মন্দির হোক, তবে তার আগে হাসপাতাল

Must read

প্রতিবেদন : সোনাচূড়ার জমিতে আগে হোক হাসপাতাল। আপত্তি নেই মন্দিরেও। কিন্তু নন্দীগ্রামের (Nandigram) মানুষকে দেওয়া কথা রাখতেই সোনাচূড়ার ওই জমিতে আগে হোক হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ব্যক্তি মালিকানার জমিতে মন্দির বা মসজিদ যা খুশি হতে পারে। কিন্তু জনগণের তহবিলে কেনা জমিতে প্রতিশ্রুতি মেনে, জনতার আবেগকে মর্যাদা দিতে হবে। তাই ওই জমিতে আগে শহিদদের নামে হাসপাতাল হোক। পরে বাকি অংশে মন্দির হতে পারে তাতে আমাদের আপত্তি নেই।

আরও পড়ুন- অতই সহজ গান্ধীকে মেরে ফেলা? গান্ধীর পায়ে রাত্রি চক্র ঘোরে

জমি আন্দোলনের পর নন্দীগ্রামের (Nandigram) সোনাচূড়ায় শহিদ মিনার ও একটি হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি কেনা হয়েছিল। ঠিক হয়, ট্রাস্ট তৈরি করে ওই ট্রাস্টের নামেই জমি রেজিস্ট্রেশন করা হবে। ওখানে জমি আন্দোলনে নিহতদের স্মৃতিতে শহিদ মিনার তৈরি হয়। সিদ্ধান্ত হয়, ফাঁকা জমিতে স্থানীয় মানুষের চাহিদা মেনে গড়ে তোলা হবে আধুনিক হাসপাতাল। কিন্তু সেই জমিতে এখন রামমন্দির নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এনিয়ে গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে শোরগোল। এই আবহে বিষয়টি নিয়ে নন্দীগ্রামের তারাচাঁদবাড় মাঠে বৃহস্পতিবার পল্লি উৎসবের মঞ্চে এসে কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ। ছিলেন শেখ সুফিয়ান, আবু তাহের, বাপ্পাদিত্য গর্গ, জেলা পরিষদের সহসভাপতি সুভাষিণী কর, কর্মাধ্যক্ষ মানস পন্ডা, তরুণ জানা, সামসুল ইসলাম প্রমুখ। তাঁরা কুণালকে বলেন, জমি আন্দোলনের পর সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগৃহীত তহবিল দিয়ে শহিদ মিনার এবং হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি কেনা হয়। অনেকে আবেগে শহিদদের নামে হাসপাতাল তৈরির জন্য কমদামেও জমি দিয়ে দেন। তাঁরা আরও জানান, ট্রাস্ট তৈরি করার কথা থাকলেও শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এভাবে সময় লাগবে, তাই আগে ব্যক্তি মালিকানায় রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হোক। তারপর নিজের নামেই তিনি জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ককে কমদামে জমি দিয়েছিলেন শহিদের নামে হাসপাতাল গড়ার জন্য। হাসপাতাল তৈরির জন্য ভূমিপুজোও হয়েছিল। এখন নিজের নামে থাকা হাসপাতালের সেই জমিতে রামমন্দির নির্মাণের মতলব করছেন তিনি। কুণাল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মন্দিরে কোনও আপত্তি নেই, তবে আগে প্রতিশ্রুতি মেনে শহিদদের নামে হাসপাতাল করতে হবে। কুণালের যুক্তি, জমি তো মানুষ দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও জমি রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে হাসপাতাল হবে বলে। পরে তিনি বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। কিন্তু মানুষের আবেগ তো শহিদদের নামে ওই হাসপাতালকে ঘিরে। সেই আবেগ তো আর বিজেপিতে যায়নি। তাই আগে হাসপাতাল, পরে চাইলে বাকি জমিতে মন্দির হোক, আপত্তি নেই। কুণাল সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ব্যক্তিমালিকানার জমি, কিন্তু জমি আন্দোলনের মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে এমন কিছু নিশ্চয়ই করবেন না যাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়।
এদিন শেখ সুফিয়ানের উদ্যোগে নন্দীগ্রাম পল্লি উৎসবের গণবিবাহ আসরে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। হিন্দু, মুসলিম মিলিয়ে মোট ২২ জোড়া ছেলেমেয়ের বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও ছিলেন চণ্ডীপুরের বিধায়ক ও অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী, প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরি, কাঁথির পুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি, প্রাক্তন বিধায়ক অমিয় ভট্টাচার্য, ছাত্রনেত্রী জয়া দত্ত প্রমুখ।

Latest article