নিরাপদ নন তারকারাই, সইফের হামলাকারী অধরাই

বলিউড তারকা সইফ আলি খানের বেডরুমে ঢুকে তাঁকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে দুষ্কৃতী। অস্ত্রোপচারের পর এই মুহূর্তে স্থিতিশীল সইফ।

Must read

প্রতিবেদন : বলিউড তারকা সইফ আলি খানের বেডরুমে ঢুকে তাঁকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে দুষ্কৃতী। অস্ত্রোপচারের পর এই মুহূর্তে স্থিতিশীল সইফ। যদিও বেশ কিছুদিন লাগবে তাঁর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে। মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে সইফকে দেখতে তারকাদের ভিড়। শাহরুখ খান, সঞ্জয় দত্ত, রণবীর কাপুর, আলিয়া ভাট— কে নেই সেখানে! উদ্বিগ্ন করিনা কাপুর কার্যত হাসপাতালেই পড়ে আছেন। ঘটনার খবর পাওয়ার পর তৎক্ষণাৎ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ভয়ঙ্কর এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। সেই সঙ্গে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে মুম্বইয়ের নিরাপত্তা নিয়েও। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার জন্য কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি মুম্বই পুলিশ। একজন সন্দেহভাজনকে ধরা হলেও সে-ই আসল দোষী কি না তাও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। কার্যত অন্ধকারেই অপরাধীদের খোঁজে হাতড়ে বেড়াচ্ছে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

শুধু সইফ নন, শাহরুখ খান, সলমন খানের উপরেও রয়েছে থ্রেট। একাধিকবার তাঁদের আক্রমণ করার চেষ্টা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সইফের ঘটনার পর তাঁর শারীরিক অবস্থা, অস্ত্রোপচার, লীলাবতী হাসপাতালে তারকাদের দেখতে যাওয়া— এসব নিয়েই ব্যস্ত জাতীয় সংবাদমাধ্যম। অথচ বিজেপি-শাসিত মহারাষ্ট্রে যেখানে এই পর্যায়ের তারকাদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই, বেডরুমে ঢুকে ছুরি মেরে দিচ্ছে দুষ্কৃতীরা— সেখানে আম নাগরিকদের নিরাপত্তা কোথায়? এই প্রশ্নটাই কোনও সংবাদমাধ্যম তোলেনি এখনও পর্যন্ত। তার কারণ, সবই পেটোয়া মিডিয়া, তারা গুরু (মোদি) ভজনায় ব্যস্ত থাকে সারা বছর। অথচ এই ঘটনা বাংলার কোনও তারকা-অভিনেতা-অভিনেত্রীর ক্ষেত্রে ঘটলে সংবাদমাধ্যম তোলপাড় করে ফেলত এই প্রশ্ন তুলে— বাংলায় যেখানে তারকাদের নিরাপত্তা নেই, আমজনতার কী অবস্থা তবে বুঝুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মুণ্ডপাত করা চলত দিনরাত। কিন্তু বিজেপি-শাসিত রাজ্যে একের পর এক খুন-জখমের ঘটনা ঘটলেও সেখানকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রশ্নও কেউ করছে না। একশ্রেণির সংবাদমাধ্যমের এই ধরনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বড্ড কুরুচিকর। সাম্প্রতিক অতীতে কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যেই দেখা গিয়েছে দেশের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিরিখে সবথেকে নিরাপদ শহর হল কলকাতা। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র-সহ সব ক’টি বিজেপি-শাসিত রাজ্যই এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে বহু যোজন। এই নিয়েও কোনও টেলিভিশনে টক শো হয় না। অথচ কলকাতায় সামান্য কোনও ঘটনা ঘটলেই মিডিয়া এমন ভাবে তাদের ন্যারেটিভ সাজায় যেন আইনশৃঙ্খলার নিরিখে কলকাতার অবস্থা তলানিতে। এত সবের পরেও কোন লজ্জায় বঙ্গ-বিজেপি এবং বিজেপি জাতীয় নেতৃত্ব টেলিভিশনের পর্দায় মুখ খুলে চলেছেন, সাফাই গাইছেন! কিন্তু একটি প্রশ্নের উত্তর তাঁরা কেউই দিতে পারছেন না, মুম্বইয়ের মতো জায়গায় যেখানে বলিউড তারকাদের নিরাপত্তা থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে, সেখানে এত বড় গাফিলতি কী করে হল! মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা এজেন্সি বলে নিজেদের দাবি করে। অথচ তাদের নাকের ডগায় একটার পর একটা খুন-জখম হয়েই চলেছে। মুম্বই পুলিশের শীর্ষকর্তারা বাধ্য হয়ে বিতর্কিত অফিসার দয়া নায়েককে সইফের ঘটনায় মাঠে নামিয়েছে। কুড়িটি দল গঠন করে তদন্ত করছে মুম্বই পুলিশ, যার নেতৃত্বে রয়েছেন দয়া নায়েক। এই পরিস্থিতিতে গোটা বলিউড এই মুহূর্তে সিঁটিয়ে রয়েছে। কখন কাকে আক্রমণ করা হবে কেউ জানে না, এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে মুম্বইবাসীও।

Latest article