প্রতিবেদন : আরজি কর মামলায় হাসপাতালের সেমিনার রুমই যে মূল ঘটনাস্থল বা ক্রাইম সিন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। নির্দেশনামায় সে-কথাই উল্লেখ করেন বিচারক। সেই সঙ্গে এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদী ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা ভুয়ো অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে সঞ্জয় রাই-ই একমাত্র খুনি, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারক। রাজ্য পুলিশও প্রাথমিক তদন্তের পর এ-কথাই বলেছিল। সিবিআইও তদন্তের পর সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়।
আরও পড়ুন-হাওড়ায় পুরসভার উদ্যোগে শুরু দুয়ারে লাইসেন্স কর্মসূচি
শিয়ালদহ আদালতের রায়েও এখন তা প্রমাণিত। কিন্তু এরপরও গোটা ঘটনায় প্রতিবাদী ও বিরোধীদের একাংশ খুশি নন। তাঁরা বলছেন, ঘটনায় আরও কেউ জড়িত ছিল। মামলার নির্দেশনামায় বিচারক অনির্বাণ দাস কিন্তু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, গোটা ঘটনা সঞ্জয় একাই ঘটিয়েছিল। রায়ে একাধিক যুক্তি দিয়ে বিচারক নির্দেশনামায় উল্লেখ করেন, এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, খুনের মোটিভ কী? নির্যাতিতা চিকিৎসক ও অভিযুক্ত সঞ্জয় পরস্পরকে চিনতেন না সেটা স্পষ্ট। তাঁদের মধ্যে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতাও ছিল না। নির্যাতিতাকে খুনের জন্য সঞ্জয়কে কেউ সুপারিও দেয়নি। তাহলে প্রশ্ন, কেন খুন করল অভিযুক্ত? বিচারক উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত স্বীকার করেছেন যে, ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থায় তিনি হাসপাতালের চারতলায় গিয়েছিলেন। তবে তিনি সেমিনার রুমে যাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও তার সপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। উল্টোদিকে, তদন্তকারীদের হাতে তাঁর সেমিনার রুমে ঢোকার প্রমাণ রয়েছে। ওইদিন সেমিনার রুমে ঢুকে আকস্মিক লালসা থেকে নির্যাতিতাকে আক্রমণ করেন অভিযুক্ত। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, নির্যাতিতা যে সেমিনার রুমে রয়েছেন, তা আগে জানত না অভিযুক্ত। তাই এই অপরাধ পূর্ব-পরিকল্পিত নয়। এর পিছনে কোনও চক্রান্তও নেই। সেই সঙ্গে সেমিনার রুমই যে গোটা অপরাধের ঘটনাস্থল তা-ও উল্লেখ করেছেন বিচারক। ফলে অন্য কোথাও খুন করে দেহ সেমিনার রুমে রাখার অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। ফলে এই নিয়ে প্রতিবাদীদের ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা অভিযোগের যে কোনও সারবত্তা নেই তা ফের প্রমাণিত হল।