সম্ভবামি যুগে যুগে
যখন ধর্মে আসে মলিনতা, অধর্ম ছেয়ে যায় চরাচর, ভাল মানুষদের উদ্ধার করতে আর খারাপের বিনাশ করতে, ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ঈশ্বর যুগে যুগে আবির্ভূত হন। সেই সম্ভবামির বাণী সত্যি করতে যুগে যুগে আবির্ভাব হয় যুগপুরুষদের। তাঁদের দেখানো পথে ধর্ম হয় মলিনতা মুক্ত। জটিলতার জটে আটকে যাওয়া ধৃ ধাতুকে মনের কাছাকাছি যাঁরা পৌঁছে দেন তাঁরাই অবতার। ঊনবিংশ শতকে গোড়ার দিকে এসেছেন অবতার বরিষ্ঠ শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব। তারপর উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে ৩৬ উল্টে ৩৬-তে এলেন সপ্তর্ষিমণ্ডলের এক নক্ষত্র— নরেন্দ্রনাথ হয়ে। এমন এক দিব্যপ্রাণ যিনি পুরাতন আর নতুনের মাঝে জুড়লেন এক সেতু। মোক্ষের পথে ভক্তি আর জ্ঞানের বদলে এগিয়ে দিলেন কর্মকে। দ্বৈত আর অদ্বৈত পথের মধ্যে সেতু হল বিশিষ্টাদ্বৈত, রচিত হল নববেদান্ত।
ধর্ম ও দর্শন
দৃশ আর ধৃ ধাতুর বড় ভাব। সোজাসুজি ভাষার দর্শন আর ধর্ম একে অপরের পরিপূরক। প্রত্যেক ধর্মের একটা নিজস্ব দর্শন আছে। ধর্ম অর্থাৎ যা ধরে রাখে, দর্শন যা দেখা হয়। ধর্মে আছে বিশ্বাস আর তার যুক্তি আছে দর্শনে। হিন্দু ধর্মের দর্শন উপনিষদ বা বেদান্তভিত্তিক। এর সঙ্গে দুটো ভুল সমান্তরাল ভাবে চলতে থাকে। প্রথমত, যেটাকে হিন্দু ধর্ম বলা হয় সেটা আসলে সনাতন ধর্ম। বিদেশিদের সিন্ধু উচ্চারণ না করতে পারার ফলে সিন্ধু হয়েছে হিন্দু। আর দ্বিতীয় ভুল, বেদান্তকে সাধারণ মানুষের ভয় পাওয়া, উচ্চারণ করতে গেলেই বে-দন্তের সম্ভাবনা। ফলে অধিকাংশ মানুষের কাছে সনাতন ধর্মের দর্শন পৌঁছয় না, পৌঁছয় আচার অনুষ্ঠান, সংস্কার, সর্বোপরি পুজোপাঠ, দেবতা ইত্যাদি। আর সঙ্গে আছে সনাতন ধর্মের দর্শনের একাধিক মত। সাধারণ মানুষ এত জটিলতা বোঝে না। তারা একটা বিশ্বাস আঁকড়ে বাঁচে, যে বিশ্বাসের শিখরে থাকে এক বৃহৎ শক্তি, তার নাম ঈশ্বর। আর এখান থেকেই যত মতের শুরু।
ব্রহ্মময়ী মাকালী
মূলত দুটি দর্শন দ্বৈতবাদ আর অদ্বৈতবাদ। দ্বৈতবাদ বিশ্বাস নিয়ে সব মানুষ শুরু করলেও নরেন্দ্রনাথ ছিলেন সব দিনই আলাদা। বিনা বিচারে কোনওদিন কিছু মেনে নেওয়া তাঁর স্বভাব ছিল না। জীবনের এক সংকটকালে এসেছিলেন রামকৃষ্ণদেবের সান্নিধ্যে। অজানা আকর্ষণে বারবার ছুটে এসেছেন দক্ষিণেশ্বরে। উল্টে-পাল্টে দেখার ধাত, তাই বারবার নিয়েছেন রামকৃষ্ণের পরীক্ষা। বাজিয়ে দেখে তবে গুরুর গুরুত্ব করেছেন স্বীকার। একবার নরেন্দ্রনাথ রামকৃষ্ণের নির্দেশ অনুসারে মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন। কালীমূর্তির সামনে নতজানু হতেই আনন্দের উচ্ছ্বাসে কালীর নাম বারংবার উচ্চারণ করতে থাকেন। মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর মনে হয় মূর্তিটি জীবন্ত ও চৈতন্যময়, দিব্য প্রেম ও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। তিনি কালীর কাছে দিব্য জ্ঞান, ভক্তি ও দেবীর দিব্যদর্শন প্রার্থনা করেন এবং যে জন্য তিনি এসেছিলেন, সেই পারিবারিক আর্থিক অবস্থার উন্নতিকল্পে প্রার্থনা করতেই ভুলে যান। ব্রহ্ম থেকে কালীতে বিচরণ জ্ঞানপথ থেকে ভক্তিপথে দেখা নরেনের পক্ষেই সম্ভব। গুরু অবশ্য রাস্তা তৈরি করেছেন কালীকে ব্রহ্মময়ী বলে। ব্রাহ্মসমাজ সংস্পর্শে বেড়ে ওঠা অদ্বৈতবাদীর শুরু হয় দ্বৈত অস্তিত্বে বিশ্বাস।
দ্বৈতবাদে জীবাত্মা পরমাত্মা আলাদা। অদ্বৈতবাদে ব্রহ্ম সর্বময়। মানুষ তার নিজের মধ্যে যখন খুঁজে পায় ঈশ্বরকে, তখনই তার মোক্ষ লাভ। অন্তরে চলে সো অহম বা আমিই সেই-এর খোঁজ তারপর অহম ব্রহ্মাস্মি বিচার। নরেন্দ্রনাথ অদ্বৈত ধারণায় বিশ্বাসী হয়েও গুরুকৃপায় মৃন্ময়ী ভবতারিণীর মধ্যে দেখলেন আনন্দ স্বরূপ, বিশ্বাস হল নিজসত্তার বাইরেও এক বৃহৎ সত্তার অস্তিত্বে। এবার নরেন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ হলেন, মেলালেন বেদান্তের দুই শাখাকে এক সেতুর দ্বারা। বিশিষ্টাদ্বৈতবাদ হল বেদান্তের এক মিশ্র ধারা।
কর্মযোগ
বিবেকানন্দের ব্যাখ্যায় জন্ম নিল নববেদান্ত। জীবাত্মা পরমাত্মা আলাদা। মানুষ তার কর্মের মাধ্যমে নিজের মধ্যেই ঈশ্বরকে দর্শন করতে পারে। কর্মযোগ সম্বন্ধে স্বামী বিবেকানন্দের বিশেষ মত— আমাদিগকে পরোপকার করিতে হইবে, ইহাই আমাদের কর্মপ্রবৃত্তির সর্বোচ্চ প্রেরণা, কিন্তু আমাদের সর্বদাই জানা উচিত যে, পরোপকার করা এক পরম সুযোগ ও সৌভাগ্য। ভাল হও এবং ভাল কাজ কর। ইহাই তোমাদের মুক্তি দিবে এবং সত্য যাহাই হউক না, সেই সত্যে লইয়া যাইবে। অর্থাৎ কর্মের মাধ্যমে জীবাত্মা পরমাত্মায় উন্নীত হতে পারে। স্বামী বিবেকানন্দ বেদান্তের ব্যাখ্যায় বলেছেন জগতের সর্বত্র ব্রহ্মের উপস্থিতি রয়েছে। মানুষের সেবা করাই ব্রহ্মের সেবা। ধর্মের তত্ত্ব কেবল মুখে আওড়ালে চলবে না, তাকে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। মুচি-মেথর-ডোম-চণ্ডাল-দরিদ্র-মূর্খ সবাইকে একবন্ধনীতে আনলেন স্বামীজি, সে-বন্ধনের নাম ভারতবাসী। কর্মের দ্বারা আত্মার শুদ্ধীকরণ ঊনবিংশ শতকের অন্ধকারে সে এক কঠিন ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাসের অঙ্ক।
গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলা ভাল— শরীর গঠন হবে। সুস্থ শরীর জন্ম দেবে সুস্থ মনের। সুস্থ মনের দ্বারা কৃতকর্ম হবে সুকর্ম। কর্মযোগের মাধ্যমে সাধনপথের সিদ্ধি। এইভাবে গীতা, উপনিষদের জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগের পথ দেখানো সন্ন্যাসী তিনি। কৌপিন, নিরামিষ, ছাইভস্ম আর কঠিন জ্ঞানের কচকচি থেকে সন্ন্যাসীকেও মুক্তি দিতে পেরেছিলেন এই রমতা যোগী।
উত্তিষ্ঠত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্ নিবোধত
‘নরেন কালী মেনেছে’ এই আনন্দে ঠাকুর নাচছেন। ঈশ্বর হাসছেন সম্ভবামির সত্য পালনে। ধর্মের নানা অনাচারের গুঁতোয় যারা অন্য ধর্মে রূপান্তরিত হয়েছিলেন সে-স্রোত আটকাবে, ব্রাহ্ম হওয়া হিন্দু মূল স্রোতে ফিরবে, নরেনের সঙ্গে অসংখ্য যুব সম্প্রদায় কালী মানবে। আবার এক যুগপুরুষের হাত ধরে হল ধর্মের সংস্কার। শিক্ষার আলোতে মনের অন্ধকার দূর করে চলবে সো অহমের ধ্যান। শিকাগো ধর্ম সম্মেলনের মহাসভায় হিন্দুধর্মের জয়গান গেয়ে বিশ্বের দরবারে আদায় করলেন শ্রদ্ধা। ধর্মকে গ্লানিমুক্ত করে সংস্থাপন করলেন আরও একবার।
গুরুকে পরীক্ষা নিয়েছেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত। অদ্বৈতবাদের জ্ঞান আর বিশ্বাসের ফাঁকে ফাঁকে মিশে গেছে গুরু আর মা কালী। গুরুর আদর্শকে মাথায় রেখে মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠায় মেনে নিলেন দ্বৈতবাদ— মূর্তি স্থাপন হল। ধ্যানের দ্বারা চিত্তশুদ্ধি, অন্তরে যদি হয় সো অহমের ধ্যান তাহলে অদ্বৈতবাদের হয় পূর্ণ পরিক্রমা। সঙ্গে রইল মূর্তিপূজা, ব্যক্তিপূজা এবং বহিরঙ্গের নানা আচার যাকে দ্বৈতবাদের সংস্কার সাধন বলা যায়। বিবেকানন্দ হয়ে রইলেন দ্বৈত ও অদ্বৈতের মধ্যে এক সমন্বয়-বিশিষ্ট অদ্বৈতবাদ— দ্বৈতাদ্বৈত— নববেদান্ত। এই দর্শন মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের সন্ধান করে কর্মের মাধ্যমে, চরিত্র গঠন করে তৈরি করে সুন্দর মনের। এই বেদান্ত শুধু মাত্র লালশালুতে ঢাকা ধর্মগ্রন্থ হয়ে ঘরের মান বাড়ায় না, এই বেদান্ত মানুষের মধ্যেই থাকা আত্মজ্যোতির প্রকাশ ঘটায়।
জ্যান্ত দুর্গার পদতলে
স্বামীজি শ্রীশ্রীমাকে স্বয়ং দুর্গার রূপে দেখতেন। মায়ের কাছে যাওয়ার আগে বারবার মাথায় গঙ্গাজল ছিটিয়ে নিজেকে শুদ্ধ করে নিতেন। কখনও গঙ্গাজল পান করছেন। কখনও দোর থেকেই আবেগবিহ্বল হয়ে পড়ছেন। স্বামীজি মাকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করতেন, পা ছুঁতেন না। পাছে স্নেহময়ী মায়ের স্পর্শে মানুষের পাপ মুক্তি হয় এবং সেই পাপে মা ব্যথা পান। এই যে আকণ্ঠ ভক্তি, এই সমর্পণ কখনওই বিশুদ্ধ অদ্বৈতবাদী সাধুর দর্শন হতে পারে না। দ্বৈতবাদী ধারণা নিয়ে মানুষ বড় হয়, তারপর তার জ্ঞান হয়, ঈশ্বরকে খুঁজে ফেরে। নেতি নেতি করে এক-একটা বাদ দিয়ে যায় ক্রমাগত, না এটা পরব্রহ্ম নয়, এটা নয়— এই করতে করতে নিজের মনের ভিতর খোঁজ পায় তাঁর। এই সাধনা সম্পূর্ণ জ্ঞান মার্গের। স্বামীজির মাতৃদর্শন ছিল পুরোপুরি ভক্তিপথে। জীবাত্মা ভক্তি করছে পরমাত্মাকে, নিজের আত্মজ্যোতিকে জাগিয়ে তুলছে। এই তুমি-আমির পথ দ্বৈতবাদীর। স্বামীজি তাঁর ঠাকুর সাক্ষাৎ-পরবর্তী জীবনে ক্রমাগত এই দুই পথের সঠিক সংমিশ্রণ ঘটিয়ে চলেছেন।
নিভৃত প্রাণের দেবতা
উত্তরাখণ্ডের মায়াবতীতে বিবেকানন্দের শিষ্য সেভিয়ার দম্পতি স্বামীজির ইচ্ছায় একটি আশ্রম খোলেন। অদ্বৈত আশ্রম, মায়াবতী রামকৃষ্ণ মঠের একটি শাখা। ১৮৯৯ সালের ১৯ মার্চ স্বামী বিবেকানন্দের নির্দেশে তাঁর দুই শিষ্য ক্যাপ্টেন জেমস হেনরি সেভিয়ার ও তাঁর স্ত্রী শার্লট সেভিয়ার অদ্বৈত আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। অদ্বৈত আশ্রম অদ্বৈত বেদান্ত গবেষণা ও অনুশীলনের কেন্দ্র। স্বামী বিবেকানন্দের আদেশ অনুসারে এই আশ্রমে কোনওরকম মূর্তি রাখা বা পুজো করা নিষিদ্ধ, এমনকী রামকৃষ্ণ পরমহংসের ছবি বা মূর্তিও এখানে রাখা হয় না। বর্তমানে স্বামী বিবেকানন্দের মূল রচনাগুলির প্রচারের দায়িত্ব অদ্বৈত আশ্রমের উপর ন্যস্ত। এখানে বিবেকানন্দ সম্পূর্ণভাবে অদ্বৈতবাদী।
গাহি সাম্যের গান
বিবেকানন্দ বেদান্তের সমুদ্রমন্থন করে প্রচার করলেন বৈদান্তিক সাম্যবাদ; এই সাম্যবাদ হল শ্রেণিহীন, বর্ণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সোপান। সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই— এই সত্য তিনি আবার সগর্বে ঘোষণা করলেন। স্বামীজি ভারতবর্ষে এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন যাতে ব্রাহ্মণের জ্ঞান, ক্ষত্রিয়ের সভ্যতা, বৈশ্যের সম্প্রসারণ শক্তি এবং শূদ্রের সাম্যের আদর্শ মিলিত হয়ে এদেশ এক মহামানবের পূর্ণ পীঠস্থান রূপে পরিগণিত হয়। দুর্দশা তাঁকে ব্যথিত করেছিল। তবে তিনি আশা হারাননি। বলেছিলেন, ভারত আবার জেগে উঠবে, জড়ের শক্তিতে নয়, চৈতন্যের শক্তিতে। ভারত ছিল তাঁর মা। ভারতের মানুষ ও সংস্কৃতি ছিল তাঁর প্রাণ। ভারতকে ভালবেসে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভারতাত্মা। অধঃপতিত ভারতবর্ষকে পুনরায় স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করতে স্বামীজি যুবশক্তির ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন। তিনি বললেন— শুধু মানুষ চাই, শুধু শক্তিমান মানুষ। সেদিনের যুবসমাজ স্বামীজির ত্যাগ ও আদর্শের মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বদেশের শৃঙ্খল মোচনের জন্য উদ্বোধিত হয়েছিল। যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বামীজি বলেছিলেন দেশপ্রেমিক হও… জাতিকে প্রাণের সঙ্গে ভালবাস। যুবকদের প্রতি তাঁর নির্দেশ ছিল— হে যুবকবৃন্দ, দরিদ্র, অজ্ঞ ও নিপীড়িত মানুষের ব্যথা তাকে প্রাণে প্রাণে অনুভব করাও। জনগণের সেবায় প্রাণপাত করার কথা বলেন তিনি। স্বামীজি বলেছিলেন— টাকা নয়, চরিত্রই সব কিছু সাফল্যের মূল। তাই তিনি চরিত্রবান বলিষ্ঠ হৃদয় যুবকদল গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন— তোমরা মায়ের জন্য বলিপ্রদত্ত। এই জীবন কেবল ব্যক্তিগত গুণের জন্য নয়, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। তাঁর আশা ছিল ছাত্র ও যুবকরাই ভারতকে পূর্ব মহিমা ফিরিয়ে দিতে পারবে। আর যুবসমাজকে এই যে মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করলেন সেটাই বেদান্ত শিক্ষা।
তত্ত্বমসি
সপ্তঋষির এক নক্ষত্র তাঁর মাত্র ঊনচল্লিশ বছরের পৃথিবী ভ্রমণকালে শেখালেন এক বিস্মৃত দর্শনের বিস্মিত প্রয়োগ। এক রমতা যোগী ঊনবিংশ শতকে গড়ে তুললেন অষ্টম শতাব্দীর শঙ্করাচার্য আর ত্রয়োদশ শতাব্দীর মাধবাচার্যের মধ্যে এক আশ্চর্য সেতু। যে সেতুর একদিকে থাকে ব্রহ্ম সত্য জগৎ মিথ্যার জ্ঞানযোগ, অন্যদিকে নরেনের কালী মানার আনন্দ নিয়ে ভক্তিযোগ মাঝে শত ধারায় বয়ে চলে কর্মযোগ। আশ্চর্য, সেতু দিয়ে স্বচ্ছন্দ বিচরণ হয় সো অহম থেকে কালীর দিকে, মাঝের পথটাই স্বামীজির নববেদান্ত।