চিত্তরঞ্জন খাঁড়া: উৎসবমুখর যুবভারতী আবারও মোহনভারতী। ১৩ দিন আগে ওড়িশাকে হারিয়ে লিগ-শিল্ড জয়ের যে উৎসব শুরু হয়েছিল তার পূর্ণতা পেল শনিবার রাতে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ২-০ গোলে জয়ে। আইএসএল লিগে শেষ ম্যাচ জিতেই শিল্ড হাতে তুললেন দিমিত্রি পেত্রাতোস, মনবীর সিংরা। ঘরের মাঠে টানা ১১ ম্যাচে জয়ের বিরল রেকর্ড। সেইসঙ্গে গোয়ার মাঠে লিগের প্রথম পর্বে হারের জবাবও। ৬১ হাজার দর্শকের গ্যালারিতে অকাল হোলি।
এদিনের ম্যাচ হল অবশ্য সাদামাটা। দ্বিতীয়ার্ধে বরিস সিংয়ের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর সংযুক্ত সময়ে গ্রেগ স্টুয়ার্টের গোলে সবুজ-মেরুন উৎসব আরও রঙিন। ২৪ ম্যাচে রেকর্ড ৫৬ পয়েন্টে লিগ শেষ করে নক আউটে পা রাখছে জোসে মোলিনার দল। শেষ বাঁশি বাজার পর গ্যালারি থেকে নেমে এসে চ্যাম্পিয়ন জার্সি পরে সতীর্থদের সঙ্গে উৎসবে শামিল হলেন কার্ড সমস্যায় এদিনের ম্যাচ না খেলা জেমি ম্যাকলারেন, শুভাশিস বসু, দীপক টাংরি, অভিষেক সূর্যবংশীরা। ফেডারেশন সভাপতি লিগ-শিল্ড তুলে দিলেন মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিসের হাতে। পদক পরিয়ে দেওয়া হয় চ্যাম্পিয়নদের। ফুটবলারদের পরিবারের সদস্যরাও উৎসবে শামিল হলেন। মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা শহরে ফিরলে তিনি নিজেই শিল্ড নিয়ে আসবেন ক্লাব তাঁবুতে।
আরও পড়ুন-বারুইপুরে নয়া বাসরুট চালু
মোলিনা ব্রিগেডকে পুষ্পবৃষ্টিতে বরণ করেন সমর্থকরা। প্রথম দল হিসেবে টানা দু’বারের লিগ-শিল্ড জয়ী দলকে ম্যাচ শুরুর আগে মাঠেই গার্ড অফ অনার দেন মানোলো মার্কুয়েজের গোয়া। গ্যালারি জুড়ে নামতে থাকে একের পর এক টিফো। কোনওটায় জাতীয় লিগ থেকে আজ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন সাত অধিনায়ককে কুর্নিশ, কোনওটায় শিল্ড জয়ী অধিনায়ক শুভাশিসকে ‘গোল্ডেন বল’ দেওয়ার দাবি। মাঠের লড়াই অবশ্য উপভোগ্য হয়নি।
গোয়া আক্রমণাত্মক মেজাজেই শুরু করেছিল। ইকের, উদান্তরা গোলের লকগেট প্রায় খুলে ফেলেছিলেন। পাল্টা গোলের সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন দিমিত্রি, লিস্টনরাও। কিন্তু সন্দেশ ঝিঙ্গান, ওডেইদের নিয়ে গড়া গোয়ার জমাট রক্ষণে বারবার আটকে গেলেন তাঁরা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে বিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছিলেন মনবীর। কিন্তু তাঁকে পাস বাড়ানোর সময় দিমিত্রি পড়ে যান। সেই সময় অস্ট্রেলীয় তারকার হাতে বল লাগায় রেফারি রাহুল গুপ্ত তাঁর সহকারীর সঙ্গে আলোচনা করে গোল বাতিল করেন।
গোয়ার সচল বাঁদিকে উদান্তকে আটকাতে দ্বিতীয়ার্ধে নড়বড়ে আশিস রাইকে তুলে দীপেন্দু বিশ্বাসকে নামান মোলিনা। তাতে গোয়ার আক্রমণের ধার কমলেও মানোলোর দলকে ডুবিয়ে দেয় বরিস সিংয়ের শিশুসুলভ ভুল। ৬২ মিনিটে লিস্টনের উদ্দেশে টম অলড্রেডের ভাসানো সেন্টারে হেড করে গোলকিপারকে পাস দিতে যান বরিস। কিন্তু গোয়ার গোলকিপার ততক্ষণে বল ধরতে ডান দিকে সরে এসেছিলেন। বরিসের হেড নিজেদের জালেই জড়িয়ে যায়। এই গোলই মনোবল ভেঙে দেয় গোয়ার। এরপর সংযুক্ত সময়ে পরিবর্ত কামিন্সের পাস থেকে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন স্টুয়ার্ট।