সংবাদদাতা, শ্রীরামপুর: সম্পূর্ণ জনগণের উদ্যোগে গড়ে ওঠা শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালেও এবার শুরু হল লেজার সার্জারি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে যন্ত্রণাবিহীন ও রক্তপাতহীন ভাবে ফিসার, ফিসচুলা ও হেমারয়েড-সহ মলদ্বারের বিভিন্ন অপারেশন করা সম্ভব হবে। এই ধরনের অপারেশনে সময়ও লাগবে অনেক কম। ফলে রোগীকে বেশিদিন হাসপাতালে থাকতে হবে না। ফলে কমবে খরচও। লাভবান হবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনজন রোগী মানসী ধাড়া (৪৫), মামনি মাঝি (৪১) ও পল্লব কুণ্ডুর (৫৮) অপারেশন হয়। শহরের নামীদামি কর্পোরেট হাসপাতালগুলিতে বিপুল খরচে এই অপারেশন হলেও, গ্রামীণ তথা পঞ্চায়েত এলাকায় সামান্য খরচে এই ধরনের অপারেশন এই প্রথম। এক রোগীর কথায়, লেজার সার্জারির জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতাল লক্ষাধিক টাকা দাবি করে। কিন্তু শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে মাত্র এগারো হাজার টাকাতেই ওই অপারেশন করা হয়। তিনজন রোগীই সুস্থ আছেন, রবিবার তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। চন্দননগরের বাসিন্দা পল্লব কুণ্ডু জানান, আমি খুব খুশি। ভাবিনি এত কম সময়ে, এত কম খরচে অপারেশন হবে। ১৯৯৮ সাল থেকে শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি শুরু হয়। যাতে পেটে তিনটি মাত্র ছিদ্র করে গলব্লাডার, অ্যাপেনডিসাইটিস ও হার্ণিয়ার মতো জটিল অপারেশন বিনা রক্তপাতেই করা সম্ভব হয়। সি আর্ম যন্ত্রের সাহায্যে অর্থোপেডিক অপারেশনও দক্ষতার সঙ্গে করা হয়।
আরও পড়ুন-হাওড়ায় মহিলা তৃণমূলের ভিড় ঠাসা কর্মসূচিতে চন্দ্রিমা
শ্রমজীবী হাসপাতালের সহ-সভাপতি ফণীগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, গ্রামীণ মানুষের কাছে উন্নত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। শ্রমজীবী হাসপাতালের সহ-সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, উন্নত প্রযুক্তির চিকিৎসা শ্রমজীবী মানুষের জন্যে জরুরি, তাতে একদিকে যেমন হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় কমবে, তেমনি কম দিন লাগায় খুব দ্রুত নিজের কাজে ফিরতে পারবেন রোগীরা। স্বাস্থ্যকর্মী সব্যসাচী রায় বলেন, এই অপারেশন রোগী ও চিকিৎসক উভয়ের জন্যই সুবিধাজনক। রক্তক্ষরণ হয় না, সময় অনেক কম লাগে। আশা করা যায় শ্রমজীবী হাসপাতালের এই প্রকল্পও সফল হবে।