দেশপ্রিয় পার্কে প্রতিবারের মত এবারেও অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সহ রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়ক এবং বিশিষ্টরা। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের একাধিক শিল্পী। ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে নীরবতা পালন করা হয়।
এদিনের অনুষ্ঠানের শুরুতে জয় গোস্বামী কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর ‘বাংলা’ কবিতাটি পাঠ করেন। কবি শ্রীজাত প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর নতুন কবিতা পাঠ করেন। সঙ্গীত পরিবেশনা করেন ইমন চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানটির পরিচালনা করেছেন গায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। এদিন বারে বারে সকলের কণ্ঠেই উঠে এসেছে প্রয়াত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণা। শুধু তাই নয়, ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশের আত্মত্যাগের কথা আরও একবার মনে করিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রসঙ্গও সকলের বক্তব্যে উঠে এল।
আরও পড়ুন-রাজমিস্ত্রি থেকে ৩৫ লাখের গাড়ির মালিক, বিজেপি নেতার কীর্তিতে সরব দলের কর্মীরা
এদিন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীও প্রয়াত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রতুলদা চলে গেলেন। কিন্তু তাঁর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ রয়ে গেল!” তাঁর প্রয়াণের ৪৮ ঘণ্টা আগে এসএসকেএমের আইসিইউতে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওটাই আমার সঙ্গে প্রতুলদার শেষ দেখা। আমাকে দেখে চোখ খুলে তাকালেন। ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন, দিন ফুরিয়ে এসেছে। আমি বললাম সুস্থ হয়ে উঠুন। আপনাকে আবার গান গাইতে হবে। তিনিও বুঝিয়ে দিলেন আর গাইতে পারবেন না। তবু আমার ক্ষীণ আশা ছিল, উনি হয়ত সুস্থ হবেন। তারপরেই ওনার প্রেশার কমতে শুরু করে। ডাক্তার জানালেন ওনার একটা ট্রমা কাজ করছে। এটাই আমার সঙ্গে ওনার শেষ কথা। পার্থিবজগতে উনি না থাকলেও আমাদের হৃদয়ে তিনি চিরজীবন থাকবেন।”
আরও পড়ুন-অমর একুশে, ভুলিনি ভুলব না
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”ভাষা দিবস সবার, ভাষা কারোর একার কেনা নয়। অন্যান্য ভাষাকেও আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি। আমাদের মাতৃভাষা দিবসে সকলকেই শুভেচ্ছা, তারা তাদের ভাষা নিয়ে ভাল থাকুক। শুধু আমাদের মাতৃভাষা নয়, আমরা সব ভাষাকেই শ্রদ্ধা জানাই। সকলে সকলের ভাষা নিয়ে ভাল থাকুন। তবে বাংলা ভাষার গুরুত্ব চিরকাল ছিল, থাকবে। দেরিতে হলেও আমরা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছি। আমরা শান্তি চাই, সম্প্রীতি চাই।”
আরও পড়ুন-রাজ্যে আলুর বাম্পার ফলন, ৩০ শতাংশ বরাদ্দ হিমঘরগুলিতে
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে এদিন ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বস্তা বস্তা নথি দিয়ে ব্রাত্য প্রমাণ করে দিয়েছেন, বাংলা ভাষা হাজার বছরের পুরনো ভাষা।” এদিন বক্তব্যের শেষে নিজের লেখা একটি কবিতা পড়ে শোনান মুখ্যমন্ত্রী। সবশেষে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে এদিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়।