প্রতিবেদন : অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কলকাতায় নাশকতা ছড়াতে এসেছিল উত্তরপ্রদেশের ‘শিক্ষিত’ দুষ্কৃতীরা! তাঁদের মধ্যে কেউ বিটেক ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বিজ্ঞানে স্নাতক, আবার কেউ করেছেন এম কম। নিজেদের রাজ্যে কাজ নেই, তাই ৫ শিক্ষিত বেকার যুবক অস্ত্র নিয়ে বাংলায় এসেছিল অপরাধ সংগঠিত করার জন্য। যোগীরাজ্যের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কতটা বিপর্যস্ত, সেটাই চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল শিয়ালদহের এই ‘শিক্ষিত’ দুষ্কৃতীরা। যদিও গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় সেই চক্রান্ত বানচাল করে দিয়েছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। শিয়ালদহের বৈঠকখানা বাজার থেকে গ্রেফতার হয়েছে দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) রূপেশ কুমার জানিয়েছে, ধৃতরা প্রত্যেকেই উচ্চশিক্ষিত! এমনকী তাদের কাছ থেকে যে দুটি বন্দুক পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যেই একটি ইতালির তৈরি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র! এই ধরনের মারণাস্ত্র নিয়ে তারা কোন দুরভিসন্ধি এঁটে শহরে এসেছিল, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিন ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এই বিষয়ে মঙ্গলবার লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা ও যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) রূপেশ কুমার। জয়েন্ট সিপি জানান, কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে এসটিএফের কাছে একটি ইনপুট আসে। জানা যায়, সেখান থেকে একটি টিম কলকাতায় এসেছে কোনও বড় অপরাধ সংগঠিত করার জন্য। তারপরই সোমবার শিয়ালদহে অভিযান চালায় এসটিএফের একটি দল। ৫ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কথায় অসঙ্গতি থাকায় তল্লাশি চালানো হয়। তখনই তাদের কাছ থেকে একটি সেমি-অটোমেটিক বন্দুক, একটি সিঙ্গল শর্টার ও ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে। তাদের কাছে কোনও বৈধ কাগজপত্রও ছিল না। এসটিএফ থানায় তাদের বিরুদ্ধে কেস দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন- বইমেলার জন্য অতিরিক্ত বাস
রূপেশ কুমার আরও জানিয়েছেন, ধৃতদের প্রত্যেকেরই বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। সকলেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এবং উচ্চশিক্ষিত। কেউ বিটেক ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে, কেউ এম কম, বিএ-বিএসসিতে স্নাতক, আবার কেউ আইটিআই ইঞ্জিনিয়ার। ধৃত রুকেশ সাহানিকেই দলের মূলপান্ডা হিসেবে মনে করা হচ্ছে। তার কাছে কয়েকটি ট্রেনের টিকিটও মিলেছে। দিনদুয়েক আগেই তারা কলকাতায় এসেছিল। শহরের একটি লজে ছিল তারা। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখানে তাদের প্রোফাইল, আগের কোনও কেস হিস্ট্রি রয়েছে কিনা, জানার চেষ্টা চলছে।