প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জঙ্গি যোগের প্রমাণ দিন নয়তো, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর সম্পর্কে এই কুৎসিত ও অবমাননাকর কথা বলার জন্য আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে হাঁটু গেড়ে ক্ষমা চান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই মিথ্যাচার বরদাস্ত করা হবে না, বুধবার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী দলনেতা যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে জঙ্গি যোগ আছে বলে মিথ্যাচার ও নোংরা রাজনীতি করছেন তৃণমূল তার তীব্র বিরোধিতা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালিমালিপ্ত করার জন্য বিরোধী দলনেতা এই জঙ্গি শব্দ প্রয়োগ করেছেন। দলের তরফে পরিষ্কার শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র প্রচারের জন্য দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে মিথ্যাচার করবেন এটা মেনে নেওয়া যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি দাঁড়াতে পারছে না, মোকাবিলা করতে পারছে না তৃণমূলের সঙ্গে, সে কারণে যা পারে বলে দিচ্ছে!
তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জীর্ণ। বিরোধী দলনেতাকে ওদের দলের দিলীপ ঘোষ দেখতে পারে না। সেই কারণে মানসিকভাবে অবসাদে প্রচারে থাকার জন্য এত বড় উসকানি, মিথ্যাচার করছে। একের পর এক সিপিএমের গুন্ডা হার্মাদের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে জীবন বাজি রেখে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করেছেন। দীর্ঘ আন্দোলন করেছেন। মানুষের উন্নয়নে বাংলাকে মডেল করেছেন।
আরও পড়ুন-ট্যাংরায় তিন মৃত্যুর মোটিভ দেখে রহস্য বাড়ছে, শুরু তদন্ত
বুধবার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে গোটা বিজেপি দল। তাকে সহ্য করতে পারে না তার দলের লোক। এরপরই হুংকার দিয়ে কুণাল বলেন, ভবানীপুরের দিকে যদি কেউ চোখ তুলে তাকায় চোখ ঝলসে যাবে। ভবানীপুরের চোখধাঁধানো আলো সহ্য হবে না বিরোধী দলনেতার। ভবানীপুরে বিরোধী দলনেতা লড়তে এলে জামানত জব্দ করে বাড়ি পাঠাব। শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ করে কুণাল বলেন, অন্য কোথাও লড়বেন না। ভবানীপুরে লড়বেন। তৃণমূল চ্যালেঞ্জ করে বলছে নন্দীগ্রামে দাঁড়ালেও হারাব। হিম্মত থাকলে চ্যলেঞ্জ গ্রহণ করুন। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর থেকে জিতেই চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রাম থেকে তৃণমূল বিধায়ক হবে। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় থাকবেন। বিরোধী দলনেতার পদ পাওয়ার জন্য যে আসন দরকার পরিষদীয় রাজনীতিতে বিজেপি এই পদটাই পাবে না। বিরোধী দলনেতা পদটাই থাকবে না। কারণ অতগুলো আসনই পাবে না বিজেপি। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে অপমান করার চেষ্টা— এর জবাব দেবে বাংলার মানুষ।
গদ্দার শুভেন্দুকে ঝামা ঘষে দিয়ে তৃণমূল আজ মনে করিয়ে দিয়েছে, কী পাননি শুভেন্দু? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের কাছ থেকে? দুহাত উপুড় করে নেতাকে সব দিয়েছিলেন। বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি, কাউন্সিলর, এমএলএ, মন্ত্রী-সাংসদ। সেইসঙ্গে দলের ক্ষমতা, দলের পদ, দলের দায়িত্ব। বিভিন্ন সাংগঠনিক পদ, প্রশাসনিক পদ সমস্ত কিছুর ক্ষমতা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। তারপরেও নিজের স্বার্থে দলবদল করেছেন। সেই মহিলাকে জঙ্গিযোগ বলতে বিবেকে লাগছে না? যে ভদ্রমহিলা উজাড় করে তাকে রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা দিয়েছে তাকে এ ধরনের খারাপ কথা বলতে তার বিবেকে লাগল না? এতটা অমানবিক! তৃণমুল কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করছে।
আরও পড়ুন-কেরলের মাঠে ফুটবল ম্যাচ শুরুর আগে বাজি বিস্ফোরণে জখম কমপক্ষে ৩০
এর আগে লোডশেডিং করে, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে, ফলাফল ম্যানিপুলেট করে কারসাজি করে জিতেছে! মিথ্যা মামলায় তৃণমূল কর্মীদের জর্জরিত করা হয়েছে, হচ্ছে! মনে রাখুন এভাবে নন্দীগ্রামকে ধরে রাখা যাবে না। ২০২৬-এর তৃণমূল সরকার গড়বে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন, কিন্তু বিরোধী দলনেতা পদটাই উঠে যাবে।