পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির গুণ্ডামি নির্লজ্জ ভোটলুঠ দিল্লির নির্বাচনে

Must read

প্রতিবেদন: দেশের (Delhi Assembly Election) রাজধানীতে চরম অবমাননা গণতন্ত্রের। আম আদমি পার্টিকে রুখতে বিজেপি বুধবার নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করল অমিত শাহর পুলিশকে। রীতিমতো তাণ্ডব চালালো গেরুয়া গুণ্ডারা। প্রতিরোধ করতে গিয়ে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন আপ কর্মী-সমর্থকরা। বেশ কয়েকটি জায়গায় হল দফা দফায় সংঘর্ষ। এসব সত্ত্বেও দিল্লির (Delhi Assembly Election) ৭০টি আসনে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গড় ভোট পড়েছে ৫৭.৭০%। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে ৬৩.৮%। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে দক্ষিণপূর্ব দিল্লিতে ৫৭.৭%। ভোট শেষ হওয়ার পড়ে যথারীতি বুথফেরত সমীক্ষার নামে সুপরিকল্পিত বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিজেপি।

দফায় দফায় সংঘর্ষ
দিল্লির সীলমপুর, চিরাগ এবং জংপুরাতে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল বেশ কিছুটা। বেলা গড়ানোর সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। আপ এবং বিজেপি সমর্থকদের বেশ কয়েক জায়গায় হাতাহাতি করতে দেখা যায়। আশ্চর্যজনকভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। কোথাও নীরব দর্শকের ভূমিকায়, কোথাও বা আবার নির্লজ্জভাবে বিজেপির পক্ষ নিয়ে চড়াও হয় আপ সমর্থকদের উপরে। সকাল থেকে আপের কর্মীদের লাগাতার হেনস্থারও অভিযোগ আসে। আপের অভিযোগ , টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার চেষ্টায় মরিয়া বিজেপি। পুলিশের মদতে ভোটলুঠেও বেপরোয়া গেরুয়া বাহিনী। বাইরে থেকে লোকও এনেছে তারা। ভুয়ো ভোটারের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সকালেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিলামপুর বিধানসভা এলাকা। শুরু হয় হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কি। সঙ্ঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কংগ্রেসও। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে ভোট।
এদিকে আপনেতা দীনেশ মোহানিয়ার বিরুদ্ধে এদিন থানায় এফ আই আর করেন এক মহিলা। সঙ্গম বিহারের ওই আপ বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভোটের কয়েকঘন্টা আগে প্রচারে বেরিয়ে অসঙ্গত আচরণ করেছেন তিনি। আপ অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, সবই বিজেপির সাজানো নাটক।
দিল্লির মসনদ থেকে আম আদমি পার্টিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বুধবার সকাল থেকেই দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে ভোটারদের বাধা দিয়েছে বিজেপির গুন্ডারা, তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ, এই অভিযোগ তুলেছেন আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ এবং সাংসদ সঞ্জয় সিং৷ ভোটের আগের দিন রাত থেকেই দিল্লির বিভিন্ন আসনে টাকা বিলি করে ভোটারদের প্রভাবিত করেছেন বিজেপির নেতা কর্মীরা, দাবি জানিয়েছে আম আদমি পার্টি৷ দিল্লির জনতাকে বিজেপির এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়ে দলে দলে ভোটদানের আবেদনও জানিয়েছেন সৌরভ ভরদ্বাজ এবং সঞ্জয় সিং দুজনেই৷

আরও পড়ুন- দেশে বকেয়া করের ৯৭.৩৫% আর আদায় করা সম্ভব নয়!

ব্যারিকেড দিয়ে আটকানো চেষ্টা
তাত্পওর্যপূর্ণ হল, কিভাবে দিল্লি পুলিশ বিজেপির চক্রান্তে সামিল হয়েছে তার বিবরণ দিতে গিয়ে আপ নেতা এবং দিল্লির ভোটে প্রার্থী সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, সকাল থেকেই দিল্লির নানা কেন্দ্র থেকে ভোটারদের অভিযোগ আসছে, তাদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে৷ দিল্লি পুলিশের কর্মীরাই বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ভোটাররা৷ ভোটাররা বুথের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করা মাত্রই তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রাখা হচ্ছে৷ লম্বা লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়েও তারা ভোট দিতে পারছেন না৷ একই সুরে বিজেপিকে তীব্র নিশানা করেছেন আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং৷ তাঁর অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকেই দিল্লির পাড়ায় পাড়ায় ভোটারদের প্রভাবিত করেছে বিজেপির নেতা-কর্মীরা৷ শুধু কথায় কাজ না হওয়ায় এরা প্রচুর টাকা বিলি করেছে এমনকি বিজেপির পক্ষে ভোট না দিলে পরিণাম ভালো হবে না বলেও হুমকি দিয়েছে৷

নজর তিন কেন্দ্রে
দিল্লির ৭০টি আসনে ভোটগ্রহণ হয় এদিন। আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল মূলত ৩টি বিধানসভা ক্ষেত্র। নয়াদিল্লি, কালকাজি এবং জঙ্গপুরা। এই ৩ কেন্দ্রে আপ প্রতীকে লড়াই করছেন যথাক্রমে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অতিশি এবং মণীশ সিসোদিয়া। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার, প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। সপরিবারে ভোট দেন আপ সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আসেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশিও।

Latest article