প্রতিবেদন : নির্লজ্জতার সব সীমা অতিক্রম করল বিজেপি৷ রাজ্যসভায় সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিতর্কে অংশ নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করতে গিয়ে সংবিধানের রচয়িতা বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরকেই অসম্মান করে বসলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ এর তীব্র প্রতিবাদ করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। লোকসভা ও রাজ্যসভায় প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন তৃণমূল সাংসদেরা।
আরও পড়ুন-জেপিসিতে কল্যাণ-সাকেত
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়াতে মুখ্যমন্ত্রী মোদি সরকারকে তোপ দেগে লিখেছেন, ওদের মুখোশ খুলে গেল৷ বিজেপির জাতপাতের রাজনীতি এবং দলিত-বিরোধী মনোভাব ফের একবার সামনে চলে এল। একে ধিক্কার জানাই। নেত্রীর সংযোজন, লোকসভায় ২৪০ আসন পেয়েই এভাবে বাবাসাহেব আম্বেদকরকে অসম্মান করছে৷ কল্পনা করুন, এরা ৪০০ আসন পেলে দেশের কী মারাত্মক ক্ষতি হত! হয়তো বাবাসাহেবের সব অবদান ভুলে গিয়ে নতুন করে ইতিহাস লিখত৷ যে দল ঘৃণা আর ধর্মান্ধতাকে তাদের নীতি করে তুলেছে, তাদের থেকে এর বেশি আর কী আশা করা যায়? যারা বাবাসাহেবের আদর্শে পথ চলেন, তাঁরা মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হন, সেই সব লক্ষ লক্ষ লোককে অসম্মান করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ আমাদের দেশের সংবিধানের রচয়িতা বাবাসাহেব আম্বেদকরকে নিয়ে করা এই ধরনের আপত্তিকর মন্তব্য শুধু তাঁকেই নয়, সংবিধানের খসড়া প্রস্তুতের দায়িত্বে থাকা সবাইকে অসম্মান করা।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে শিক্ষিকাদের শৌচাগারে স্পাই ক্যামেরা, গ্রেফতার স্কুলের মালিক
এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর, আম্বেদকর৷ এতবার যদি এরা ভগবানের নাম নিত তা হলে সাতজন্ম স্বর্গবাস হত— মঙ্গলবার রাজ্যসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ৷ সংবিধানের রচয়িতাকেই সংবিধান-বিতর্কে অসম্মান জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, এই নির্লজ্জ সীমাহীন ঔদ্ধত্য দেখে চুপ করে থাকতে পারেননি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দলনেত্রীর ক্ষোভ প্রকাশের পরেই দিল্লিতে সংসদে সোচ্চার হন তৃণমূল সাংসদরা৷ সবার আগে রাজ্যসভায় শাহর বিরুদ্ধে প্রিভিলেজ (স্বাধিকার ভঙ্গ) নোটিশ জমা দেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সংসদীয় রুলের ১৮৭ ধারা অনুযায়ী এই প্রিভিলেজ নোটিশ জমা দেন তিনি৷ একইসঙ্গে রাজ্যসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদেরা দাবি জানান, বাবাসাহেব আম্বেদকরকে অসম্মান করার জন্য অবিলম্বে সংসদে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে৷ তাঁদের দাবি মানেননি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়৷ এর পরেই রাজ্যসভা কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন তৃণমূল সাংসদেরা৷ এই প্রসঙ্গে সংসদ পরিসরে দাঁড়িয়ে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন বলেন, বিজেপি দলিত-বিরোধী, ওরা অনগ্রসর শ্রেণি-বিরোধী৷ এটা ওরা প্রমাণ করে দিয়েছে৷ যেভাবে সংবিধান রচয়িতা বাবাসাহেব আম্বেদকরকে অসম্মান করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তা নজিরবিহীন৷ এই জন্য তাঁকে সংসদে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ট্রেজারি বেঞ্চের তরফে একজন সদস্যকে সংসদে দাঁড়িয়ে দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিতে হবে৷