নায়ক মানেই হল কাঠখোট্টা কিলার লুক। আমির খান মার্কা চকোলেট হিরো লুকের চেয়ে এই লুকটাই বেশি জনপ্রিয় চিরকাল। ‘দেবা’র পোস্টার রিলিজের পর এই কথাই মনে হয়েছে। কারণ শাহিদ কাপুরকে দেখে তাঁর ভক্তকুল মুগ্ধ। পোস্টারের ফার্স্ট লুকেই ধামাকা করেছেন শাহিদ। আসছে তাঁর নতুন অ্যাকশন থ্রিলার ছবি ‘দেবা’। এর আগের ছবিতে শাহিদকে তাঁর ভক্তরা পেয়েছেন সম্পূর্ণ এক অন্য অবতারে। ২০০৩ সালে ইশক-ভিশক ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রেখেছিলেন শাহিদ কাপুর (Shahid Kapoor)। বিগত বছরে কবির সিং এবং ‘তেরি বাঁতো মে এয়সা উলঝা জিয়া’র মতো রোম্যান্টিক প্রেমের ছবিতেও তিনি ঝড় তুলেছেন। দর্শকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে তাঁর ওয়েব সিরিজ ‘ফর্জি’ও। সবসময়ই অসাধারণ অভিনয়-দক্ষতায় দর্শকমন জয় করে নিয়েছেন তিনি। এবার ‘দেবা’তে তাঁকে দর্শক দেখবে অ্যাকশন অবতারে।
ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে অতি-খারাপ হলেও হিরোর মুখে সিগারেট, তার সেই ড্যাশি-পুশি চেহারার ভার বাড়িয়ে দেয় কয়েকশো গুণ। তাই স্বাভাবিক ভাবেই সেই অ্যাটিচিউড মার্কা পোস্টারটিতেও শাহিদ কাপুর নজর কেড়েছেন সবার। হেভিওয়েট নায়কদের ভিড়ে বরাবরই তিনি নিজের ওয়েট রেখেই ছবি করেছেন। তাঁর কোনও ছবি ফেলে দেবার মতো নয়। ‘দেবা’র পোস্টারে শাহিদের পিছনে দেখা যাচ্ছে ৯০-এর দশকের সেই অ্যাঙ্গরি ইয়ং ম্যান অর্থাৎ বিগ বি-র ছবি। শাহিদ কাপুরের কিলার লুক— সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের সেই সময়ের কিলার লুক এই দুটো জুড়ে একটা বেশ কৌতূহল তৈরি হয়েছে। দর্শকদের মনে প্রশ্ন জেগেছে। এমনটা কেন? সেই রহস্যের সমাধান করতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে, তবে যেমনই হোক দক্ষিণের জনপ্রিয় পরিচালক রোশন অ্যান্ড্রুজের পরিচালনায় তৈরি এই ছবি বছরের প্রথম সবচেয়ে বড় অ্যাকশন প্যাক ছবি হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
‘দেবা’র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছিল ২০২৩ সালের মে মাসে। অক্টোবরে শ্যুটিং শুরু হয়। ২০২৪-এই মোটামুটি শ্যুটিংয়ের সব কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আগে ঠিক হয়েছিল নতুন বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ছবিটা মুক্তি পাবে কিন্তু ওই সময় ভিকি কৌশলের অ্যাকশন প্যাক ছবি ‘ছাবা’ রিলিজ করছে তাই ‘দেবা’ মুক্তির তারিখ এগিয়ে আনা হয়। সুতরাং নতুন বছর পড়তে না পড়তে আগামী ৩১ জানুয়ারি বড়পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি।
ছবির গল্প এক সৎ, সাহসী, বেপরোয়া পুলিশ অফিসারকে নিয়ে। যার নাম দেব— সেই দেব থেকেই ‘দেবা’।
যে সমাজের সব অন্যায়কে মুছে ফেলতে চায়। সেই মিশন ইমপসিবল হলেও তা পসিবল করতে সে সক্ষম। একটি হাই প্রোফাইল মামলার তদন্ত করবেন সেই পুলিশ অফিসার এবং অনেক বড় অন্যায়, ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস করবেন। সেটা করতে গিয়ে অনেক বড় ঝুঁকিও নেবেন। যে-পথে হাঁটবেন তা একেবারেই সহজ পথ নয়। এরপর কী হয় সেটাই দেখার। দেবা কি পারবে ষড়যন্ত্রের, মামলার কিনারা করতে? ছবিটি দেখে অনেকেরই মনে হতে পারে ২০১৩-র ‘মুম্বই পুলিশ’-এর রিমেক, তবে এই বিষয়ে কোনও কিছু নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। ছবিটি প্রসঙ্গে শাহিদ কাপুর বলেছিন, ‘বহুদিন ধরে এমন একটা ছবি তৈরির কথা ভাবছিলাম। এমন একটা চরিত্র যা আমজনতাকে রিলেট করতে পারবে। কাজেই সেই ভাবনা থেকেই এই ছবিটা তৈরি হয়েছে। দর্শক এই ছবির সঙ্গে নিজের জীবনের সঙ্গে অনেক মিল খুঁজে পাবেন। ঠিক সেই কারণে একজন অভিনেতা হিসেবে এই চরিত্রটা আমার কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল। খুব সুন্দর এই ছবির গল্প। দর্শকদের মন তো ছুঁয়ে যাবেই, সেই সঙ্গে আমার ফ্যানসরা খুব এনজয় করবেন তাঁদের প্রিয় অভিনেতাকে একটা মনের মতো চরিত্রে দেখতে পেয়ে এইটুকু আমি দাবি করতে পারি।’
এই ছবিতে যেমন অ্যাকশন রয়েছে তেমনই রয়েছে আবেগ, প্রেম, নাচগান— যাকে বলে ফুল অন এন্টারটেইনমেন্ট।
আরও পড়ুন- ১০ প্রশ্ন মোদিকে
‘দেবা’তে শাহিদের (Shahid Kapoor) বিপরীতে রয়েছেন অভিনেত্রী পূজা হেগড়ে। এক চৌখশ, সাহসি সাংবাদিকের চরিত্রে দেখতে পাওয়া যাবে তাঁকে। ঘটনাচক্রে যিনি ওই মামলার সঙ্গে জুড়বেন। প্রচুর সওয়াল-জবাবময় থাকবে তাঁর প্রতিটা সংলাপ। ছবির টিজার রিলিজ হয়েছে কিছুদিন আগেই। টিজার আসার সঙ্গে সঙ্গে সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। টিজারে এক খতরনাক পুলিশ অফিসার শুধু হাজির হননি, এসে ঝড়ও তুললেন। দুষ্টের দমন করতে ঝাঁজরা করে দিলেন শত্রুপক্ষকে। অ্যাকশন প্যাক সেইসব দৃশ্য শুধু অস্ত্রশস্ত্র নয় চাকু, হাত— এমন কোনও কিছু নেই যা ব্যবহার করেনি হিরো। টিজার দেখেই হতভম্ব ভিউয়ারসরা।
শাহিদ কাপুর আর পূজা হেগড়ে ছাড়া এই ছবির মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন পাবেল গুলাটি, প্রবেশ রানা, কুবরা সৈয়ত প্রমুখ। ছবির কাহিনি এবং চিত্রনাট্য করেছেন ববি-সঞ্জয়। সংলাপ লিখেছেন সুমিত অরোরা, হুসেন দালাল, আর্শাদ সায়েদ।
সিনেমাটোগ্রাফিতে রয়েছেন অমিত রায়। ছবির সুরকার বিশাল মিশা এবং পার্শ্বসঙ্গীতে রয়েছেন জ্যাকস বিজয়। প্রযোজক সি স্টুডিও এবং রয়, কাপুর ফিল্মের সিদ্ধার্থ রয় কাপুর এবং উমেশ কে আর বনশল।