গতি বাড়িয়ে দু’মাসে প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টন ধান কিনেছে রাজ্য, উপকৃত নদিয়ার ৫৩ হাজার চাষি

রাজ্যের ধান কেনার গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে এসেছে বাজারে ফড়েদের দাপট। একই সঙ্গে খোলা বাজারেও বেড়েছে ধানের দাম।

Must read

প্রতিবেদন : রাজ্যের ধান কেনার গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে এসেছে বাজারে ফড়েদের দাপট। একই সঙ্গে খোলা বাজারেও বেড়েছে ধানের দাম। ফলে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি ধান বিক্রির বিকল্প রাস্তাও পেয়ে গিয়েছেন চাষিরা। খোলা বাজারে ধান বিক্রি করেও লাভের মুখ দেখছেন তাঁরা। দু’মাসের কম সময়ে ইতিমধ্যে দেড় লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি ধান কেনা হয়ে গিয়েছে নদিয়ায়। পঞ্চাশ হাজারের বেশি চাষির কাছ থেকে এই বিপুল পরিমাণ ধান কেনা হয়েছে ইতিমধ্যে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চালের চাহিদা বাড়ায় ধান কেনার গতিও বেড়ে যায় গত কয়েক সপ্তাহে। সম্প্রতি বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা-সহ বিভিন্ন দেশে চাল রফতানি শুরু করেছে ভারত। যা দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল।

আরও পড়ুন-পড়তে হবে না হ্যারিকেনে, ছাত্রীর বাড়িতে বিদ্যুৎ সায়ন্তিকার উদ্যোগে

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়েছে সিপিসিগুলোতে। বিভিন্ন সময় অভিযান চলেছে প্রশাসনের তরফে। দু’মাসের কম সময়ের মধ্যেই প্রচুর ধান কেনাও হয়েছে এলাকার বহু চাষির কাছ থেকে।’ প্রশাসন সূত্রে খবর, নদিয়ায় চলতি মরশুমে ৩ লক্ষ ৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে রাজ্য। ২৩ নভেম্বর থেকে জেলায় ধান‌ কেনা শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত দু’মাসের কম সময়ের মধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়ে গিয়েছে। খুব অল্প সময়ের ভিতর জেলার প্রায় ৫৩ হাজার চাষির কাছ থেকে এই বিপুল ধান‌ কেনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জেলায় নথিভুক্ত ৮১ হাজার চাষির থেকে সরকারের ধান কেনার অন্যতম উদ্দেশ্য, ফড়েদের হাত থেকে তাঁদের রক্ষা করার পাশাপাশি খোলা বাজারে ধানের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। এর ফলে অসাধু ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পড়ে চাষিদের ক্ষতি হবে না। সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরাসরি ধান বিক্রি করেই তাঁরা লাভের মুখ দেখবেন। সরকারের তরফে বর্তমানে উৎসাহ ভাতা-সহ কুইন্টাল-প্রতি ধানের মূল্য ২৩২০ টাকা। খোলা বাজারে চাষিদের থেকে কম-বেশি ২০০০ টাকা কুইন্টাল দরে ব্যবসায়ীরা ধান কিনলেও বর্তমানে দাম বেড়ে কুইন্টাল-পিছু ২২০০ থেকে ২২২০ টাকা হওয়ায় কৃষি বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ বছর সরকার শুরু থেকেই ধান কেনার গতি বাড়ানোয় ফড়েরা বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেনি। রাজ্যের কৃষি‌ বিশেষজ্ঞদের দাবি, সরকারি মূল্য এবং বাজারমূল্যের মধ্যে বৈষম্যের জন্যেই মাঝখানে ফড়েরা সুবিধা পেয়ে যায়। সরকারের ধান কেনার গতি কম হলে ফড়েরা আগেই চাষিদের থেকে কম দামে ধান কিনে নেয়। তবে এবার অতিরিক্ত গোষ্ঠীর মাধ্যমেও সরকার ধান কিনেছে নদিয়ায়। পাশাপাশি সম্প্রতি বাজারে চালের চাহিদাও বেড়েছে। ভিনদেশে চাল রফতানি হচ্ছে। বিপুল চাহিদা থাকায় চাষিদের থেকে বেশি দামে চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্য সরকারের তরফেও ধান কেনায় তৎপরতা দেখানো হচ্ছে। ফলে উভয় দিক থেকেই উপকৃত হচ্ছেন চাষিরা।

Latest article