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছে সন্দীপ এবং অভিজিৎ। তবে আরজি করে (RG Kar Case) আর্থিক অনিয়ম মামলায় এখনও জেলেই থাকতে হবে সন্দীপ ঘোষকে। ধর্ষণ-খুনে তথ্য-প্রমাণ লোপাটের মামলায় সন্দীপ ও অভিজিতের বিরুদ্ধে ৯০ দিনেও কোনও পোক্ত প্রমাণ জোগাড় করতে না পারায় সিবিআইয়ের উপর হতাশ নির্যাতিতার বাবা। সন্দীপ ও অভিজিতের জামিনের খবর পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি জানালেন, সিবিআই আমাদের হতাশ করেছে। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, আরজি করের (RG Kar Case) মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ। তারপর অনেকের মনে হল উই ওয়ান্ট সিবিআই। যারা নেমন্তন্ন করে সিবিআইকে ডেকে এনেছিল তাদের সেদিন কত পৈশাচিক হইচই। সিবিআই এখন প্রমাণ করতে পারেনি যে এই মূল ধর্ষণ এবং খুনের সঙ্গে অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষের কোনও সম্পর্ক ছিল। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ডাক্তারদের নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীলড়াই এবং সরকার-বিরোধী কিছু লোকের লাফালাফি। এরা মিলে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিথ্যে ভুয়ো রগরগে গল্প তৈরি করে একটা ধারণা তৈরি করে দিয়েছিল। তাঁর সংযোজন, রোজ বিভিন্ন খবর আমরা দেখতাম সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। যে-সূত্র চার্জশিটে লিখতে পারে না সেটা আবার কীসের সূত্র! আজ যাদের জামিন হয়েছে সিবিআই তাদের সঙ্গে ধর্ষণ-খুনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। কিছুদিন আগে এক জুনিয়র ডাক্তার ময়নাতদন্ত নিয়ে বড় বড় কথা বলছিল। ময়নাতদন্তের সেই রিপোর্টে তো জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচ জন সই করেছিল। সেদিনের দেওয়াল ভাঙাতে জুনিয়র ডাক্তারদের সই আছে। বিকাশবাবু মামলা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। গতকাল বৃন্দা গ্রোভার মামলা ছেড়ে দিলেন সেটা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বাইরে থেকে যে চাপ দিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে তাতে আইনজীবীরা নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে জড়াতে চাননি। এই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে সিবিআই চার্জশিত দিতে পারেনি। যারা সিবিআই ডেকে এনেছিলেন তাঁরা যেন এখন উল্টো কথা না বলেন। কলকাতা পুলিশ পছন্দ নয়, এখন বুঝুন। এখন কি তাঁরা বলবেন সিবিআইও পছন্দ নয়? ডাক্তারদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, বাম-অতিবাম এবং বিরোধীরা মিলে লাগাতার কুৎসা করেছে। মানুষের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করা হয়েছে। জামিন মানে নির্দোষ নয় কিন্তু যদি বড়সড়ো প্রমাণ কিছু থাকত তাহলে সিবিআই এতদিনে চার্জশিট দিয়ে দিত। দুঃখের সঙ্গে বলছি, অভয়ার বাবা-মাকে শ্রদ্ধা করি। তাঁরা কিছু খারাপ লোকের চক্করে পড়ে মেয়ের মৃত্যুর পরের দিন থেকে রোজ নিয়মিত ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে সেখানে কোর্টে গিয়ে সিবিআই সেয়ানা নিজেদের মেয়ের আততায়ীর বিচারে বিলম্বিত করা এর জন্য দায় রয়েছে তাঁর বাবা-মায়েরও। যদি কলকাতা পুলিশে ভরসা রাখতেন তাহলে এতদিনে ফাঁসির সাজা হয়ে যেত।
আরও পড়ুন- কাঁথি কো-অপারেটিভ নির্বাচন: ভয় পেয়ে এনআইএ নামিয়ে দিল গদ্দার