প্রতিবেদন : কলকাতা লিগ (Kolkata League) নিয়ে ন্যায়বিচারের দাবিতে আইএফএ-র বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হল ডায়মন্ড হারবার এফসি। আইএফএ-র ইতিহাসে যা নজিরবিহীন। ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবের তরফে আলিপুরের নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ক্লাবের হয়ে সচিব মানস ভট্টাচার্য মামলাটি করেছেন। পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবারের তরফে আইএফএ-র ১১ জন পদাধিকারীকে চিঠি পাঠিয়ে ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডানের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচ নতুন সূচিতে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। চিঠি পেয়েই বৃহস্পতিবার লিগ সাব কমিটির সভা ডাকল আইএফএ। সেখানে ডায়মন্ড হারবার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
ডায়মন্ড হারবার এফসি-র সচিব মানস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা ন্যায়বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। একটা দলকে সব সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কোনও কথাই শোনা হয়নি। আগে ঠিক ছিল, সন্তোষ ট্রফি শেষে দিন দশেকের মধ্যেই ডায়মন্ড হারবার-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ দেওয়া হবে। আইএফএ তা করেনি। এরপরেও আমরা বলেছিলাম, ১০-১১ ফেব্রুয়ারি খেলা দেওয়ার জন্য। সেটা না করে ওরা ১৩ ফেব্রুয়ারি ম্যাচ দিল। আইএফএ সুবিধা দেখল ইস্টবেঙ্গলের।’’
আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলছেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারের চিঠি পেয়েছি। আমরা ২০ ফেব্রুয়ারি লিগ সাব কমিটির বৈঠক ডেকেছি। ওদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। তবে আদালতে ওরা যেতেই পারে। আদালতে গিয়ে লিগ চ্যাম্পিয়নের সিদ্ধান্ত আটকানো ছাড়া আর কিছুই করা যাবে না।’’
আরও পড়ুন-রাজ্য সঙ্গীতে মূল কথাই অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ নবান্নের
আইএফএ-র বিরুদ্ধে অভিযোগ, সম্পূর্ণ একতরফাভাবে ডায়মন্ড হারবারের ম্যাচ ফেলা হয়েছে সংস্থার পদাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই। যা নিয়ে আইএফএ-র অন্দরেই চরম অসন্তোষ। সংস্থার অন্যতম দুই সহ-সভাপতি সৌরভ পাল ও স্বরূপ বিশ্বাস আগেই আইএফএ-র অন্যান্য পদাধিকারীদের চিঠি দিয়ে জানান, গঠনতন্ত্র না মেনেই কীভাবে ডায়মন্ড হারবারের ম্যাচ ফেলা হয়েছে। আইএফএ-কে বেকায়দায় ফেলেছে লিগের স্পনসর শ্রাচীর চিঠি। লিগের টিভি সম্প্রচার সংস্থা জি আবার শ্রাচীকে আইনি নোটিশ ধরিয়েছে। শ্রাচী সোমবার আইএফএ-কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, তাদের দেড় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই লিগ আয়োজন করার জন্য। এই ক্ষতিপূরণ চেয়ে তারাও আদালতে যেতে চাইছে।
আইএফএ-র অন্যতম সহ-সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলছেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ অন্যায় হয়েছে। আইএফএ একতরফাভাবে সব কিছু করছে। ডায়মন্ড হারবারের বিরুদ্ধে দুটো শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে কোনও ফলাফল হয়নি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শৃঙ্খলাভঙ্গের ইস্যুতে কোনও সিদ্ধান্ত না হলে সংশ্লিষ্ট দলের অন্য ম্যাচ দেওয়া যায় না। আইএফএ-তে কোনও কিছুতেই স্বচ্ছতা নেই। বেটিং, ফিক্সিং আটকাতে কোনও পদক্ষেপ নেই। অপেশাদারিত্বের কারণে স্পনসররা মুখ ফেরাচ্ছে। শ্রাচী স্পোর্টস দেড় কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে চিঠি দিয়েছে আইএফএ-কে।’’ বিস্ফোরক আর এক সহ-সভাপতি সৌরভ পালের বক্তব্য, ‘‘এত অভিযোগ, অনিয়ম আইএফএ-র ইতিহাসে কখনও দেখা যায়নি। পঞ্চম ডিভিশন থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশন পর্যন্ত শুধু অনিয়মের অভিযোগ। গত জুনে এক কোটি টাকা দিয়ে যুবভারতীতে কুয়েত ম্যাচ আনা হয় কোনও টেন্ডার ছাড়াই।’’