শীতকালীন অসুখে হোমিওপ্যাথি

ভরা গরম হোক বা কনকনে ঠান্ডা, রোগব্যাধি লেগেই থাকে আর অসুখ যারই হোক বা যেমনই, ২৪×৭ ডিউটি পড়ে বাড়ির কর্ত্রীর। তাই গুরুতর হওয়ার আগে যে কোনও রোগের প্রথম ধাক্কা সামাল দিতে হাতের কাছেই রাখুন হোমিওপ্যাথির সমাধান। সেই সঙ্গে বাড়িতে থাকুক এমন কিছু ওষুধ যাতে রোগের আশু-নিরাময় সম্ভব। আলোচনায় বিশিষ্ট হোমিওপ্যাথ ডাঃ প্রকাশ মল্লিক। লিখলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

শীতকাল মানেই বাড়ির মহিলাদের একস্ট্রা ডিউটি চালু। সকালে থেকে রাত ঘরকন্নার পাশাপাশি বাড়ির সকলের শরীর স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত দেখভাল। আসলে শীত যতই আরামদায়ক হোক না কেন এই সময় আট থেকে আশি— সর্দি, কাশি, গলা-খুস-খুস, মাথাব্যথা, কোমরব্যথা, পেটব্যাথা, বদহজম, শ্বাসকষ্ট, আলার্জি ইত্যাদি নানান রোগে ভুগতেই থাকে কমবেশি সবাই। ফলে বাড়ির কর্ত্রীকে সবসময় অন ডিউটি থাকতেই হয়। বয়স্ক শ্বশুর-শাশুড়ি হন বা রোজগেরে স্বামী কিংবা সন্তান— সবার শরীরের যাবতীয় দেখভালের দায় কিন্তু চাপে তাঁর কাঁধেই। ফলে নিজেকে নিয়ে তো বটেই, বাদবাকিদের নিয়েও এই সময় সতর্ক থাকতেই হয়। কারও কিছু হলে সবসময় ডাক্তারের কাছে ছোটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বয়স্ক মানুষেরা দৌড়ঝাঁপ করতে নাই পারেন। তাই চাই হাতের কাছেই এমন কিছু উপায় যা অনেক ছোটখাটো বিপদ সামাল দিয়ে দেয় অনায়াসে। শীতকালীন এই রোগব্যাধির ক্ষেত্রে খুব কার্যকরী হল হোমিওপ্যাথি। হাত বাড়ালেই বন্ধুর মতো সব সময় নাগালের মধ্যেই রয়েছে এই চিকিৎসা। হোমিওপ্যাথি একটা কমপ্লিট ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি। হোমিওপ্যাথি যে কোনও অসুখকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে সক্ষম। যেখানে ওষুধপত্রের পাশাপাশি ঘরোয়া সতর্কতা এবং পথ্যে আপনি শীতভর সুস্থ থাকতে পারেন। গৃহিণীরাই যখন হাউস স্টাফ তখন হাতের কাছেই থাক হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট হোমিওপ্যাথি। তাহলেই তাঁদের অর্ধেক দুশ্চিন্তার সমাধান।

আরও পড়ুন-ব্যতিক্রমী ২ নারী

বুড়ো হাড়ে শীতরোগ
শীতকাল মানেই সবচেয়ে দুশ্চিন্তা হয় যাঁদেরকে নিয়ে তাঁরা হলেন বাড়ির বুড়ো মানুষেরা। আর সেই ঝক্কি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খান মহিলারা। কারণ বয়স্কদের এমনিতেই রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম থাকে। ফলে শীত পড়তে না পড়তে শুরু হয়ে নানা ধরনের শীতকালীন রোগের প্রকোপ। কোথাও কিছু নেই লেগে যায় বেদম সর্দি, সঙ্গে কাশি গা-হাত-পা ব্যথা। আসলে বয়স্কদের ছোটখাটো রোগকেও ছোট করে না দেখাই ভাল। হঠাৎ বিপদ বেড়ে যেতে পারে।
প্রথম যেটা করা জরুরি তা হল রক্তচাপ মাপা, কারণ শীতে প্রেশার ফ্ল্যাকচুয়েশন খুব কমন সমস্যা। এই ঋতুতে রক্তচাপের মাত্রা পরিবর্তিত হয়। রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে ফলে ব্লাড প্রেশার বাড়ে। রক্তচাপ ১৩০/৯০-এর গণ্ডি পেরলেই তাকে হাই ব্লাডপ্রেশার বা হাইপারটেনশন বলে ধরে নেওয়া হয়। মুশকিল হল, শীতের শুরু থেকেই ভালমন্দ রান্না করে খাওয়াচ্ছেন সকলকে, এদিকে এই বেশি ভালমন্দেই কিন্তু যত মন্দ হয়। বয়স্ক মানুষের রেস্ট্রিকশনের দায়িত্ব আপনারই, না হলেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক-সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়তে থাকে। হোমিওপ্যাথিতে রোগীর ধাত, তার রোগের ধরন ইত্যাদি বিষয়গুলি বিবেচনা করার পরই ওষুধ দেওয়া হয়। তাই আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। নিজের বুদ্ধিতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ দেবেন না। হাইপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে আনতে এক্ষেত্রে কিছু ওষুধ কার্যকরী যেমন— স্পার্টিয়াম স্কোর এবং রাউভলফিয়া এসইআরকিউ।
এই সময় খুব সর্দি-কাশিতে নাজেহাল হন বয়স্করা। ঘুষঘুষে জ্বর, গলাব্যথা, গা-হাত পায়ে ব্যথায় ভোগেন। একবার লেগে গেল তো ব্যস গোটা শীত পেরিয়ে যাবে এই সমস্যা নিয়েই। কখনও কম, কখনও বেশি। বেশি যেটা হয় গলাব্যথা ও কাশি এবং মাথার যন্ত্রণা— তাই এক্ষেত্রে ঢোঁক গিলতে কষ্ট হয়। এক্ষেত্রে বেলেডোনা খুব ভাল ওষুধ। পাশাপাশি গলা খুসখুস, হালকা কাশি, কথা বলতে কষ্ট হলে হিপারসালফার খুব ভাল কাজ করবে। এছাড়া আর্সেনিক এলব, আর্স আয়োড, এলিয়াম সিপা এই ধরনের ওষুধগুলোও খুব কাজে দেবে। গলা বসে যাওয়ার একটা বড় প্রবণতা থাকে বয়স্ক মানুষের। এক্ষেত্রে ডালকামরা এবং রাসটস্ক খুব কাজে দেবে।
শীতের হাঁপানি নিয়ে বয়স্করা জেরবার হন। বিশেষ করে শীতের শেষের দিকে শ্বাসকষ্ট বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফুলের রেণু ছড়ায় বলে এমন তারতম্য ঘটে। শীতকালে ঠান্ডা বাতাস শ্বাসকষ্ট বৃদ্ধি করে। বাতাসে আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রার আকস্মিক ওঠানামার ফলে এমন ঘটনা ঘটে। শীতকালে ভাইরাস সংক্রমণেরও প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। এই ক্ষেত্রে লক্ষণ বুঝে চিকিৎকসকের পরামর্শ নিয়ে এন্টিম চার্চ, নেট্রাম সালফ জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।
বয়স্কদের এই ঋতুতে আরও একটা সমস্যা হয়। চোখ লালচে হয়ে যায়, চোখ থেকে জল পড়ে, অনেক সময় চোখে একটা জ্বালাভাব থাকে। এক্ষেত্রে ফেরাম ফস খুব কার্যকরী। ঠান্ডা লেগে চোখ থেকে জল পড়লে ইউফ্রেশিয়া আই ড্রপ নিয়মিত দেওয়া যেতে পারে দু’বার।

আরও পড়ুন-লাগাতার ব্যর্থতার নজির বিএসএফের, মালদহ-মেখলিগঞ্জ সীমান্তে অশান্তি

রক্ষে নেই বড়দেরও
বাড়ির যাঁরা বড় তাঁদের কি আর শীতকালে রক্ষে আছে! এর মধ্যে রয়েছেন বাড়ির গৃহিণীও। অন্যদের দেখভাল করতে গিয়ে তিনিও সংক্রমিত হন বইকি! শীতে বাড়ির মহিলা হন বা পুরুষ, একধরনের অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন যার খুব কমন উপসর্গ হল নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। এই ক্ষেত্রে স্যাম্বকাস, অ্যাসআয়োড জাতীয় ওষুধ সেবনে ভাল ফল পাওয়া যায়।
এই সময় কারণ ছাড়াই ঠান্ডা লেগে প্রচণ্ড গলায় ব্যথা হয়। মূলত ফ্যারিনজাইটিস বা টনসিলাইটিস থেকেই এই ব্যথা হয়। ঠান্ডা আবহাওয়াতে সেই ব্যথা আরও বাড়তে থাকে। শুরুতে ব্রায়োনিয়াতেই অনেকটা উপকার মিলবে। যদি বেশি ব্যথা হয় তাহলে অ্যাকোনাইট খেতে পারেন।
যাঁরা ডায়াবেটিক বা দীর্ঘমেয়াদি কোনও রোগ রয়েছে, শীত তাঁদের জন্য বিশেষ সমস্যার কারণ হতে পারে। কারণ এই সময় রোগগুলো বাড়ে। অনেকের ক্ষেত্রে অনিদ্রার মতো সমস্যাও তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে হোমিওপ্যথি ওষুধ খান, অনেকটাই উপকার পাবেন।
শীতকালে একটা খুব কমন শারীরিক সমস্যা হল চর্মরোগ। মূলত ড্রাইনেস বা খুব শুষ্কতা, রুক্ষতা থেকেই এই রোগ দেখা দেয়। এই চর্মরোগ বেশি হয় তাঁদের যাঁরা ঠান্ডায় কম স্নান করেন। এছাড়া ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ থেকেও হয়। বাড়ি মহিলারা সারাদিন সবার দায়িত্ব শেষে যদি এমন সমস্যায় পড়েন তাহলে খুব বিপদ। শীতকালে চর্মরোগ বড়, বুড়ো, মহিলা— যে কারও হতে পারে। সোরিয়াসিস, দাদ, একজিমা, চামড়া ফেটে যাওয়া— এগুলো এই সময় বাড়ে। এক্ষেত্রে লক্ষণ অনুযায়ী টিউবার কুলিনাম, ব্যাসিলিয়াম, কুলিনাম, সোরিনাম জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
শীতে রোগ-প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। এর ফলে কিছু রোগ হয় যেমন সোরা, সাইকোসিস এবং সিফিলিস। এগুলো চর্মরোগেরই এক একটা ধরন। শীতের শুকনো আবহাওয়াতে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অংশগুলোই আক্রান্ত হয়। ঠোঁট, গাল, পায়ের নিচের অংশ ফেটে যায়। এক্ষেত্রে গ্রাফাইটিস, হ্যানোমেলিস ইত্যাদি ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যাবে। এর সঙ্গে অবশ্যই হালকা গরম জলে স্নান এবং স্নানের পর ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।
শীতে বিশেষ করে বাড়ির মহিলাদের একটা সমস্যা হয় যাকে উইন্টার ডিপ্রেশন বলে। একটা অবসাদ তৈরি হয়। কোনও কিছু ভাল লাগে না। উদ্বেগ, মনঃসংযোগের অভাব দেখা দেয়। ওই সময় ঘুমের সমস্যা হয়, বুক ধড়ফড় করতে পারে বা উচ্চ রক্তচাপের একটা সমস্যা আসতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বয়স্ক মানুষেরও এই ধরনের ডিপ্রেশন আসে শীতকালে। এক্ষেত্রে যতটা সম্ভব সূর্যালোকে থাকার চেষ্টা করুন। সারাদিনে অন্তত একঘণ্টা সূর্যের আলোতে থাকুন। এক্ষেত্রে ইগ্নেশিয়া, ক্যালিফস, ওরামমেট, সিপিয়া জাতীয় হোমিপ্যাথি ওষুধগুলো কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে অবসাদে।
শীতে বাচ্চা থেকে বুড়ো, ব্রঙ্কাইটিস একটা বড় সমস্যা। এই রোগ অক্সিজেনবাহী নালিতে সংক্রমণ ঘটায়। ব্রঙ্কাইটিস হলে গরম জামাকাপড় পরিয়ে রাখুন রোগীকে। ধুলোময়লা যেখানে রয়েছে সেখানে না যাওয়াই ভাল। উষ্ণ জলে স্নান করতে হবে। স্পঞ্জিয়া, হিপার সালফার, অ্যান্টিম টার্ট, পালসেটিলা, আর্সেনিক এলবম ইত্যাদি ওষুধ খুব কার্যকরী।

আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশের পরই শুরু ৯০০ পরিবহণ কর্মী নিয়োগের তৎপরতা

কচিদের শীত-অসুখ
শিশুদের নিউমোনিয়া শীতকালীন এক বড় অসুখ, এই রোগ বয়স্কদেরও হয়। নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকজনিত কারণেও হয়। এর ফলে শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ জমে জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং কাশি হয়। বুকে ঘড়ঘড় আওয়াজ হয়। নিউমোনিয়া অ্যাকিউট হয়ে গেলে হসপিটালাইজেশন ছাড়া গতি থাকে না। তবে নিউমোনিয়ার উপসর্গ অল্পবিস্তর দেখা দিলেই ফসফরাস, হিপার সালফ, ব্রায়োনিয়া ইত্যাদি ওষুধে কার্যকরী ফল দেয়।
অনেক শিশুর মধ্যে চট করে ঠান্ডা লেগে যাবার একটা প্রবণতা দেখতে পাওয়া যায়। এই শিশুদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম থাকে। এক্ষেত্রে লক্ষণ অনুযায়ী টিউবার কুলিনাম, ব্যাসিলিনাম, সোরিনাম ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
শিশুদের নাক সর্দি হলেই বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে নাকের দু’পাশে এবং গলায় গরম সরষের তেল আলতো হাতে মালিশ করলে উপকার মিলবে। সেই সঙ্গে ডালকামরা খুব ভাল কাজ দেবে। শ্লেষ্মায় যদি বেশি ঘড়ঘড় করে তবে এন্টিম টার্ট খুব দ্রুত কাজ দেবে।
হঠাৎ করে ঠান্ডার কারণে শিশুদের, অনেক সময় বড়দেরও ডায়েরিয়া হতে দেখা যায়। বিশেষ করে যখন বেশি ঠান্ডা পড়ে, তখন বয়স্কদেরও ডায়েরিয়া হয়। এই সমস্যা এড়াতে তিনি বাইরের খাবার একেবারে না খাওয়া, খাবারের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন। বয়স্ক ও শিশুদের গরম কাপড়ের পাশাপাশি সবসময় হাতমোজা ও মোজা পরতে হবে। এক্ষেত্রে পালসেটিলা ভাল ওষুধ।
শীতকালে মশাবাহিত ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গি-সহ নানান ভাইরাস জ্বরের প্রকোপও দেখা যায়। এ-সময় অনেক জায়গায় মশার প্রকোপও বাড়ে। তাই মশার কামড়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কাঁপুনি দিয়ে উচ্চ-তাপমাত্রার জ্বর আসা, বারবার জ্বর আসা, গাঁটে ব্যথা ইত্যাদির লক্ষণ দেখা গেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছেয় ওষুধ না খাওয়াই ভাল।

আরও পড়ুন-গম্ভীরকে ভণ্ড বলে একহাত মনোজের

পথ্য
শীতে শরীর খারাপের সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার একটা বড় যোগ রয়েছে। ওষুধের সঙ্গে চাই ভাল পথ্যও। আর সেই পথ্য যদি আগেভাগেই আমরা নিতে থাকি তাহলে ওষুধ খাবার দরকার পড়বে না। যেমন শীতের শুরুতে বয়স্কদের একটা কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা বাড়ে। এ-সমস্যা এড়াতে সারাদিনে অন্তত তিন লিটার জল ও জলীয় খাবার খেতে হবে। এর সঙ্গে ডালিয়া, ওটস, বার্লি, ফল, শাক-সবজি, আনাজপাতি, খোসাসমেত ডাল ইত্যাদি রোজকার খাদ্যে রাখতে হবে।
এইসময় সর্দি, কাশি, ফ্লু, ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা ইত্যাদি রোগের মোকাবিলা করতে মুসম্বি, কমলালেবু, পাতিলেবু, আনারস, বিট, গিজর, বিন, রাঙাআলু ইত্যাদি ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে বেশি করে।
যাঁদের শীতে আলার্জির প্রবণতা অনেক বেশি তাঁরা বেগুন, টম্যাটো, আলু, ফুলকপি, চিংড়ি, কাঁকড়া, শুকনো ফল এড়িয়ে চলুন।
শীত মানেই ঘন-ঘন চা কিংবা কফি খাবেন না।

কিছু বিশেষ সতর্কতা
ঠান্ডা যাতে না লাগে সেই দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা জরুরি।
ফ্রিজের ঠান্ডা জল একেবারেই চলবে না। দরকারে হালকা গরম জল খান।
রাস্তার ধুলোময়লা অনেক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই সময় মাস্ক পরা বাঞ্ছনীয়।
বাইরে থেকে ফিরে হাত-পা মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ভোরের দিকে এবং রাতে গরম পোশাক যেন গায়ে থাকে।
একটু বেলা করে স্নান করুন এবং ঠিক সময় খাওয়াদাওয়া খুব জরুরি।
বয়স্কদের, বিশেষ করে শীতকালে অধিক আহার, বেশি রাতজাগা, বদ্ধ ঘরে সারাদিন কাটানো পরিহার করা উচিত।
প্রাতঃভ্রমণ খুব উপকারী। তবে রাস্তায় নয়, ছাদে হাঁটুন, উপকার বেশি পাবেন।
রোগ যা-ই হোক, হুট করে অ্যান্টাসিড, কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক বা ভিটামিন খাবেন না।

আরও পড়ুন-উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিটে এবার সিকিউরিটি থ্রেট কোড

বাড়িতে রাখবেন যে হোমিওপ্যাথি ওষুধ
বিপদ কখনও বলেকয়ে আসে না। বিশেষ করে শীতকালে বাড়িতে খুচখাচ রোগ লেগেই থাকে। সবসময় ডাক্তারের কাছে ছোটা সম্ভব হয় না। বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কিছু ওষুধ বাড়িতে রাখুন তবে প্রতিটাই তিরিশ পাওয়ার হলেই ভাল। তিরিশ পাওয়ারের ওপরে হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান এবং তাঁর পরামর্শে পাওয়ার বাড়িয়ে ওষুধ খান।
জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনি— রাসটস্ক ৩০
ঠান্ডা লাগা— ডালকামরা
পেটে ব্যথা— কলোসিন্থ
নাক সর্দিতে বন্ধ— সাম্বুকাস, ডালকামরা
শ্লেষ্মা বেড়ে গেলে— নাক্সভোমিকা
শিশুর তড়কা বা প্রবল জ্বর— একোনাইট
মাথা ঘোরা, কোঁতানি— ক্যামোমিলা
হাড়ে আঘাত— সিম্ফাইটাম
হঠাৎ পেটখারাপ— পালসেটিলা
বদহজম, অম্বল— নাক্সভোমিকা
মাংসপেশিতে টান— রাসটস্ক ৩০
কেটে-ছড়ে রক্তপাত— ক্যালেন্ডুলা ৩০, ক্যালেন্ডুলা লোশন
নাক দিয়ে রক্তপাত— অ্যাসিড নাইট্রিক, মেলিফোলিয়াম
দাঁত থেকে রক্তপাত— ফসফরাস ৩০
শিশুর ইউরিন বন্ধ হলে— একোনাইট ৩০
আঘাত লাগলে— আর্নিকা মন্ট ৩০
বয়স্কদের ব্রঙ্কাইটিসে— হিপোজেনাম
বয়স্কদের দুর্বলতায়— নাক্স মক
হাঁপানিতে— ইলিসিয়াম অ্যানিস

Latest article