বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: একটা সময় দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় যে যুবকের হাতের আঙুল থাকত অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের ট্রিগারে, সেই যুবক এখন প্রবীণ, তার হাতে এখন হাতুড়ি আর বাটালি, যার সাহায্যে তিনি সৃষ্টি করছেন দৃষ্টিনন্দন শিল্পকলা। দীর্ঘ ১৭ বছর দেশসেবা করে, ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পরে সৃষ্টিসুখের উল্লাসে মেতেছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ান শান্তিরাম রাভা। আলিপুরদুয়ার জেলার প্রান্তিক ব্লক কুমারগ্রামের অসম সীমানা লাগোয়া গ্রাম পূর্ব শালবাড়িতে নিজের ভিটেয় বসে একের পরে এক সুন্দর কারুশিল্প উপহার দিয়ে যাচ্ছেন প্রবীণ শান্তিরাম।
আরও পড়ুন-গ্রামীণ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এগোচ্ছে বাংলা
অঙ্কের হিসেবে বয়স ৬৩ হলেও উদ্যমে এখনও নিজেকে যুবক বলেই ভাবেন তিনি। তাই একটা সময় জম্মু-কাশ্মীরে যে সাহসিকতায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উগ্রপন্থীদের মোকাবিলা করেছেন, ঠিক সেইরকম উদ্যম নিয়ে শুরু করেছেন জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস। বাড়িতে ভাগ্নির বিয়ের আসবাব বানানোর পর একটুকরো কাঠ পড়ে ছিল। সেটা দেখে শান্তিরাম উঠিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ভাবছিলেন, কী করা যায় এটা দিয়ে। সে সময় তাঁদের বাড়ির গরুটি মাঠ থেকে চরে বাড়ি ফিরছিল। গরুটিকে দেখেই হঠাৎ মাথায় আসে যে ওই কাঠের টুকরোটি দিয়ে একটি গরু তৈরি করা যায় কি না একবার চেষ্টা করে দেখি। একে একে তাঁর হাতে হাতি, হরিণ, ঈগল পাখি, শিব মূর্তি, বাবা লোকনাথের মূর্তি যেন কাঠের টুকরোতেই প্রাণবন্ত হয়ে উঠল। এই কাজের মধ্যে দিয়ে নতুন করে পরিচিতি বাড়তে থাকল তাঁর। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও গিয়েছে তাঁর এই শিল্পকলা।