প্রতিবেদন : কলকাতার সমস্ত ওয়ার্ডে বিপুল প্রচার শুরু হয়েছে দলের।
বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় : এবারে ৯১ নম্বর ওয়ার্ডলালেদের দখলমুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তৃণমূল কংগ্রেস। এই লক্ষ্যেই তারা প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়েছে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা এবং দক্ষ সংগঠক বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়কে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বৈশ্বানর এখনও ছাত্রছাত্রীদের এবং যুবসমাজের সঙ্গ পছন্দ করেন দারুণভাবে। হয়ে পড়েন নস্টালজিক। আলিপুর আদালতের শুধুমাত্র বিশিষ্ট আইনজীবী নন, আইনজীবীদের নেতা হিসেবেও রীতিমতো জনপ্রিয়। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তিনি ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট। ৯০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন বেশ কয়েকবার। বরো কমিটির চেয়ারম্যান এবং মেয়র পারিষদ হিসেবে রীতিমতো ভরসাযোগ্য হয়ে উঠেছিলেন সাধারণ মানুষের। এবারে ৯০ নম্বর মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তাই ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের গুরুদায়িত্ব দলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বৈশ্বানরের উপরেই। তাই এই ওয়ার্ড সিপিএমের দখলমুক্ত করতে দারুণ সিরিয়াস তিনি। সকাল থেকে রাত অবধি ঘুরছেন মানুষের দরজায় দরজায়। বলছেন, ‘এলাকায় এখনও পর্যন্ত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে পারেননি সিপিএম কাউন্সিলর। ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। নরকযন্ত্রণা ভোগ করছেন এলাকাবাসী। জলাশয়গুলির সংস্কার হয়নি। দরকারে খুঁজেই পাওয়া যায় না সিপিএম কাউন্সিলরকে।’ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, নির্বাচিত হলে দ্রুত সমাধান করবেন এলাকার দীর্ঘদিনের প্রতিটি সমস্যার। প্রচারে বেরিয়ে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া জয়ের ব্যাপারে গভীর আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের এই অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রার্থীকে।
সৌরভ বসু : এমবিএ থেকে মনোবিদ। কলকাতার পুরনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের নবাগত প্রার্থীদের তালিকায় সাড়াজাগানো উপস্থিতি বিভিন্ন পেশার মেধাবীদের। রয়েছেন প্রতিভাবান আইনজীবীরাও। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশিত পথে মানুষের ভরসাযোগ্য হয়ে উঠতে এঁরা সকলেই এখন গভীর অনুশীলনে। প্রাণপাত পরিশ্রম করে চলেছেন জনসম্পর্ককে আরও নিবিড় করতে। দক্ষিণ কলকাতার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌরভ বসু ভোট-লড়াইতে এবারে নবাগত। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাক্তনী সৌরভ চাকরি করতেন একটি বহুজাতিক মোবাইল নেটওয়ার্ক সংস্থায়। কিন্তু দলের যুবনেতা এবং ওয়ার্ড সভাপতি হিসেবে বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে তাঁর উপলব্ধি, অফিসের দায়িত্ব সামলে মনের মতো করে জনসেবা সম্ভব নয়। তাই চাকরি ছেড়ে এখন ওই সংস্থারই এখন পরামর্শদাতার ভূমিকায় সৌরভ। কলেজ, রাজনীতি এবং কর্পোরেট দুনিয়ায় তাঁর কাছের বন্ধু সন্দীপন সাহা মধ্য কলকাতার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর এবং এবারেও দলের প্রার্থী। তিনিও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, কলকাতার পাশ-আউট। সৌরভকে নিয়মিত উদ্দীপনা জোগাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার ছেলে সন্দীপন। কথা হচ্ছিল মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে। বললেন, ‘ছোটবেলা থেকেই ছেলেকে শিখিয়েছিলাম মানুষের কথা মন দিয়ে শুনতে। ভরসাযোগ্য হয়ে উঠতে। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ অনুসরণ করে সৌরভ সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলেছে।’ পুরভোটে এবারে আরও এক বিশেষ আকর্ষণ ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বসুন্ধরা গোস্বামী। নবাগত বসুন্ধরা পেশায় মনোবিদ। সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতার পুরনির্বাচনে মনোবিদ প্রার্থী সম্ভবত এই প্রথম। মানুষের মনের কথা সহজে বুঝতে পারলে জনসেবা অনেক নিখুঁতভাবে করা সম্ভব বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস।
আরও পড়ুন : এগোচ্ছে জাওয়াদ, তৈরি প্রশাসন, কৃষি থেকে বিদ্যুৎ সতর্কতা সমস্ত ক্ষেত্রে
অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় : বাড়ি-বাড়ি প্রচারে গিয়ে মিশে গেলেন অনন্যা। মানুষের মাঝেই ছিলাম। মানুষের মাঝেই আছি। ভোট বলে নয়, সারা বছরই এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ। এ-কথা বললেন ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকাকে তিনি চেনেন হাতের তালুর মতো। কিন্তু প্রচারে ফাঁক রাখতে চান না। তাই বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সকলের সঙ্গে মিশে গেলেন। শুক্রবার অজয়নগর বিবেকানন্দ পার্কে প্রচার সারেন তিনি।
ভোট-কর্মীদের কোভিড সুরক্ষায় কমিশন : কোভিড-সুরক্ষায় বিন্দুমাত্র ফাঁক রাখতে চায় না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার-সহ প্রতিটি ভোট- কর্মীর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ভ্যাকসিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট শংসাপত্র পেশ করলেই নির্বাচনের কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে। এখনও পর্যন্ত যাঁদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া হয়নি, তাঁদের টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।