প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার চাকরি দিতে চাইলেও সিপিএমের আইনজীবী-নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও তাঁর চেলা-চামুণ্ডাদের কলকাঠিতে তা আটকে যাচ্ছে। চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো ছিনিমিনি খেলছেন বিকাশেরা। একদিকে মুখে নীতিজ্ঞানের কথা বলছেন। ভুল বুঝিয়ে মামলায় মোটা টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। আবার একইসঙ্গে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ আটকে দিচ্ছেন মামলাবাজি করে। আর এ-সবের জাঁতাকলে পড়ে হয়ে-যাওয়া চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রার্থীরা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুক্রবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। রাজ্য সদর্থক ভূমিকা নিলেও, শুধুমাত্র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বাধায় কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষায় কাটল না নিয়োগ-জট। ২০১৬ সালের এসএলএসটি-র মাধ্যশমে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের প্যানেল প্রস্তুত হয়েছিল। অধিকাংশ চাকরিপ্রার্থী নিয়োগপত্রও পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র কয়েকজন অযোগ্য প্রার্থীর করা নতুন মামলায় আটকে রয়েছে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়োগের বিষয়ে রাজ্য সরকার শূন্যপদও তৈরি করেছিল। পর্ষদও হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে যে, এই প্যানেল বৈধ। কিন্তু নিয়োগ পাওয়া যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন বাম নেতা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য ও তাঁর জুনিয়র সুদীপ্ত দাশগুপ্তেরা। শুক্রবারও বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে তাঁদের দাবি ছিল, মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। শীর্ষ আদালতে শেষ না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের এই মামলার শুনানিতে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। এই দাবির কোনও যুক্তি নেই। রাজ্যের তরফে এই জট কাটাতে এদিন সদর্থক ভূমিকা নেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তাঁর বক্তব্য, হলফনামা রয়েছে। শীর্ষ আদালতের সঙ্গে এই মামলার কোনও সম্পর্ক নেই। একটা মেমো নম্বর ছাড়া এর সঙ্গে কোনও যোগ নেই। শীর্ষ আদালতে ২৫ জন মামলা করেছেন। তাঁদের চাকরির পদ ফাঁকা রাখবে সরকার। এই মামলার ২৫ জন মামলাকারীর জন্য ১৬০০ শূন্যপদে নিয়োগ আটকে রয়েছে। পদ শূন্য রেখে বাকিদের নিয়োগ করার অনুমতি দিক আদালত। স্কুলগুলির সমস্যা হচ্ছে। নিয়োগপত্র পেয়েও আইনি জটে আটকে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী, বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য, আশিসকুমার চৌধুরীরাও জানান, শুধুমাত্র ২৫ জনের জন্য যাঁদের চাকরি আটকে রয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই যোগ্য। শীর্ষ আদালতের ওই মামলার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। শুধুমাত্র একটা মেমো নম্বর কমন থাকার কারণে এই জটিলতা। এতগুলো যোগ্য প্রার্থীর চাকরি আটকে রয়েছে।
আরও পড়ুন- ৩ পাক সেনা-সহ ৭ জঙ্গি খতম, বড় সাফল্য ভারতীয় সেনার
বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, সকলেই শিক্ষক হিসাবে কাজ করার জন্য নিয়োগপত্র চাইছেন। কিন্তু কোথায় নিয়োগ হবে? জায়গা কোথায়? রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল তার যথাযথ ব্যাখ্যা দেন। এদিন আদালতে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় খুশি যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকারকে ধন্যবাদ। এজিকে ধন্যবাদ। তাঁরা যথেষ্ট করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে ১০ তারিখে মামলা আছে। এখন রায়ের অপেক্ষা। তাঁরা আরও বলেন, অযোগ্য প্রার্থীদের হয় মামলা করে বার বার বিকাশ ভট্টাচার্য এই নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের মামলার সঙ্গে এই মামলার একটা মেমো নম্বর ছাড়া এর সঙ্গে কোনও যোগ নেই। এর কোনও তদন্ত চলছে না।