বাবার অজান্তেই ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়ের ফাঁসি! দেহ দেখতে আর্জি শাহজাদির পরিবারের

Must read

১৬দিন আগেই মেয়ের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এতদিনে জানতে পারলেন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সাবির খান। অথচ ১৯ ফেব্রুয়ারি জানা গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের (Utter Pradesh) শাহজাদি খানের(shahjadi) ফাঁসির সাজা পিছিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (UAE)। তা দেখে মেয়ের মুক্তির জন্য তোড়জোড় করেন বাবা। কিন্তু সোমবার দিল্লি হাই কোর্টে (Delhi High Court) বিদেশ মন্ত্রক জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আইন মেনে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শাহজাদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এবার মেয়ের দেহ পেতে আবেদন বাবা মায়ের।

উত্তরপ্রদেশের মুলগি গ্রামে শাহজাদির জীবন ছোট থেকে যন্ত্রণায় ঘেরা। রান্নাঘরে কাজ করতে মুখ ও শরীরের বেশ কিছুটা অংশ পুড়ে যায় ছোটবেলায়। সেনিয়েই চলছিলেন। ২০২০-র কোভিডের সময় সোশাল মিডিয়ায় আগ্রার যুবক সঙ্গে শাহজাদির আলাপ হয়। সম্পর্ক গড়ায় প্রণয়ে। উজের নামে ওই যুবক তাঁকে বিয়ে করে চিকিৎসা করানোর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেন। সুখের সংসারের আশায় বাড়ি ছাড়েন শাহজাদি। কিন্তু তারপরেই ছন্দপতন। অভিযোগ, ২০২১ সালে আগ্রায় (Agra) নিয়ে গিয়ে শাহজাদিকে নিজের আত্মীয় ফৈজ ও নাদিয়ার কাছে বিক্রি করে দেন উজের। এরপর ওই দম্পতিই তাঁকে নিয়ে আবু ধাবি যান। সেখানেই তাঁদের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন শাহজাদি।

সেখানে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছিল বছর ৩৩-এর শাহজাদির ()shahjadi জন্য। হঠাৎই মৃত্যু হয় ফৈজ ও নাদিয়ার চার মাসের শিশুর। তার দায় গিয়ে পড়ে শাহজাদির উপর। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হলে শাহজাদিকে গ্রেফতার করে আবু ধাবির পুলিশ। আদালতে শাহজাদি দাবি করেন, চিকিৎসার গাফিলতির কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। যদিও আদালত তা মানেনি। ফাঁসির সাজা দেয়। সেই থেকে ওয়াথবা জেলে বন্দি শাহজাদি।

ফাঁসির নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আগে জেল কর্তৃপক্ষ শাহজাদির শেষ ইচ্ছা জানতে চায়। তখনই পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। ১৫ তারিখ বাড়িতে ফোন করে শাহজাদি কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানতে পারেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেয়েকে ফাঁসি দেওয়া হবে। মেয়েকে বাঁচাতে সরকারের দ্বারস্থ হয় পরিবার। শাহজাদির বাবা শাবির খান কেন্দ্রীয় সরকার ও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানান।

আরও পড়ুন- ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট তৈরিতে বিহার যোগ! বড় সাফল্য কলকাতা পুলিশের

এদিকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি জানায় সে দেশের সরকার। আবুধাবিতে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় মহিলার রিভিউ পিটিশন ঘটিয়ে দেখা হচ্ছে। ভারতীয় দূতাবাসকে জানায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ‘দোষী’ উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা শেহজাদির রিভিউ পিটিশন বর্তমানে বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।

কিন্তু দিল্লি হাই কোর্টে (Delhi High Court) বিচারপতি সচিন দত্তের বেঞ্চে মামলার শুনানিতে কেন্দ্র তরফে জানানো হয়, ১৫ ফেব্রুয়ারি শাহজাদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আগামী ৫ মার্চ আবু ধাবিতে তরুণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল চেতন শর্মা জানান, ২৮ ফেব্রুয়ারি তরুণীর ফাঁসির কথা ভারতীয় দূতাবাসকে সরকারি ভাবে জানায় সে দেশের প্রশাসন। পরবর্তী প্রক্রিয়ায় পরিবারকে সাহায্য করা হবে বলেও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়।

শাহজাদির বাবা সাবিরের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। সরকারের কাছে হতভাগ্য পরিবারের আর্জি, সরকার যেন তাঁদের সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে মেয়ের শেষকৃত্যে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।

প্রশ্ন উঠছে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে গেলেও, কেন ১৯ ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির তরফে জানানো হয়েছিল শাহজাদি খানের ফাঁসির সাজা পিছিয়েছে! কেন ১২দিন পরে সেটা জানানো হল! এই সব প্রশ্ন পেরিয়ে এখন শুধু কন্যার মৃতদেহটা একবার দেখতে চায় পরিবার।

Latest article