”বাংলায় শিল্পের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল”: মুকেশ আম্বানি

বাংলায় শিল্পের পরিবেশ অনুকূল, রয়েছে আদর্শ পরিকাঠামো, এক বাক্যে স্বীকার করলেন রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিস এর কর্ণধার মুকেশ আম্বানি

Must read

বাংলায় শিল্পের পরিবেশ অনুকূল, রয়েছে আদর্শ পরিকাঠামো, এক বাক্যে স্বীকার করলেন রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিস এর কর্ণধার মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani)। মুখ্যমন্ত্রী শিল্পমহলের কাছে বারংবার বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরেছেন। এবছর ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি নিউটাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে অষ্টম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন চাঁদের হাট। এদিনের সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ৪০টি দেশের দুশোর বেশি প্রতিনিধি। মঞ্চে রয়েছেন মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দালরা। লক্ষ্য একটাই, বাংলার শিল্পক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগ।

আরও পড়ুন-‘ভয়াবহ গণহত্যা’, সুইডেনের স্কুলে বন্দুকবাজের হানায় মৃত ১০

এদিন সম্মেলনে মমতা ‘দিদি’র প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন মুকেশ আম্বানি। মুখ্যমন্ত্রীর নামের মাহাত্ম্যও ব্যাখ্যা করেন তিনি। বলেন, ”মমতা মানেই সহানুভূতি। আর দিদি মানে, অবিশ্রান্ত নেত্রী। মমতা সরকারের আমলে অর্থনীতি ও বাণিজ্যে ক্ষেত্রে নবজাগরণ দেখছে বাংলা। বেঙ্গল আইডিয়াল ইনভেস্টমেন্ট -এর জায়গা, এটা বলতে আমার কোনও বাধা নেই।’’ সম্মেলনের শুরুতে মা কালী, রবীন্দ্র-নজরুল, সত্য়জিৎ রায় ও বাংলার সকল মনীষীদের প্রণাম জানালেন রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির কর্ণধার। শিল্পক্ষেত্রে বাংলায় নবজাগরণ ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের কোনও শক্তি বাংলার পুনরুত্থান আটকাতে পারবে না। বাংলায় দ্বিগুণ বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন আম্বানি। বস্ত্র ও চর্মশিল্প, পর্যটন, সেমিকন্ডাক্টরের মতো শিল্পগুলিতে লগ্নি নিয়ে আসার উপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন আম্বানি।মোবাইল নেটওয়ার্ক, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ক্ষেত্রে বিনিয়োগের কথা জানান তিনি। তৈরি হবে এআই ডেটা সেন্টার। এছাড়া জামদানি, মুর্শিদাবাদ, বিষ্ণুপুরী সিল্ককে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মুকেশ আম্বানি। কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারে আর্থিক সাহায্যর কথাও বলেন তিনি। বাংলায় রিলায়েন্সের বিনিয়োগের খতিয়ানও তুলে ধরলেন মুকেশ আম্বানি। এদিন মুকেশ আম্বানি বলেন, ”মমতা মানেই বিজনেস। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বাংলায় নবজাগরণ। তাই বিনিয়োগ দ্বিগুন করবে রিলায়েন্স। বাংলায় ৫০ হাজার কোটি বিনিয়োগ হবে। আগামী বছরেই দিঘার কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হবে। এনার্জি সেক্টরে বিনিয়োগ করবে রিলায়্যান্স।”

আরও পড়ুন-বাংলায় বিনিয়োগের ঘোষণা: সরকারি প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা সঞ্জীব পুরীর

প্রসঙ্গত, মুকেশ আম্বানি এদিন বলেন, ”মমতা দিদি আমাকে বলেছেন উনি ৬৪ হাজার স্টেপ হাঁটেন। আমি আর সজ্জন ভাবছিলাম, ভাল, সপ্তাহে ৬৪ হাজার স্টেপ কিন্তু মমতা দিদি বললেন, না, দিনে ৬৪ হাজার স্টেপ।” এরপরেই তিনি বলেন, ”বাংলার এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। ইন্ডিয়া এখন গোটা বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। রিলায়েন্স বাংলার উন্নতিতে কাজ চালিয়ে যাবে। ৪৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আগামী কয়েক বছরে আরও বিনিয়োগ করা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ করা হবে। ফাইভ জি পরিষেবা এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলার প্রত্যেক বাড়িতে এয়ার ফাইবার এবং জিও ফাইবার পরিষেবা দেখা যাবে। এই পরিষেবা কর্মক্ষেত্রে নতুন দিশারী হবে। আমরা বাংলার বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানাই জিওকে গ্রহণ করার জন্য। জিও মার্টের মতো পরিষেবা বাংলায় উন্নতি করেছে। এখনকার দিনে জলবায়ু ভারসাম্য ঠিক করা উচিত। রিলায়েন্স এখন দেশের সবথেকে বড় বায়ো এনার্জি পরিষেবা দিচ্ছে। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন কালীঘাট মন্দির নতুন ভাবে মেরামত করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। এই প্রজেক্টের কাজ আমাদের দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। রিলায়েন্সের অনেক ভাল প্রযুক্তিবিদ বাংলাতে কাজ করছে।’’

মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষ আপনাকে বেছে নিয়েছে নেতৃত্ব দেওয়া জন্য। অটল বিহারি বাজপেয়ী আপনাকে অগ্নিকন্যা বলেন। আপনি এখন সোনার বাংলা গড়ে তুলেছেন। বাংলার জিডিপি জাতীয় স্তরে অনেকটাই বেশি। বাংলা দেশের পূর্ব প্রান্তে নতুন বিনিয়োগের দরজা খুলে দিয়েছে। বাংলা এখন এগিয়ে যাওয়ার দিশারি হয়ে গিয়েছে। বাংলার একক দক্ষতায় পূর্ব ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে। রিলায়েন্স ৫জি গ্রামীণ বাংলায় কিছুদিনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে। ৯৮.৮% এই রাজ্যে টেলিকম গ্রহণ করেছে। এমএসএমই ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমে সংযুক্ত হচ্ছে। জিও স্টোরের সংখ্যা বাড়ছে।’’ শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ভাঁটা কাটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই বাংলা যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সেই কথাই আরেকবার আজ স্পষ্ট করে দিলেন মুকেশ আম্বানি।

Latest article