প্রতিবেদন : কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে কলকাতার পুরভোটের বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করবে না। তবুও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন রাজ্যপাল। প্রশ্ন উঠেছে, বিচার বিভাগ যখন কলকাতার নির্বাচন নিয়ে কোনওরকম অসম্মতি এখনও পর্যন্ত জানায়নি, সেখানে আলঙ্কারিক হলেও একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদে থেকে রাজ্যপাল বারবার এভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন কোন অধিকারে? কেন তিনি বাধার সৃষ্টি করছেন মানুষের পবিত্র ভোটাধিকারে? রাজ্যপালের এই পদক্ষেপকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এদিন তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে রাজ্যপাল ভোট করাতে চাইছেন। কিন্তু উনি ভুলে গিয়েছেন, বিধানসভার ভোটের কথা। সেখানেও জিততে পারেনি বিজেপি। আসলে নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা বলে সকলে। রাজ্যপালের অবস্থাও এখন তাই।
আরও পড়ুন : ঝড়ের আশঙ্কায় বাতিল বহু ট্রেন
বৃহস্পতিবারও রাজ্যপাল ডেকেছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাশকে। যদিও সরকারিভাবে বলা হয়েছে, পুরভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে রাজ্যপাল বিস্তারিতভাবে তাঁর কাছে জানতে চেয়েছেন এবং কমিশনের পক্ষ থেকে তা জানানোও হয়েছে। কিন্তু বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, পুরভোট কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে করানোর জন্য এদিনও কমিশনের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছেন রাজ্যপাল। যা প্রথম থেকেই চেয়ে আসছেন তিনি এবং বিজেপি। স্বাভাবিকভাবেই বারবার প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যপালের কণ্ঠে কাদের দাবির প্রতিধ্বনি? রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠকের মেয়াদ ছিল প্রায় ৪৫ মিনিট। রাজ্যপালের অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডলে এই খবর পোস্ট করে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক বিধি যেন কঠোরভাবে পালন করা হয়।
আরও পড়ুন : ঝড়ের আশঙ্কায় বাতিল বহু ট্রেন
কিন্তু এই নিয়ে স্বয়ং রাজ্যপালের ভূমিকাই তো এক বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে। সূত্রের দাবি, শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারেই চাপ সৃষ্টি করে ক্ষান্ত হননি রাজ্যপাল, একদিনে কেন সব পুরসভার একসঙ্গে করা হল না, নির্বাচন কমিশনের কাছে তাও আবার জানতে চেয়েছেন তিনি। স্পষ্টতই গেরুয়া শিবিরের সংকীর্ণ এবং অগণতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রতিফলন রাজ্যপালের আচরণে। নিজেকে তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আর এখন তিনিই নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক সংস্থাকে নিয়ে বিজেপির স্বার্থে রাজনীতির খেলায় মেতেছেন। বাংলার মানুষ ২০২১-এর বিধানসভার ভোট এবং পরবর্তীতে উপনির্বাচনে যে রায় দিয়েছেন তা ভুলে গিয়েছেন। রাজভবন যে সত্যিই রাজ্য বিজেপির সদর দফতর তা আরও একবার প্রমাণিত হল। এর পরেও কী বলবেন মাননীয় রাজ্যপাল?