প্রতিবেদন : বাংলাবিদ্বেষী কেন্দ্রের নির্লজ্জ প্রতিহিংসা। বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা চলছেই। বঞ্চনা ও প্রতিহিংসার লজ্জার ইতিহাস তৈরি করছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প তো আছেই, এবার আঞ্চলিক উৎসবের ক্যালেন্ডারেও বাংলাকে বঞ্চনা। বাংলার কোনও উৎসবকেই স্থান দেওয়া হল না মোদি সরকারের তৈরি আঞ্চলিক উৎসবের ক্যালেন্ডারে। এমনকী ব্রাত্য রাখা হল ইউনেস্কো-স্বীকৃত দুর্গাপুজো এবং গঙ্গাসাগর মেলাকেও। আরও এক বেনজির নির্লজ্জ নিদর্শন স্থাপন করল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। দেশের প্রতিটি রাজ্যে নানা আঞ্চলিক উৎসব ও পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়। সেইসব উৎসবকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরতে একটি পোর্টাল খুলেছে পর্যটন মন্ত্রক। সেই পোর্টালে দেশের বিভিন্ন উৎসব ও মেলাকে তুলে ধরা হয়েছে সাল ও তারিখ অনুযায়ী। মূলত উদ্দেশ্য পর্যটন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সেই তালিকাতে পর্যন্ত বাংলাকে ব্রাত্য রাখা হয়েছে। বাংলার কোনও উৎসবকেই ঠাঁই দেওয়া হয়নি তালিকায়। বাংলার দুর্গাপুজো থেকে গঙ্গাসাগর মেলা—পর্যটকদের জন্য বাংলার কোনও উৎসবকেই কেন্দ্রের মনপসন্দ হয়নি। বাংলাকে আর্থিক ক্ষেত্রে ধারাবাহিক বঞ্চনার পর বাংলার সঙ্গে তারা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করল সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও! বাংলার উৎসবকেও ব্রাত্য রাখা হল।
আরও পড়ুন-চিকিৎসকদের নিয়ে আজ মুখ্যমন্ত্রীর সভা
এতদিন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি বাংলার নানা উৎসব, মেলা ও পার্বণকে তালিকায় রেখেছিল, বাংলার বহু জায়গাকে পর্যটন মানচিত্রে স্থান দিত। কিন্তু ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে বাংলা থেকে তারা ফের মুখ ফেরাল। আবার প্রতিহিংসার রাজনীতিতে তারা পরিচয় রাখল বাংলা-বিদ্বেষের। ‘উৎসব’ নামে পোর্টালে আঞ্চলিক স্তরের পার্বণগুলির যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে তুলনামূলক ক্ষুদ্র পরিসরের উৎসবগুলিকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। ভিনরাজ্যের গোলাপ উৎসবকে জায়গা দেওয়া হলেও বাংলার গঙ্গাসাগর মেলাকে স্থান দেওয়া হয়নি। গুজরাতের সোমনাথ উৎসব কিংবা উত্তর-পূর্বের ব্রহ্মপুত্র কার্নিভাল, কামাখ্যা হেরিটেজ ওয়াক থাকলেও বাংলার ইউনেস্কো স্বীকৃত দুর্গাপুজো ব্রাত্য থাকে। এই তালিকায় দেওয়ালি, নবরাত্রি, হোলির মতো উৎসব অবশ্য রাখা হয়েছে। শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসবের উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ সেই উৎসবকে জায়গা দেওয়া হয়নি ক্যালেন্ডারে। অথচ দিল্লি, গুজরাতের কোথায় কোথায় বসন্তোৎসব হয়, সেই পরিসখ্যান দেওয়া হয়েছে ক্যালেন্ডারে। আজব কাণ্ড-কারখানা কেন্দ্রের। দুর্গার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে, বিজয়া দশমীর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, দেশের কোথায় কোথায় নবরাত্রি উৎসব উদযাপিত হয়, তার তথ্যও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইউনেস্কো-স্বীকৃত বাংলার শারদোৎসবের ঠাঁই নেই। এই না হলে বাংলাবিদ্বেষী বিজেপি!