বিহারকে ললিপপ, দেশকে বুড়ো আঙুল

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পেশ করা বাজেট আসলে জনবিরোধী, গরিববিরোধী, দিশাহীন।

Must read

প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পেশ করা বাজেট আসলে জনবিরোধী, গরিববিরোধী, দিশাহীন। এই বাজেট দিল্লি ও বিহারকে ললিপপ এবং দেশবাসীকে বুড়ো আঙুল দেখানোর বাজেট। আয়কর ছাড়ের নামে ভয়ঙ্কর জাগলারি করা হয়েছে। এখানে উন্নয়নের কোনও দিশা নেই। আয়কর নিয়ে যে-কথা বলা হচ্ছে, তার প্রকৃত উপকারিতা দেশের মানুষ পাবেন না। কারণ এঁরা মুখে এক কথা বলেছেন, আর কাজে তার বিপরীত বাস্তবায়নের আশঙ্কা রয়েছে। সামাজিক প্রকল্পের বরাদ্দেও বিস্তর কাটছাঁট করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মানুষকে রক্ষাকবচ দেয়, আর কেন্দ্রীয় সরকার রক্ষাকবচ কাড়ার বাজেট করেছে।

আরও পড়ুন-আয়করে ছাড় দেওয়া আসলে বড় জাগলারি

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের এই বাজেটের আসল চেহারাটা এভাবেই জনমানসে তুলে ধরছে তৃণমূল কংগ্রেস। ভয়ঙ্কর জাগলারি ও দিশাহীন বাজেট আখ্যা দিয়ে দলের বক্তব্য, সীমাহীন মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দিশা নেই বাজেটে। এমনকী কর্মসংস্থানেরও কোনও দিশা দেখাতে পারেননি অর্থমন্ত্রী। সামগ্রিকভাবে সামাজিক প্রকল্পগুলি কোনও বরাদ্দ পায়নি। আয়করের ছাড় নিয়ে যেভাবে মাতামাতি বা বিজ্ঞাপন করা হচ্ছে আসলে আয়কর ছাড়ের বিষয়টি মাত্র ৮ কোটি মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তার বাইরে দেশবাসী এই ছাড়ের কোনও সুবিধা পাবেন না। অথচ বিজেপির নেতারা বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা মিডিয়ার সামনে যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, তা দেখে মনে হচ্ছে দেশের ১৪০ কোটি মানুষই এই আয়কর ছাড়ের উপকারিতা পাবেন, তা মোটেও নয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এই বাজেটে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার। তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, বিমা ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিমা, এলআইসি-সহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের উপর থেকে জিএসটি তোলার যে দাবি জানিয়েছিলেন তা রাখা হয়নি। সামাজিক প্রকল্পের রক্ষাকবচও নেই। এই বাজেট দিল্লি ও বিহারের নির্বাচনকে সামনে রেখে ললিপপ দেখানোর বাজেট। এবারের বাজেটেও বাংলার জন্য কোনও বরাদ্দ নেই। বাংলাকে বঞ্চনার ট্র্যাডিশন অব্যাহত। অথচ বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছে। অথচ বাংলা পায়নি কিছুই।
বাজেটে কৃষক, শ্রমিক, মহিলা, ছাত্র-যুবদের জন্য ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছুই নেই। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে হারার পরে গত তিন বছরে রাজ্যে বরাদ্দ বঞ্চনা অব্যাহত। ১০০ দিনের কাজ, গ্রামীণ সড়ক যোজনা, সংখ্যালঘু স্কলারশিপ, এসটি, এসসি, ওবিসি স্কলারশিপের মতো কল্যাণমূলক প্রকল্পে কোনও বরাদ্দ হয়নি। সেই সঙ্গে দৃষ্টিকটুভাবে বিহারের জন্য কোশি প্রকল্প ঘোষণা করা হলেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান, কাঁথি মাস্টার প্রকল্প প্ল্যান, গঙ্গা-পদ্মা ক্ষয়বিরোধী পরিকল্পনা এবং উত্তরবঙ্গের বন্যা ও ভূমিধস নিয়ন্ত্রণে এই বাজেটে কোনও দিশা নেই।

Latest article