ঠিক চাকেই ঢিল মুখ্যমন্ত্রীর, হদিশ মিলল সমবায়ের ৫৮৩ কোটি কালো টাকার

Must read

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নোট বন্দি করেও উদ্ধার করতে পারেননি কালো টাকা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতেনাতে তা করে দেখালেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সমবায়ের অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত বিপুল অংকের টাকার হদিশ মিলল এবার।
রাজ্যে সমবায় ব্যাঙ্কের ভুয়ো অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে হিসেব-বহির্ভূত বহু টাকা। সম্প্রতি প্রশাসনিক সভা থেকে কড়া বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন সেই সব অ্যাকাউন্ট অবিলম্বে চিহ্নিত করে টাকা উদ্ধারের। তারপরই তৎপর হয়ে ওঠে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতে নামে-বেনামে কত ‘ডরম্যান্ট’ অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং সেই সব অ্যাকাউন্টে কত টাকা পড়ে আছে, তা জানতে উদ্যোগী হন তাঁরা। জানতে পারেন, সমবায় ব্যাঙ্কগুলির ‘ডরম্যান্ট’ অ্যাকাউন্টে ‘গচ্ছিত’ টাকার অঙ্কটা প্রায় ৫৮৩ কোটি। তার মধ্যে ডিপোজিট অ্যাকাউন্টের অনুমতি রয়েছে, এমন কৃষি সমবায় সমিতির শ খাতাতেই রয়েছে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের পক্ষে কি এত টাকা বছরের পর বছর ফেলে রাখা সম্ভব? নাকি কালো টাকা বেনামে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ফেলে রাখা হয়েছে? রাজনীতির কারবারিরা এই ফর্মুলাতেই বিপুল গচ্ছিত রাখেন। এক্ষেত্রেও তেমনটা হয়নি তো? যদি সেটাই হয়ে থাকে, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঠিক চাকেই ঢিল ছুড়েছেন। তিনি প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে সাফ জানিয়েছিলেন, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস নয়। এই বার্তা তিনি বারবার পুলিস-প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। তার ফলেই ৫৮৩ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে।

আরও পড়ুন- গদ্দারের মিথ্যাচারকে ধিক্কার, স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনলেন পরিষদীয় মন্ত্রী

৩ জানুয়ারি সব সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ‘রেজিস্ট্রার অব কো-অপারেটিভ সোসাইটিস’-এর স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠায় সমবায় ডিরেক্টরেট। সেই চিঠিতে দীর্ঘদিন লেনদেন না হওয়া অ্যাকাউন্টগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়। জানতে যাওয়া হয় কেওয়াইসি সম্পর্কিত তথ্যও। এরপর রিপোর্টে জানানো হয়, প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিতে কেওয়াইসি জমা পড়েছে ৭৬.৫ শতাংশের। সর্বাধিক ৯৬ শতাংশ কেওয়াইসি হয়েছে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক এবং জেলা সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলিতে। আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলিতে পরিসংখ্যানটা ৭২.৪৮ শতাংশ। আর, রাজ্য এবং প্রাইমারি স্তরের সমবায় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলিতে কেওয়াইসি জমা হয়েছে ৬১.৮২ শতাংশের। কোনও ক্ষেত্রেই ১০০ শতাংশ কেওয়াইসি নেই। এরপরই চলতি অর্থবর্ষের মধ্যেই গ্রাহকদের কেওয়াইসি সংক্রান্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক, ডিস্ট্রিক্ট সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক এবং আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলির ‘ডরম্যান্ট’ অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকা টাকা আরবিআইয়ের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা। তবে, পরবর্তী পদক্ষেপের আগে অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য আর এক দফা যাচাই করে দেখা হবে।

Latest article