প্রতিবেদন: প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে ঠিক কতজন প্রাণ হারিয়েছেন, কতজন আহত হয়েছেন, তার সঠিক সংখ্যা জানানো হোক অবিলম্বে, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের ডাকা সর্বদল বৈঠকে দাবি জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, যোগী সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার, উভয় তরফেই মিথ্যাচার করা হচ্ছে, প্রকৃত ঘটনা চেপে যাওয়া হচ্ছে। এই ইস্যু নিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশনে সুর চড়াবে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC), বৃহস্পতিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন- শরীরচর্চা করুন, পুলিশকে পরামর্শ দিলেন নগরপাল
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার মধ্যরাত ও বুধবার ভোরে প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের দুর্ঘটনায় মোট কতজন প্রাণ হারিয়েছেন, তার সঠিক সংখ্যা এখনও প্রকাশ করে নি উত্তর প্রদেশের গেরুয়া সরকার। পুরো বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ কেন্দ্রীয় সরকারেরও। বুধবার যোগী সরকারের তরফে জানানো হয়েছে ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছেন কুম্ভে দপিষ্ট হয়ে। এটা যে মিথ্যাচার, তার প্রমাণ মিলেছে বৃহস্পতিবার। এদিন সকালে যোগীরাজ্যের একটি সংবাদ মাধ্যমের স্টিং অপারেশন ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। অগণিত মানুষ নিখোঁজ, দাবি এই সংবাদ মাধ্যমের। এর পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে চাপ বাড়িয়ে সর্বদল বৈঠকে কুম্ভের প্রকৃত সত্য তুলে ধরার দাবি জানান সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সমর্থন জানান বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়ান। এর পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন বিমা ও স্বাস্থ্যবিমার উপর থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি প্রত্যাহারের ঘোষণা এই বাজেটেই করুক মোদি সরকার। এই ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই সোচ্চার তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বীমা ও স্বাস্থ্য বীমার উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে চিঠি লিখেছিলেন। তারপরে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে এই বিষয় নিয়ে সোচ্চার হন রাজ্যের অর্থ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এর পরে বিরোধী শিবিরের চাপের মুখে পড়ে নীতিগত ভাবে জিএসটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অর্থ মন্ত্রকের তরফে এখনও পর্যন্ত তা সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। বীমা ও স্বাস্থ্য বীমার উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ হতে চলা বাজেটে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মধ্যবিত্তের উপর থেকে করের বোঝা কমিয়ে এবারের বাজেটে আয়কর ছাড় বাড়ানোর দাবি করেন তিনি।
দিল্লিতে সংসদীয় সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবারের সর্বদল বৈঠকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসির খসড়া গাইডলাইন নিয়ে আগে রাজ্যগুলোর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হোক। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মোদি সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা তারা মানবেন না, জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের বৈঠকে অন্যান্য সাংসদের মধ্যে সব থেকে বেশি ১০ মিনিট বক্তব্য রাখেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পর্বেই তিনি ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে মোদি সরকারের ভাবনা এবং জেপিসির ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তাকে সমর্থন জানান বিরোধী শিবিরের অন্যান্য সাংসদরাও।