আমি নারী আমি পারি
টিক টিক ছন্দে ঘড়ির কাঁটা বিরামহীন। নাহ্, তেমন কোনও বিচ্ছেদ রেখা স্পষ্ট নয়। তবে কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে। হিসেবের খাতায় কিছু ঘণ্টা পরেই পড়বে নতুন বছর। বদলে যাবে ক্যালেন্ডারের ছবিগুলো। লেখা হবে কত সাধ আহ্লাদ কর্মযজ্ঞের রিজোলিউশন। বাকেট লিস্টের অপূর্ণতাকে ঢাকতে নতুন করে বাজবে নব-উদ্যমের সানাই। হ্যাপি নিউ ইয়ার তার সুস্পষ্ট রাগ নিয়ে সারারাত গাইলেও সময়ের নিরন্তরতায় কোনও ব্রেক নেই! তবুও ফেলে আসা দিনগুলোই বহু বিষয়, বহু ব্যক্তি তাঁদের কাজকর্মের ছাপ ফেলে যান, যা আগামীতে সভ্যতা চলমানতার রসদ হয়ে থাকে।
তেমন কথা বলতে গেলে সৃষ্টিসেরা নারীর কথাই কই। তাঁরা অসামান্যা। বিশ্বসংসারে মেয়েদের অনবদ্য কৃতিত্বের কথা মাথায় রেখে, মৌলানা জালালউদ্দিন রুমি অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে একজন নারীর মূল্যায়ন করে বলেছিলেন, “নারী হল ঈশ্বরের একটি রশ্মি। তিনি শুধুই পার্থিব প্রেয়সী নন; তিনি সৃষ্টিশীল, তাঁকে কেবলই সৃষ্টি করা হয়নি।” তার উপর ভারতীয় নারী! জমিন থেকে আসমান, কিংবা ভূগর্ভে, সভ্যতার সমস্ত কোণে তাঁদের কোমল অথচ সুনিপুণ প্রতিভাময়ী স্পর্শ প্রজ্বলিত। আজকের আলাপচারিতায় তাঁদের মধ্যেই কিছু গুণিজন।
সিনেমা
ঋতাভরী চক্রবর্তী
টেলিভিশন দিয়ে শুরু। স্টার জলসায় ওগো বধূ সুন্দরীর ললিতা থেকে বড় পর্দায় বহুরূপীর পরী সান্যালের জার্নিটা কিন্তু বহু রূপের। মেধাবী ছাত্রী, তারুণ্যে ভরপুর এই বাঙালি অভিনেত্রী ঋতাভরী ফাটাফাটি সিনেমায় ফুল্লরা ভাদুড়ীর চরিত্রে অভিনয় করে গোটা সমাজকে দেখিয়ে দিয়েছেন “বডি শেমিং” নামে জগদ্দল পাথরটিকে কীভাবে সমাজের বুক থেকে উপড়ে ফেলা যায়। শুধু কি অভিনয়! ঋতাভরী মায়ের সঙ্গে মিলে গ্রাম বাংলার ওই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর জন্য প্রতি মাসে হেল্থ চেকআপ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কারিগরি প্রশিক্ষণের আয়োজনও করে থাকেন।
নিতানশি গোয়েল
সপ্তদশী এই অভিনেত্রীর যাত্রা শুরু কিন্তু সেই পাঁচ বছর বয়সে, ভিকি ডোনার সিনেমায় কোন এক অনামিকার ভূমিকায়। তবে বড় পর্দায় প্রথম মুখ্য ভূমিকায় লাপাতা লেডিসের ফুলকুমারীর চরিত্রে। ব্যস বাজিমাত। তাঁর অসাধারণ অভিনয়দক্ষতা নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছে। ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেসের ব্রেকআউট স্টার স্টারমিটার অ্যাওয়ার্ড প্রাপক এই তরুণ অভিনেত্রীকে ব্রিটিশ সাপ্তাহিক সংবাদপত্র ইস্টার্ন আই ২০২৪-এর সেরা পঞ্চাশ জন এশিয়ান স্টারের মধ্যে একজন গণ্য করেছে।
তৃপ্তি দিমরি
২০১৭ সালে রোমহর্ষক হিন্দি সিনেমা মম-এর হাত ধরে বড় পর্দায় এই তরুণ অভিনেত্রী। তবে অ্যানিম্যাল, ভিকি বিদ্যা কা ও বালা ভিডিও, ভুল ভুলাইয়া ৩ সিনেমায় তাঁর অসামান্য অভিনয় দক্ষতা তাঁকে এবছরের অন্যতম বলিউড তারকা হিসেবে পরিচিত করে তুলেছে। সিনেমাপ্রেমীরা নতুন বছরে তাঁর ধড়ক ২ সিনেমার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।
সাংবাদিকতা
প্যাট্রিসিয়া মুখিম
দীর্ঘ সাংবাদিক জীবন। লেখিকা, সমাজকর্মী এবং বর্তমানে দ্য শিলং টাইমসের এডিটর প্যাট্রিসিয়া মুখিম। সবসময় তাঁর লেখার মধ্যে ফুটে উঠেছে সামাজিক উত্তোলনের কথা, জেন্ডার ইক্যুইটি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংঘাতপূর্ণ উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা। সাহসী সাংবাদিকতার জন্য তাঁকে এবছর সম্মানিত করা হয়েছে উইসকম্প দ্যা সাহস শ্রেষ্ঠ অ্যাওয়ার্ডে।
সুপ্রিয়া শর্মা
তরুণ এই সাংবাদিক স্ক্রল.ইন ডিজিটাল নিউজ পোর্টালের কার্যনির্বাহী সম্পাদক। রামনাথ গোয়েঙ্কা এবং চামেলী দেবী জৈন পুরস্কারপ্রাপ্ত এই জার্নালিস্টের কলমে বারবার ফুটে উঠেছে সমাজের প্রান্তিক উপেক্ষিত মানুষের নানা বিষয়। এই ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ কর্মযজ্ঞ নতুন প্রজন্মের জার্নালিস্টদের জন্য আগামীদিনে উর্বর ‘মেডিয়া ল্যান্ডস্কেপ’ তৈরির ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক।
সাগরিকা ঘোষ
ভারতীয় সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক অনন্য নাম সাগরিকা ঘোষ। গভীর চিন্তাবোধ থেকে তাঁর লেখাগুলো সমসাময়িক ভারতবর্ষের নানা কথা বলে। প্রথিতযশা এই লেখিকা সাংবাদিকতা এবং সাহিত্য উভয় জগতেই ভাবী সাংবাদিকদের জন্য তৈরি করছেন নতুন দিশা। এ-বিষয়ে তাঁর অন্তর্দৃষ্টি সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে তাঁকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে ‘দ্যা রাইজিং ২০২৫’ অনুষ্ঠানে।
আরও পড়ুন- সফল নারীর ছায়াসঙ্গীরা
সাহিত্য
ইরা মুখোটি
প্রকৃতি বিজ্ঞানের ছাত্রী লেখিকা ইরা মুখোটি ভারতীয় ইতিহাসের উপর সাহিত্যিক কাজকর্মের জন্য বিশ্ববন্দিত। এবছর তাঁর সৃষ্টি দ্যা লায়ন অ্যান্ড দ্যা লিলি : দ্যা রাইজ অ্যান্ড ফল অব অবথ বইটি সকলের নজর কেড়েছে। তাঁর অনবদ্য লেখনশৈলীতে যেভাবে অবধ রাজ্যের ওঠানামার দৃশ্য ফুটে উঠেছে, তা জগৎ জুড়ে পাঠকবৃন্দের নজর কেড়েছে।
সন্ধ্যা মারী
একজন লেখিকা এবং মিডিয়া কর্মী সন্ধ্যা মারীর সাম্প্রতিক বই মারিয়া, জাস্ট মারিয়া বইপ্রেমীদের জন্য একটি স্বর্গীয় প্রাপ্তি। গল্পের নিপুণ কথা সজ্জায় সাইকিয়াট্রিক হসপিটালে ভর্তি মারিয়ার, জাস্ট মারিয়া হয়ে ওঠার গল্পটি সকলের মনে গেঁথে গেছে। বইটি ২০২৪-এর সবচেয়ে অপেক্ষিত বই হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
সজনী প্যাটেল
মূলত নারীকেন্দ্রিক এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কলম ধরেন সজনী প্যাটেল; এবছর তাঁর লেখা ‘এ ড্রপ অব ভেনম’ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বই হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সপ্তদশের প্রত্যুষ এবং ষোড়শী মনীষার এই গল্প সাহিত্য অনুরাগীদের দৃষ্টি কেড়েছে। তাঁর গল্প বলার কলা বহু উদ্ভিন্ন লেখককে অনুপ্রেরণা জোগায়।
বিজ্ঞান
ড. নীনা গুপ্ত
বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগের একজন অধ্যাপিকা। শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গণিতজ্ঞ কিউমিউলেটিভ অ্যালজেব্রা এবং অ্যাফাইন অ্যালজেব্রিক জিওমেট্রির উপর বিশেষ গবেষণার জন্য এবছর মর্যাদাপূর্ণ ইনফোসিস পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। গণিত শাস্ত্রের উপর তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য দ্যা আমেরিকান ম্যাথমেটিক্যাল সোসাইটি এবং দ্য অ্যাসোসিয়েশন ফর উইমেন ইন ম্যাথম্যাটিক্স যৌথভাবে আগামী ২০২৫ সালের জন্য দ্য এম্মি নিওদার লেকচারার নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্নপূর্ণী সুব্রহ্মণ্যম
বর্তমানে তিনি বেঙ্গালুরুর দ্য ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের ডিরেক্টর। মহাশূন্যে স্টার ফর্মেশন, স্টার ক্লাস্টার, গ্যালাকটিক স্ট্রাকচার, ম্যাগেলানিক ক্লাউডস এবং স্টার পপুলেশনের উপর নিবিড় গবেষণা ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানের অধ্যবসায়কে সমৃদ্ধ করেছে। অন্তরীক্ষ উন্মোচনের নানা খুঁটিনাটি বিষয় উঠে এসেছে তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে। এই ক্ষেত্রে তাঁর অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ভারত সরকার এবছর রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞান পুরস্কার স্কিমের আওতায় বিজ্ঞানশ্রী সম্মানে সম্মানিত করেছে।
পদ্ম ভি দেবরাজন
একজন প্রথিতযশা ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্টিস্ট ড. দেবরাজন মুম্বইয়ের দ্য ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনোলজির রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন বিভাগের ডিন। তাঁর গবেষণার বিষয় ন্যানো ড্রাগ ডেলিভারি, টিউবারকিউলোসিস, টার্গেটেড ড্রাগ ডেলিভারি, প্রোটিন অ্যান্ড নিউক্লিক অ্যাসিড ডেলিভারি এবং ক্যানসার। ড্রাগ ডেলিভারি প্রযুক্তির উপর তাঁর অসাধারণ গবেষণার জন্য এবছর তাঁকে কন্ট্রোল্ড রিলিজ সোসাইটির পক্ষ থেকে উইমেন ইন সায়েন্স পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা বিজ্ঞানী যিনি এই সম্মানে আদরণীয়।
অক্ষতা কৃষ্ণমূর্তি
একজন ভারতীয় এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার এবং মহাকাশ গবেষক। বর্তমানে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরিতে প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর এবং সায়েন্স ফেজ লিড হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে তিনি ‘মার্স ২০২০’ প্রকল্পে কাজ করছেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা বিজ্ঞানী যিনি মঙ্গল গ্রহ এক্সপ্লোরেশন মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী পারসিভিয়ারেন্স রোভারকে অপারেট করেন। মহাকাশ বিজ্ঞানে তাঁর এই অনবদ্য যোগদানের জন্য এবছর ফরচুন ইন্ডিয়া তাদের তালিকায় তাঁকে ‘মোস্ট পাওয়ারফুল উইম্যান’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সঙ্গীত এবং নৃত্য
শিল্পা রাও
কলেজ জীবন থেকেই সঙ্গীত পরিচালক মিথুনের হাত ধরে প্লেব্যাক সিঙ্গারের জার্নি শুরু শিল্পার। তারপর থেকেই ও আজনবি, খুদা জানে, ইশক্ শাবা, মালাঙ্গ, মেহেরবাঁ, মনমর্জিয়া, আজ জানে কি জিদ না করো প্রভৃতি হিট গানের মধ্য দিয়ে সুনাম অর্জন করেন। সম্প্রতি তামিল ভাষায় কাভালা, তেলুগু ভাষায় চুট্টামালে এবং শাহরুখ খান অভিনীত পাঠান সিনেমায় বেশরম রং গাওয়ার জন্য তিনি আজ সাফল্যের শীর্ষে। এই গানটির জনপ্রিয়তার জন্য তাঁকে শৌওসা রিল অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এ বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গারের পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
মমতা আর্য
মূলত মমতা একজন ফোক সিঙ্গার। নতুন কুমায়নি গান রংভং— খোলা পারি গেয়ে শ্রোতাদের মন মাতিয়ে তুলেছেন, পৌঁছে গেছেন সাফল্যের শীর্ষে। জিতেছেন ইয়ং উত্তরাখণ্ড সিনে অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ এর বেস্ট ফিমেল সিঙ্গারের সুনাম। তাঁর গাওয়া এই লোকসঙ্গীত গানের জগতে এক অনন্য প্রাপ্তি। সাধারণ মানুষ এবং ফিল্ম সিটির সবাই এখন মুখিয়ে আছেন তাঁর পরবর্তী গান শোনার জন্য।
ঝিনুক মুখার্জি সিনহা
কলকাতার নাচের দিদিমণি ঝিনুক, ক্লাসিক্যাল ডান্সার, রয়েছে নাচের স্কুল এবং একটি ডান্সিং ট্রুপ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত বাৎসরিক গীতাজয়ন্তী এবং সুভাষ মেলায় তাঁদের পারফরম্যান্স তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। এবছর তাঁদের নানা স্থানের বিচিত্র সংস্কৃতির প্রতি অনুদান, তাঁদের ডায়নামিক পারফরম্যান্স সব দর্শককে একপ্রকার মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। তিনি শুধুমাত্র নিজে একজন সাংস্কৃতিক মুখ হিসেবে পরিচিত হননি, বরঞ্চ তিনি তাঁর শিল্পীসত্তা দিয়ে সাধারণ মানুষদের আরও বেশি করে সংস্কৃতিমনা করে তুলেছেন।
স্পোর্টস অ্যাথলেটিক্স
দিব্যকীর্তি সিং রাঠোর
রাজস্থানের তরুণী দিব্যকীর্তি গত ৪১ বছরে প্রথমবারের জন্য ভারতীয় হিসেবে এশিয়ান গেমসে অশ্বারোহণ প্রতিযোগিতায় সোনা জিতেছেন। তাঁর এই সাফল্যের জন্য এবছর আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি তাঁর হাতে অর্জুন পুরস্কার তুলে দেন। ইন্টারন্যাশনাল ইক্যুয়েস্ট্রিয়ান ফেডারেশন পরিচালিত ড্রেসাজ তালিকায় তিনি এশিয়ার মধ্যে প্রথম স্থানে এবং পৃথিবীর বুকে ১৪তম স্থানে রয়েছেন। তাঁর এই অনন্য প্রাপ্তি ও প্রতিভা তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগায়।
নিখাত জেরিন
দু’বারের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন বক্সার নিখাত জেরিন এবছর প্যারিস অলিম্পিকে নিশ্চিত পদকের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিলেন। জার্মানির ম্যাক্সি ক্লোয়েতজারকে দুর্ধর্ষভাবে হারিয়ে লড়াই শুরু করলেও দুঃখজনকভাবে চিনের গোল্ড মেডালিস্ট ইউ য়্যু’র কাছে হেরে গিয়ে তাঁর জার্নি শেষ হয়। পদক অধরা থাকলেও খেলার প্রতি তাঁর অদম্য কসরত এবং ভক্তি তাঁকে ভারতবর্ষ তথা বিশ্বের ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে প্রশংসনীয় করে তুলেছে। তাঁর একাগ্রতা আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণীয়!
সমাজকল্যাণ এবং উদ্যোগ
অরুণা রয়
সমাজসেবী অরুণা রয় সিভিল সার্ভিসের চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর অধিকারের লড়াই করতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন মজদুর কিষান শক্তি সংগঠন। তাঁদের ন্যায্য মজুরি এবং সুযোগ-সুবিধার জন্য সবসময় লড়ে গেছেন; তাঁর ন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর পিপলস রাইট টু ইনফরমেশন আন্দোলনের জোরেই পাশ হয় ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের দৃষ্টান্তমূলক আইন। জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য তাঁকে এবছর বিবিসি বৈশ্বিকস্তরে একশো জন অণুপ্রেরণীয় এবং প্রভাবশালী মহিলার তালিকাভুক্ত করেছে।
শ্রুতি নাগবংশী
একজন নারী এবং শিশু অধিকার কর্মী। গ্রামীণ সমাজের দলিত, অস্পৃশ্য তথা পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর অধিকারের জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। পিপলস ভিজিলেন্স কমিটি অন হিউম্যান রাইটস এবং সাবিত্রী বাঈ ফুলে মহিলা পঞ্চায়েত গঠনের মধ্য দিয়ে তিনি সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়ন করার চেষ্টা করেন। এই প্রকার উদ্যোগের জন্য তিনি এ-বছর বিখ্যাত গ্রেট কোম্পানিজ ইন্টারন্যাশনাল উইমেন এন্ত্রাপ্রেনর অ্যাওয়ার্ড পান।
পূজা শর্মা
এবছর বিবিসি প্রকাশিত একশো জন অণুপ্রেরণীয় এবং প্রভাবশালী মহিলার তালিকায় অন্যতম ভারতীয় নাম পূজা শর্মা। তিনি গত তিন বছরে রাজধানী দিল্লির বুকে প্রায় চার হাজারেরও বেশি দাবি করা হয়নি এমন মৃতদেহের সৎকার করেন। তাঁর এই প্রকার সমাজকল্যাণমুখী কাজে অনুপ্রেরণা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। তাঁর ভাইকে হত্যা করা হলে কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি, এই দুঃখটাই তাঁকে এই কাজে নামার উৎসাহ জোগায়। সভ্যতার ইতিহাসে তিনি সত্যিই একজন ঐশ্বরিক সেবিকা!