প্রতিবেদন : দেশের নানা রাজ্যে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়েই চলেছে। ফাঁসির শাস্তি দিয়েও দুষ্কৃতীদের অপরাধমনস্কতা কমানো যাচ্ছে না। ধর্ষণের মতো এক সামাজিক সমস্যা ও মানসিক ব্যাধি নিরসনের উপায় খুঁজতে এবার দেশের শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) জমা পড়ল নতুন প্রস্তাব। সাম্প্রতিক নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত জানতে চাইলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।
ধর্ষণ এবং গুরুতর যৌন অপরাধের ঘটনা রুখতে শাস্তির প্রক্রিয়ায় সংস্কার চেয়ে আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারীরা। প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ধর্ষণ মামলার আসামি যাতে একই অপরাধ পুনরায় না করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে কড়া আইন প্রণয়ন জরুরি। এই ধরনের গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর বিশেষ চিকিৎসার মাধ্যমে আসামির যৌন হরমোনের ক্ষরণ বন্ধ করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একাধিক দেশে এই সংক্রান্ত আইনের উল্লেখ করে শীর্ষ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মামলাকারীরা। ধর্ষণ মামলায় এটিকে একটি সাজা হিসেবে বিবেচনা করার আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মহিলাদের উপর এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের মামলায় কোনও জামিন না দেওয়ার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন- এক দেশ এক ভোট: সংসদে বিরোধিতায় তৈরি তৃণমূল কংগ্রেস
শীর্ষ আদালতের মহিলা আইনজীবীদের সংগঠন এই মামলা করেছে। উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলিতে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার রেফারেন্সও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মহিলা, শিশু এবং রূপান্তরকামীদের উপর অপরাধ রুখতে ১০ দফা পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জিও জানানো হয়। বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ সোমবার ওই মামলায় নোটিশ জারি করে। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পর্যবেক্ষণ, ধর্ষণ ও যৌন অপরাধের শাস্তিমূলক আইনের পর্যালোচনা দরকার। অন্যদিকে মামলাকারী সংগঠনের দাবি, আইন সংক্রান্ত বিষয়ে দশদফা সংস্কার করা হোক। সুপ্রিম কোর্টের মামলাকারী আইনজীবী সংগঠনের দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে— যৌন নির্যাতনে যারা দোষী প্রমাণিত হবে জাতীয় স্তরে তাদের নামের তালিকা তৈরি করতে হবে। এইসব ব্যক্তিদের চিকিৎসা করে যৌন হরমোন ক্ষরণ বন্ধ করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত পর্নোগ্রাফির উপর রাশ টানতে হবে। স্কুলে স্কুলে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। গুরুতর যৌন নির্যাতনের মামলায় ছ’মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে কেউ জামিন পাবেন না, এমন নিয়ম চালু করতে হবে।