৯ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা: ব্যবস্থা নিলে প্রশ্ন, না নিলেও সমালোচনা, স্যান্ডউইচ হতে পারে না সরকার

Must read

প্রতিবেদন : মেদিনীপুরের হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) রাজ্য স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্রমান্বয় উন্নতির কথা তুলে ধরেন। বলেন, ৯ কোটি মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ পাচ্ছেন। মহিলাদের নামেই স্বাস্থ্যবিমা। রেফারেল কমেছে ৫ শতাংশ। ৪২টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে। বেড়েছে আশাকর্মীর সংখ্যা। মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা বেড়েছে, আসন বেড়েছে। সরকার প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতির চেষ্টা চালাচ্ছে। পূর্ববর্তী সরকারগুলির সঙ্গে তুলনা করলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দেশের মধ্যে পথ দেখাচ্ছে। কিন্তু কিছু স্বাস্থ্যকর্মীর অবহেলা সরকারকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে। এটা চলতে পারে না।

মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) বলেন, বাম আমলের তুলনায় বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামোর বিস্তর উন্নতি হয়েছে। ২৬ নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়েছে। ডাক্তার, নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যাও যথেষ্ট বৃদ্ধি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও একাংশ চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের গাফিলতিতেই মানুষ সরকারি হাসপাতালে গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির খতিয়ানও তুলে ধরে জানিয়েছেন, স্বাধীনতার সময় থেকে রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ছিল ১১। তাঁর আমলে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩৭। তার মধ্যে সরকারি কলেজের সংখ্যা ২৪। রাজ্যে এমবিবিএস আসনের সংখ্যা ১৩৫০ থেকে বেড়ে ৫,৬৫০ হয়েছে। এমডি আসনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১,৮৪৮। সরকারি হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৭ হাজার। ব্লাড ব্যাঙ্ক, ট্রমা কেয়ারের সুবিধা রয়েছে। রাজ্যে ১৪ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ করা হয়েছে। ওবিসি মামলার নিষ্পত্তি হলে আরও চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে। রাজ্যে নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৭ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪৫১। আগে কেন্দ্রগুলিতে আসন ছিল ২,৫৪৫, এখন ২৮,৪৬৭। সরকারি হাসপাতালে অনুমোদিত নার্সিং কর্মী, প্যারামেডিক্যাল কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আশাকর্মীর সংখ্যা ২ বছরে ১১ হাজার বেড়েছে। এখন ৬৪ হাজার আশা কর্মী রয়েছেন রাজ্যে। তা সত্ত্বেও কেন প্রসূতি মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটবে!

আরও পড়ুন- নির্লজ্জ! ধরা পড়ে যেতেই ফের কর্মবিরতির ডাক জুনিয়রদের

মেদিনীপুরে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় এদিন মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্যসচিবকে পাশে বসিয়ে সরকারি রিপোর্ট সামনে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নেগলিজেন্স ইজ অলসো আ ক্রাইম! আপনারা কি মনে করেন না, অ্যাকশন নেওয়া দরকার ছিল। না নিলে তো আপনারাই বলতেন, নেওয়া হল না কেন? তাহলে গভর্নমেন্ট কোনটার মধ্যে যাবে? স্যান্ডউইচ হবে নাকি যেটা সত্য সেটা সামনে আনবে। তাই কিছু না লুকিয়ে আসল ঘটনা সামনে আনা হল।

বহু ক্ষেত্রে জুনিয়র চিকিৎসকদের দিয়ে অপারেশন করানোর অভিযোগ ওঠে। জনমানসের সেই অভিযোগকে কার্যত মান্যতা নিয়ে এদিন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশ্ন তুলেছেন, সব কেসে সিনিয়ররা বা এইচওডি, সিস্টাররা সঙ্গে থাকবেন না কেন? এগুলোতে ভাল করে নজরে রাখতে হবে। কারণ, বাংলার বদনাম বরদাস্ত করব না। বলা হয়, তুলো ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। অথচ এখন সরকারি হাসপাতালে সব কিছু পাওয়া যায়। এখানে অনেক বিশ্বসেরা চিকিৎসকও রয়েছেন। তবু গাফিলতি হচ্ছে। এক্সামিনেশন সিস্টেম বদালাতে হবে। এমএসভিপি, এইচওডি-কে দায়িত্ব নিতে হবে। এর জন্য একটি বিদেশি সংস্থার সাহায্যে রাজ্যের চিকিৎসক ও নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ধারাবাহিক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, কাউকে দোষারোপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য বাংলার মানুষকে আরও ভাল পরিষেবা উপহার দেওয়া।

Latest article