প্রতিবেদন: বঙ্গবন্ধু-কন্যার প্রতি ব্যক্তিগত শত্রুতা মেটাতে বদলার রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ‘ব্যর্থ’ প্রশাসক মহম্মদ ইউনুস। হাসিনাকে জেলবন্দি করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিতে মরিয়া মৌলবাদী পরিবেষ্টিত অন্তর্বর্তী সরকার। ইউনুস প্রশাসনের অঙ্গুলিহেলনে গুচ্ছ গুচ্ছ খুনের মামলা দায়ের করে হাসিনাকে প্রহসনের বিচারের মুখে ফেলতে চাইছে বর্তমান মৌলবাদী সরকার। আর সেই লক্ষ্যে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকারের কাছে চিঠি পাঠাল বাংলাদেশ।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। এদিন সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও একই কথা জানিয়েছেন। বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে বাংলাদেশ তাঁকে ফেরত চেয়েছে। এটি গুরুত্বের সঙ্গে ভারতকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-মমতাই ইন্ডিয়া’র যোগ্যতম মুখ, হাত শিবিরকে ছাড়তে হবে নেতৃত্ব
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, এবিষয়ে ভারতকে পাঠানো নোট ভারবাল পাঠানো হয়েছে। এর আগে সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানাতে এরই মধ্যে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। আমাদের সঙ্গে নয়াদিল্লির প্রত্যর্পণ চুক্তি আছেই। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরে বিজিবি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এদিন একথা জানান। ঘটনা হল, হাসিনাকে দেশে ফেরাতে দু’দিন আগেই ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ সরকারকে নির্দেশ দেয়। গত মাসে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের নির্দেশ মতো আন্তর্জাতিক পুলিশ ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ। ইন্টারপোল কোনও পদক্ষেপ না করায় তাদের তাগাদা দিতে নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হত্যাকাণ্ড, গত ১৬ বছরে গুম-ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড—এরকম কয়েকটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তোলা হয়েছে। শেখ হাসিনা, তাঁর মন্ত্রিসভা, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান-সহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। দিল্লির সরকারি সূত্রের খবর, বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী কোনও আসামিকে ফেরত চাইলেই তা মানতে বাধ্য নয় সংশ্লিষ্ট দুই দেশ। বিশেষত ভারত যদি মনে করে পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী হেনস্থা করতে হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অজুহাত সামনে আনা হচ্ছে এবং বাংলাদেশে হাসিনার প্রাণসংশয় রয়েছে তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের যাবতীয় সক্রিয়তা নিশ্চিতভাবেই জলে যাবে।