প্রতিবেদন : নন্দীগ্রাম দিবস কৃষক দিবসও। কৃষি-জমি রক্ষা আন্দোলনে হার্মাদ বাহিনীর হামলায় নন্দীগ্রাম ঝরে গিয়েছিল তরতাজা ১৪ প্রাণ। সেই থেকে নন্দীগ্রাম দিবস কৃষক দিবস হিসেবেও পালিত হচ্ছে। শুক্রবার বাংলার কৃষক ভাই-বোন ও তাদের পরিবারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) জানিয়ে দিলেন, কৃষির সার্বিক উন্নয়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাংলার মা-মাটি-মানুষের সরকার। একইসঙ্গে তিনি তুলে ধরলেন কৃষকদের উন্নয়নের পরিসংখ্যান ও খতিয়ান।
মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) বার্তা, আমাদের কৃষকরা সারাবছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের মুখে অন্ন তুলে দেন। আমি তাঁদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানাই। তাঁরাই আমাদের গর্ব। তাই আমাদের সীমিত ক্ষমতায় যতটা করা সম্ভব আমরা বাংলার কৃষক ভাই-বোনেদের জন্য করার চেষ্টা করি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানান, ‘কৃষকবন্ধু’ (নতুন) প্রকল্পে আমরা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি। এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দ্বিগুণ করে বছরে ১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। যাদের এক একর বা তার বেশি জমি রয়েছে তাঁরা এই টাকা পান। এক একরের কম জমি রয়েছে যাদের, তাঁরা পান ৪,০০০ টাকা। ২০১৯ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২৪০৮৪ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে কৃষকদের দুই কিস্তিতে, খরিফ আর রবি মরশুমে সরাসরি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আর্থিক সহায়তা। এর ফলে উপকৃত হয়েছেন মোট এক কোটি আট লক্ষেরও বেশি নথিভুক্ত ভাগচাষি-সহ কৃষক।
আরও পড়ুন-খড়দহে TMCP কর্মীকে কুপিয়ে খুন
এছাড়া কর্মরত কৃষকদের মৃত্যুতে মৃত্যুজনিত সহায়তাও দেয় আমাদের সরকার। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কৃষকের মৃত্যুতে এককালীন ২ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৫ হাজারেরও বেশি কৃষক পরিবারকে ২৭০৭ কোটি টাকা মৃত্যুকালীন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও পাঁচ লক্ষের বেশি আধুনিক কৃষিযন্ত্র প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভর্তুকি সহায়তার পরিমাণ ১০২৭ কোটি টাকার বেশি। কৃষকদের বিপর্যয়ে রক্ষাকবচ হিসেবে বাংলা শস্য বিমা যোজনা চালু করেছে সরকার।
প্রিমিয়ামের পুরো খরচ রাজ্য সরকার দেয়, চাষিদের যে-কোনও ফসলের বিমা বাবদ কিছুই দিতে হয় না এখন থেকে আলু ও আখ চাষিদেরও কোনও প্রিমিয়াম দিতে হয় না। সরকারি সাহায্যে ২২৭৮টি কৃষিযন্ত্রাদি ভাড়া কেন্দ্র এই রাজ্যের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে ও গ্রামের যুবকদের স্ব-রোজকারের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া ফসলের অভাবী বিক্রি রোধে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ফসল সংগ্রহের জন্য ক্রয়কেন্দ্রে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন করা হয়েছে। অন্যান্য ফসলের ন্যায্য মূল্যে ক্রয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সাল থেকে বাংলার সরকার সম্পূর্ণ নিজের অর্থে ‘বাংলা শস্যবিমা প্রকল্প’ চালু করেছে। ১১২ লক্ষ কৃষক ৩৫৬৪ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকের অধিকার আমাদের অঙ্গীকার। তাদের সার্বিক উন্নয়ন ঘটানোই আমাদের লক্ষ্য।