আজ, শনিবার দলের সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি এবং নেতাদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বৈঠকে রাজ্য কমিটি, জেলা সভাপতি, সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সব সদস্য এবং কলকাতা সহ সকল পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। সংখ্যাটা আনুমানিক সাড়ে চার হাজার। সেখান থেকেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “আমার অফিসের ও আইপ্যাকের নাম করে পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অনেক অভিযোগ এসেছে। অনেক গ্রেফতার হয়েছে। নম্বর দিচ্ছি ৮১৪২৬৮১৪২৬ , যদি কেউ বলে আইপ্যাক থেকে এসেছি এই নম্বরে ভেরিফাই করবেন।” তিনি বলেন, ”আমার অফিস থেকে গেলে আগাম বার্তা যাবে জেলা সভাপতির কাছে। না হলে তাকে এন্টারটেন করবেন না। আমার অফিসে রিপোর্ট করবেন।”
আরও পড়ুন-অমৃতসরের মন্দিরে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা, ঘটনাস্থলে ফরেনসিক
এদিন বৈঠকে ভোটার তালিকা ইস্যুতে ‘ভূত’ ধরতে দলের নেতা, কর্মীদের ‘টাস্ক’ ঠিক করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন এই কাজে ব্লক ইলেকটোরাল রোল সুপারভাইজার (BERS) নিয়োগ করবে তৃণমূল কংগ্রেস যারা সারাবছর ইলেকটোরালের কাজ করবে। ব্লক, অঞ্চল, ওয়ার্ডেও এই কাজ করা হবে। ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে আগামী ৫ দিনের মধ্যে জেলাভিত্তিক কোর কমিটি গঠন করা হবে। একইভাবে ২১ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে ব্লকে ব্লকে কোর কমিটি গঠন করা হবে। ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিলের মধ্যে অঞ্চল ও ওয়ার্ডে কোর কমিটি তৈরি করে দেওয়া হবে। ১৬ এপ্রিল থেকে ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন শুরু হবে। এই কাজ ২০২৬ সালের ভোট অবধি চলবে। বলেন, “এটা প্রশাসনিক পদ নয়, এটা হবে দলের পদ। একই ভাবে টাউন ইলেকটোরাল রোল সুপারভাইজার ও পঞ্চায়েত ইলেকটোরাল রোল সুপারভাইজার গঠন করা হবে। তাঁদের কাজ হবে ভোটার তালিকা ভালভাবে খতিয়ে দেখা। তিন মাস ভোটার তালিকার কাজ করে তারপর ছেড়ে দিলাম সেটা হবে না। বছরে চার বার ভোটার লিস্টের কাজ হয়। তাই নিয়মিত ভোটার লিস্ট নিয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের। নির্বাচন এখন ১ মাসের কাজ নয়, সারা বছর মানুষের পাশে থাকতে হয়।”
আরও পড়ুন-আরারিয়ার ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বিহার পুলিশের আরও এক এএসআই খুন
এদিন বৈঠকে স্কুটিনি পদ্ধতি জানিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্ক্রুটিনিতে একা যাবেন না। যারা সক্রিয় কর্মী তাদের চার, পাঁচ জনকে নিয়ে যাবেন। কোথাও সন্দেহজনক মনে হলে প্রশাসনের সাহায্য নিন। বুথের সক্রিয় কর্মীদের ইনভলভ করুন। খালি টিক মেরে চলে এলে হবে না। আবার বলছি এনসিপি, কংগ্রেস এই ভুল ধরতে পারেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা ধরে ফেলে এক্সপোজ করে দিয়েছেন। এই জন্যেই বলি বাংলা-গুজরাত, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ নয়। ওদের পরিকল্পনা ছিল, বাইরে থেকে এই সব ভোটার নিয়ে এসে ভোট করানোর। মহারাষ্ট্রে মাত্র ৪ মাসে ৩৯ লক্ষ ভোটার নতুন করে যুক্ত হয়েছে যার অধিকাংশই ভুতুড়ে বা ভুয়ো ভোটার।”
আরও পড়ুন-মোদিরাজ্যে খুনির স্বৈরাচার, নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ির ধাক্কায় মৃত ১, আহত ৬
এদিন দলের সকলকে সতর্ক করে অভিষেক বলেন, “আমাদের দলের একাধিক নেতা রয়েছেন, যাঁরা অন্যকে ছোট করতে গিয়ে দলের ক্ষতি করছেন। আমি নেতাজি ইন্ডোরের সভায় বলেছিলাম। এই কাজ করবেন না। দলকে বিপদে ফেলবেন না। আমি কিন্তু প্রত্যেকের গতিবিধি নজরে রেখেছি। আমি জানি, নির্বাচনের সময় কে কার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। আমি কিন্তু যা বোঝার বুঝে গিয়েছি।”