ইউজিসির খসড়া নিয়ম নিয়ে এবার এনডিএতেও অসন্তোষ

Must read

প্রতিবেদন: বিরোধীদের সুরেই এবার সরব শাসক জোটের শরিকরাও। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্যের অধিকার সংকুচিত করার চেষ্টার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে একাধিক বিরোধী রাজ্য। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তামিলনাড়ু ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রীও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ২০২৫ সালের খসড়া নিয়মাবলির কড়া বিরোধিতা করেছেন। এই খসড়া বিধিকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিতর্কের মধ্যে এবার বিরোধের সুর শোনা যাচ্ছে এনডিএ-র অন্দরেও। বিশেষত বিহার ও অন্ধ্রের মতো যে রাজ্যগুলিতে বিজেপির শরিক দলের নেতারা মুখ্যমন্ত্রী পদে, সেখানে বিরোধিতা স্পষ্ট। বিহারের শাসক দল তথা বিজেপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী জেডিইউ-এর মধ্যে এই ইস্যুতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নীতীশের দলের একটি অংশ সরাসরি বলেছে যে এই প্রস্তাব উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের ভূমিকা সীমিত করবে। ইউজিসি-র খসড়া নিয়মাবলিতে প্রস্তাব করা হয়েছে যে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যদের (ভিসি) নিয়োগে চ্যান্সেলরদের (যারা কেন্দ্র কর্তৃক নিযুক্ত রাজ্যপাল) আরও বড় ভূমিকা দেওয়া হবে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডিইউ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের শাসক দল এই খসড়া পুরোপুরি পর্যালোচনা করার পর এটি নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নিজেদের আপত্তি জানাবে।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেডিইউ-এর জাতীয় মুখপাত্র রাজীবরঞ্জন প্রসাদ বলেছেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলেরই একটি রোডম্যাপ থাকে। উচ্চশিক্ষা তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নির্বাচিত সরকারের ভূমিকা সীমিত করার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টা ব্যাপকভাবে নিরুৎসাহিত হবে। আমরা এখনও ইউজিসি-র খসড়া নিয়মাবলি পড়িনি, তবে মিডিয়ায় যেসব তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে, তা থেকে বোঝা যায় যে এর কিছু সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। যদিও পরে বিজেপির চাপের মুখে এক বিবৃতিতে জেডিইউ নেতা দাবি করেন যে এটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত।

আরও পড়ুন- দ্রুত আপস বদলি, এবার প্রশ্নফাঁস রুখতে সতর্ক পর্ষদ : ব্রাত্য

অন্যদিকে ইউজিসির (UGC) প্রস্তাব নিয়ে আরেক গুরুত্বপূর্ণ এনডিএ শরিক ও অন্ধ্রের শাসক দল টিডিপির মধ্যেও অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। জোটের ফাটল গোপন করতে সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়ে টিডিপির জাতীয় মুখপাত্র দীপক রেড্ডি বলেন, আমরা ইউজিসির (UGC) খসড়া নিয়মাবলি দেখেছি, তবে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব বর্তমানে দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইভেন্টে থাকায় এই বিষয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা হয়নি। তবে আমাদের আপত্তি প্রকাশ্যে না জানিয়ে উপযুক্ত ফোরামে জানাব। আমরা এই নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক চাই না।

এনডিএর আরেক শরিক এলজেপি (রামবিলাস) এই বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে যে বিষয়টি সংসদে আলোচনা করা উচিত। এলজেপি (আরভি)-এর জাতীয় সহ-সভাপতি এ কে বাজপেয়ী বলেছেন, এটি সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এটি নিয়ে সংসদে আলোচনার অধিকার রয়েছে। বিরোধী শাসিত একাধিক রাজ্য ইউজিসি-র (বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শিক্ষক ও অ্যাকাডেমিক কর্মীদের নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা এবং উচ্চশিক্ষার মান বজায় রাখার ব্যবস্থা) ২০২৫-এর খসড়া নিয়মাবলির বিরোধিতা করেছে, যা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে চ্যান্সেলরদের বৃহত্তর ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, এই নিয়মগুলি সাংবিধানিক যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতিকে দুর্বল করার পাশাপাশি রাজ্যের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রের স্বার্থ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

Latest article