সুদেষ্ণা ঘোষাল, দিল্লি: খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচারিত ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতি মানছে না তাঁরই নেতৃত্বাধীন সরকারের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রক!
শুনতে অবাক লাগলেও এই চাঞ্চল্যকর তথ্যই এবার সামনে এসেছে সরকারি সূত্রে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে তৈরি দ্রব্যকেই প্রাধান্য দিতে হবে, মেক ইন ইন্ডিয়া থিমের এটাই মূল নির্যাস। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতি সম্বলিত একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল ২০১৭ সালে৷ প্রথম প্রথম এই নীতি মেনে প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগও গৃহীত হয়। এর পরে সময় যত এগিয়েছে ততই সামনে এসেছে বজ্রআঁটুনি ফসকা গেরো প্রবাদ৷ স্বদেশি জিনিসের পরিবর্তে বিভিন্ন ভেন্ডারের মাধ্যমে বিদেশি ব্র্যান্ডেড জিনিস কেনায় ঝোঁক বেড়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের৷ অভিযোগ উঠছে, কেন্দ্রীয় সরকারি ভবনের জন্য নতুন লিফট থেকে শুরু করে অফিস কম্পিউটার, টেলিফোন, বাতানুকূল যন্ত্র, হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা—সবকিছু কেনার ক্ষেত্রেই মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতিকে ছুঁড়ে ফেলে বিদেশি ব্র্যান্ডকে প্রাধান্য দিতে শুরু করেছে তাঁরই সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক৷
আরও পড়ুন-হিমাচলে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষিতা তরুণী
নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত নীতিকে উপেক্ষা করার এই প্রবণতা এবং এবিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে এবার নড়েচড়ে বসেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর এবং সরকারি সংস্থা ডিপিআইআইটি বা ডিপার্টমেন্ট ফর প্রোমোশন অফ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইন্টারনাল ট্রেড৷ নয়াদিল্লিতে সরকারি সূত্রের দাবি, রাতারাতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বিভিন্ন বিদেশি দ্রব্য কেনার জন্য বহু কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফে জারি করা ৬৪,০০০ কোটি টাকার টেন্ডার সম্পর্কে৷ কেন স্বদেশি জিনিস না কিনে বিদেশি জিনিস কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে টেন্ডার জারি করেছে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, তার কৈফিয়তও চাইবে কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষস্তর, দাবি সরকারি সূত্রের৷ এইভাবে মেক ইন ইন্ডিয়া নীতিকে বিসর্জন দেওয়ার পিছনে মোটা টাকার কমিশনের কোনও চক্র কাজ করছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে সেই বিষয়টিও, দাবি সরকারি সূত্রে৷ সবমিলিয়ে নিজের নীতিকে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের অন্দরে কার্যকর করতেই ব্যর্থ খোদ প্রধানমন্ত্রী।