প্রতিবেদন: বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা হেঁটে যাওয়ার পথ। ইউরোপ, আফ্রিকা আর এশিয়ার মধ্যে দিয়ে প্রকৃতি আর মানুষের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম এই রাস্তা। এই রাস্তা ধরে আপনি দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে রাশিয়ার মাগাদানে আসতে পারবেন। এমনকী পুরোটাই হেঁটে আসতে পারবেন। বিমান, ট্রেন, বাস কিংবা লঞ্চ, কোনও যানবাহনেই আপনাকে উঠতে হবে না। এই রাস্তা ২২ হাজার ৩৮৭ কিলোমিটার লম্বা। প্রতিদিন যদি ৮ ঘণ্টা করে হাঁটেন তবে ৫৮৭ দিন লাগবে আপনার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রাশিয়া পৌঁছতে। ১৯৪ দিন হাঁটা লাগবে যদি কোনও বিরতি ছাড়া হেঁটে চলেন।
এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হেঁটে যাওয়ার রাস্তা, যেখানে কোনও বাধা ছাড়াই পায়ে হেঁটে রাশিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রাশিয়া যাওয়া সম্ভব। যাত্রাপথে পড়বে অন্তত ১৭টি দেশ। ছ’টি টাইম জোন। যিনি এই রাস্তা ধরে হাঁটবেন, তিনি কয়েকটি ঋতু পরিবর্তনও দেখতে পাবেন। যাত্রাপথে পাবেন বৈচিত্রপূর্ণ আবহাওয়া। এই যাত্রাপথই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হেঁটে চলার রাস্তা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মাউন্ট এভারেস্টে ১৩ বার ওঠানামা করলে এই দীর্ঘতম হেঁটে চলা পথের সমান হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে হেঁটে হেঁটে যেতে হবে রাশিয়ার মাগাদানে।
আরও পড়ুন- ট্রাম্প-জেলেনস্কি বাকযুদ্ধ
দীর্ঘ এই যাত্রাপথে পড়বে নানা দেশ। বতসোয়ানা, জিম্বাবোয়ে, জাম্বিয়া, তানজানিয়া, উগান্ডা, দক্ষিণ সুদান, সুদান, জর্জিয়া, মিশর, জর্ডন, সিরিয়া, তুরস্ক, রোমানিয়া আর বেলারুশ। দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রাম লা আগুলাস থেকে শুরু হবে হাঁটা। হাঁটতে হবে কয়েকটি বিপজ্জনক স্থান দিয়েও। এরপর যেতে হবে জিম্বাবোয়ে, যে দেশ বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত। এই যাত্রা সত্যিই চমকপ্রদ এবং চ্যালেঞ্জিং।
চলার পথে পড়বে মোজাম্বিক আর জাম্বিয়া। হেঁটে যাবেন উগান্ডার ন্যাশনাল পার্কের সামনে দিয়ে। দক্ষিণ সুদানে প্রবেশের পর ভয়ই লাগবে। কারণ এই দেশটি চুরি-ডাকাতির জন্য কুখ্যাত। এরপর সুদানে এসে পাড়ি দিতে হবে সাহারা মরুভূমির কিছু অংশ। সুদান থেকে মিশরে যাওয়ার ভাল রাস্তা নেই। মিল থেকে জর্ডনে ঢুকতে হবে। এরপর ইজরায়েল এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া। সিরিয়া থেকে হেঁটে যেতে হবে তুরস্কে।
আরও পড়ুন-জালিয়াতির মামলায় দু’বছরের জেল হল মহারাষ্ট্রের কৃষিমন্ত্রীর
তারপর জর্জিয়া, অবশেষে রাশিয়া। রাশিয়ায় এসে দেখতে হবে সাইবেরিয়ার বৈরি শীত। এই পথ ধরে হেঁটে পৌঁছে যাবেন রাশিয়ার শহর মাগাদানে। এখন পর্যন্ত অনেকেই অনেক লম্বা রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার রেকর্ড করেছেন কিন্তু এই রাস্তা ধরে হেঁটে যাওয়ার রেকর্ড এখনও কেউ করেননি। কারণ অনেক দেশের সরকার ব্যবস্থা স্থিতিশীল নয়, অনেক দেশে ভিসা নিয়ে জটিলতা আছে, অনেক দেশে আবার গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। অনেকেই চরম প্রাকৃতিক পরিবেশ, আবহাওয়া আর আঞ্চলিক খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। তারপরেও বৈচিত্রময় পৃথিবীর দীর্ঘতম পথ নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই চ্যালেঞ্জপ্রিয় অভিযাত্রীদের মধ্যে।