প্রতিবেদন : মহাকুম্ভ এখন মৃত্যুকুম্ভ— বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই মহাকুম্ভ আয়োজনে যোগী সরকারের ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা করলেন শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। শুধু তিনি নন, এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব-সহ তাবড় বিরোধী নেতারা। অখিলেশ সাফ জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ ঠিক। অনেক রাজ্যের মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে বাংলার মানুষও আছে। এর জবাবদিহি করতে হবে যোগী সরকারকে। এদিকে তৃণমূলের দাবি, মহাকুম্ভের আয়োজনে তাঁর সরকারের অপদার্থতা, মিথ্যাচার এবং অসত্য মন্তব্যের দায় মাথায় নিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে যোগীকে।
আরও পড়ুন-শীতের শেষে অকাল বৃষ্টি
আসলে মৃত্যুমিছিল ঢাকতে, নিজেদের ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দিতে রাজনীতি করছে বিজেপি। মিথ্যার বেসাতি করছে। নিজেদের চরম ব্যর্থতা থেকে নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু এত মৃত্যুর দায় কে নেবে? প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে সবচেয়ে আগে ক্ষমা চাওয়া উচিত যোগী আদিত্যনাথের। বুধবার এই ভাষাতেই যোগী এবং তাঁর দলকে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল। এদিন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ স্পষ্ট জানিয়েছেন, হিন্দুধর্মের পবিত্র মহাকুম্ভ নিয়ে মোটেই কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও অবমাননাও করেননি তিনি। নেত্রী শুধুমাত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন মহাকুম্ভ আয়োজনের ক্ষেত্রে ভয়াবহ অব্যবস্থার দিকটা। শঙ্করাচার্যও তো একই কথা বলেছেন। তিনি কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই বলেছেন। গঙ্গাসাগর মেলার নিখুঁত আয়োজনের কথা তুলে ধরে তৃণমূল মনে করিয়ে দিয়েছে, কুম্ভের থেকে অনেক বেশি বিপজ্জনক হওয়া সত্ত্বেও গঙ্গাসাগর সফল করে দেখিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাড়ে ৩ কিমি জলপথ পার হতে হয়। কিন্তু কোথাও কোনও অব্যবস্থার প্রশ্ন নেই।
আরও পড়ুন-নদী কমিশন : নির্বিকার কেন্দ্র ক্ষুব্ধ রাজ্য
লক্ষণীয়, কুম্ভমেলার ব্যবস্থাপনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী মন্তব্য করেছেন, ৩০০ কিমি ট্রাফিক জ্যাম! এটা বিশৃঙ্খলা না হলে কোনটা বিশৃঙ্খলা? মালপত্র নিয়ে ২৫-৩০ কিমি হাঁটতে হচ্ছে লোকেদের। যে জলে স্নান করছেন, তা অপরিষ্কার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্নানেরই উপযুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও কোটি কোটি মানুষকে স্নান করানো হচ্ছে সেখানে। ১২ বছর আগেই তো জানা ছিল মহাকুম্ভের কথা। তা হলে সময় থাকতে প্রস্তুতি নেওয়া হল না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন শঙ্করাচার্য।