দেবর্ষি মজুমদার, শান্তিনিকেতন : কবির স্বপ্নের আশ্রমের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে। তার এক নমুনা প্রকাশ্যে এল এক আরটিআইয়ের জবাবি নথিতে। প্রমোশন সংক্রান্ত ইউজিসির ২০১০ সালে ১ জুলাইয়ের নিয়মকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একজনকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর করা হয় ২০১৪-র ১ জানুয়ারি।
আরও পড়ুন-নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মহিলাদের পাশে রাজ্য
ইউজিসি-র নিয়মে যাঁদের পিএইচডি নেই, তাঁদের ক্যাস-এর (কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিম) মাধ্যমে প্রফেসর করা যাবে না। সারা দেশেই এই নিয়ম। অথচ একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেমালুম কেন্দ্রীয় সরকারের আইন ভাঙল! ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০-র আরটিআইয়ের উত্তর থেকে জানা যাচ্ছে (পেজ ৪, চার্ট নং ১৫) ‘স্বপন ঘোষ ১৯৭৭ সালে ৩৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে বিকম পার্ট ওয়ান পাশ করেছেন।’ ওঁর প্রফেসর পদে উন্নতি কোন আইনে হয়েছে? বিশ্বভারতী জানিয়েছে, (১ পেজ ৩ নং প্রশ্ন) ‘২০১০-এর ইউজিসি আইন মোতাবেক।’ যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আরও পড়ুন-উন্নয়নের কাজে শিক্ষকরা
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে ভারত সরকার প্রকাশিত গেজেটের ৭৮৮৯ নং পৃষ্ঠায় বিশ্বভারতী উল্লিখিত ইউজিসি রেগুলেশেনের ৪.৬.৮ ধারায় পরিষ্কার লেখা রয়েছে, প্রফেসরপদে উন্নতির আবেদনের জন্য ইউজিসি নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অন্যান্য যোগ্যতা থাকলেও পিএইচডি না থাকলে কোনও শিক্ষককেই প্রফেসর করা যাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষাবিদ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন দুর্নীতির সম্বন্ধে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।
আরও পড়ুন-এএসআইয়ের দেহ উদ্ধার
বিশ্বভারতীর আইনে প্রফেসর ছাড়া কেউ ভবনের অধ্যক্ষ হতে পারেন না। স্বপন ঘোষকে বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যক্ষের পদে একাধিকবার বসানো হয়েছে। এমনকী কর্মসমিতির সদস্যও করা হয়েছে। প্রফেসরপদে থাকায় ভবনের অধ্যক্ষ হতে পেরেছেন এবং কাউন্সিল সদস্যও। বেআইনে প্রফেসর হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন। সম্প্রতি তিন ছাত্রকে বহিষ্কার করার মতো বেআইনি সিদ্ধান্তের নেপথ্যেও ছিলেন তিনি। যা পরে হাইকোর্ট বাতিল করে দিয়েছে।