প্রচারসর্বস্ব সরকার চলছে কেন্দ্রে। লাভের গুড় খাবে, কিন্তু কাজ করবে না। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মেনে রাজ্যগুলিকে হকের টাকা দেবে না। সম্প্রতি সংসদে কেন্দ্র জানিয়েছে, তারা রেশন ডিলারদের কমিশনের টাকা দেবে না, তা দিতে হবে রাজ্যকে। এভাবে কেন্দ্র বাড়তি বোঝা চাপাতে চাইছে রাজ্যের উপর। নিজেদের রাজ্যে এক নিয়ম, আর বিরোধী রাজ্যগুলিতে ভিন্ন নিয়মের জাঁতাকল। কেন এমন বিমাতৃসুলভ আচরণ? এই তুঘলকিপনার বিরুদ্ধে সংসদে গর্জে উঠেছিলেন সাংসদ সৌগত রায়। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ শানিয়ে ফের একবার নিশানা করেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষও।
আরও পড়ুন: কৃষক নেতার আমরণ অনশনের মাঝেই বনধ, বাতিল ১৫০ ট্রেন, চাপে মোদি সরকার
রেশন ব্যবস্থায় নিজেদের কৃতিত্ব প্রচারে ব্যাগে নরেন্দ্র মোদির ছবি, হোর্ডিং থেকে শুরু করে খবরের কাগজ-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচার-ঝড় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। শুধু কৃতিত্ব দাবিতেই ক্ষান্ত। কিন্তু কোনও দায়িত্ব নিতে নারাজ। বছরের পর বছর বাংলাকে বঞ্চনা করে চলেছেন। এখনও ১২ হাজার কোটি প্রাপ্য দেননি। তার উপর অন্যায় চাপ সৃষ্টি করছেন। রেশনের ডিলাররা কমিশন বৃদ্ধির দাবি তুলেছিলেন, তা এখন রাজ্যের উপর চাপাতে চাইছে মোদি সরকার। এবার সংসদের অধিবেশনে সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, রেশন ডিলারদের কমিশন বৃদ্ধি রাজ্য সরকারগুলিকেই করতে হবে। কেন্দ্রের এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনটি কেন্দ্রের, রাজ্য শুধু কার্যকর করেছে। তাই রেশন ডিলারদের কমিশন কেন্দ্রকেই দিতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা কেন? সারা দেশেই এক ব্যবস্থা চালু থাকুক। আর এই ইস্যুতে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, রাজ্যের প্রাপ্য ১২ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। কেন্দ্র যদি ডিলারদের কমিশন বৃদ্ধি করে, তার দায় তাদেরই। রাজ্য কেন সেই দায় নিতে যাবে। ২০২১ সালের মার্চে পশ্চিমবঙ্গ কুইন্টাল প্রতি খাদ্যশস্যের জন্য ডিলারদের কমিশন ৭০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ টাকা করেছিল। ই-পস যন্ত্র ব্যবহারের জন্য বিশেষ কমিশনও বাড়ানো হয়েছিল ১৭ টাকা থেকে ২১ টাকা। মূল কমিশন খাতে পরিবহণ খরচের অর্ধেক ৪৫ টাকাও কিন্তু রাজ্যই দেয়। এর বাইরেও বাংলার সরকার দুয়ারে রেশন পরিষেবার জন্য ডিলারদের প্রতি কুইন্টালে অতিরিক্ত ৭৫ টাকা কমিশন দেয়। আর ৫ হাজার টাকা বিশেষ অনুদান দেয় দুয়ারে রেশন প্রকল্পটি কার্যকর করার জন্য। কিছু রাজ্যে কুইন্টালে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়। এদিকে রেশন ডিলারদের সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্র কমিশন না বাড়ালে বড় মাপের আন্দোলনে নামবে তারা।