প্রতিবেদন : দেশ ডুবছে। নির্বিকার বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির সরকার। তারই মধ্যে আজ, শনিবার সংসদে বাজেট (Budget 2025) পেশ। আবার বঞ্চিত হবে বাংলা। নিশ্চিতভাবেই বঞ্চনার শিকার হবেন দেশের আমজনতা। দেশের অর্থনীতির সর্বনাশের অশনিসংকেত দেখা যাবে কেন্দ্রের বাজেটে। কিন্তু বাজেট পেশের পরেই বিজেপি নেতৃত্বের মুখে শোনা যাবে লম্বা-চওড়া বুলি। দেশের প্রগতি নিয়ে শুধুই মিথ্যার বেসাতি। এদিকে কেন্দ্রের বাজেট পেশের ঠিক আগেই শুক্রবার রাষ্ট্রপতির ভাষণ নিয়ে ১০টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ, নাকি তোতাপাখিকে শেখানো বুলি? বিজেপির শিখিয়ে দেওয়া কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল রাষ্ট্রপতির কণ্ঠে। আর এই একরাশ মিথ্যাচারকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল তৃণমূল। শুক্রবার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদদের সামনে দেওয়া রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণে মোদি সরকারের গালভরা প্রশংসা থাকলেও উপেক্ষিত থেকে গেল সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় সব ইস্যু৷ আর এর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে গর্জে উঠল তৃণমূল কংগ্রেস৷ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দীর্ঘ ভাষণের চুলচেরা বিশ্লেষণে ১০টি প্রশ্ন তোলা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে৷ কেন রাষ্ট্রপতি তাঁর দীর্ঘ ভাষণে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধ, মূল্যবৃদ্ধি, অগ্নিগর্ভ মণিপুর, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো, মনরেগা প্রকল্পের আওতায় থাকা ১০০ দিনের কাজ, বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও, সামাজিক অসাম্য, স্মার্ট সিটি এবং অপুষ্টির মতো বিষয়গুলি তুলে ধরলেন না? শুক্রবার প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন৷ তৃণমূল শিবির সূত্রের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতি দেশের আমজনতার কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি এড়িয়ে গিয়ে শুধুমাত্র ঝাঁ চকচকে দিকগুলিই উল্লেখ করতে চেয়েছেন৷ যে সমস্যাগুলি নিয়ে সংসদের ভিতরে ও বাইরে কোনওদিনই মুখ খুলতে নারাজ মোদি সরকারের মন্ত্রীরা, যেগুলি নিয়ে মুখে কুলুপ দিয়ে রাখেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সেসব বিষয় রাষ্ট্রপতির ভাষণে ঠাঁই পায়নি৷ গোটা বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে৷
আরও পড়ুন- মৃত কুম্ভের মেলায় বিজ্ঞাপনের মারণ বীজ বনাম গঙ্গাসাগর মেলায় আতিথেয়তার নম্র বিচ্ছুরণ
উল্লেখ্য, বাজেট (Budget 2025) অধিবেশনের শুরুতেই লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদদের একযোগে সম্বোধন করতে গিয়ে শুক্রবার মোদি সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু৷ এদিন সংসদে পেশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে প্রস্তুত করা অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট৷ এই রিপোর্টে যখন দাবি জানানো হচ্ছে যে, আগামী দিনে দেশের জিডিপির হার নিম্নমুখী হবে, তখন এর বিপরীত পথে গিয়ে রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে দাবি জানিয়েছেন ভারত অর্থনৈতিক উন্নয়নের শিখরে ওঠার দিকে এগোচ্ছে দ্রুত গতিতে৷
এদিকে, রাষ্ট্রপতির ভাষণের পরেই এদিন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় বক্তব্য পেশ করার চেষ্টা করেন৷ সেই সময়ে সংসদে নিজেদের আসনে দাঁড়িয়ে কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান এবং এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি দাবি করেন বিরোধী শিবিরের সাংসদরা৷
সংসদীয় সূত্রের দাবি, আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপরে ধন্যবাদ জ্ঞাপন পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে লোকসভায় বক্তব্য রাখতে পারেন বর্ষীয়ান দুই সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার ও সৌগত রায়৷ রাজ্যসভায় বক্তব্য পেশ করতে পারেন দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও প্রকাশ চিক বরাইক৷