প্রতিবেদন: ক্ষমতায় ফেরার মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই যে এভাবে দেশবাসীর তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে তা বোধহয় কল্পনাও করতে পারেননি ট্রাম্প। ভাবতেও পারেননি, বদ্ধ উন্মাদের তকমা দেওয়া হবে তাঁকে। তাঁর নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন হাজার হাজার আমেরিকান। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান। ধ্বনি উঠেছে, আমেরিকার কোনও রাজা নেই। ফ্যাসিবাদ চলবে না আমেরিকায়। নিউ ইয়র্ক, কলোরাডো, হিউস্টন, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে শুরু করে ওয়াশিংটন— সব জায়গাতেই একই ছবি মার্কিন মুলুকের রাজপথে। শনিবার সকাল থেকেই মিছিল এবং জমায়েত চলছে আমেরিকার ৫০ প্রদেশের অন্তত ১২০০ এলাকায়। সবচেয়ে বড় প্রতিবাদী জমায়েত হয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটনে। হোয়াইট হাউসের খুব কাছেই ন্যাশনাল মলের জমায়েতেই তা মালুম হচ্ছে। দেশের নানা প্রান্তের প্রায় ২০,০০০ মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে জড়ো হয়েছেন ওয়াশিংটনে। শুধুমাত্র মার্কিন মুলুক নয়, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বাইরেও। লন্ডন এবং বার্লিনেও বেরিয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মিছিল। দ্বিতীয়বার মসনদে বসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘স্বৈরাচারী’ আচরণের প্রতিবাদে এটাই আমেরিকায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। কিন্তু কেন? লাখো জনতার ক্ষোভের নেপথ্যে ট্রাম্পের বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। প্রশাসনে পরপর কর্মীছাঁটাই, অভিবাসীদের অসম্মানের সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানো, মার্কিন নাগরিকত্বের নিত্যনতুন নিয়ম এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্কনীতি। এসব কিছুর প্রতিবাদেই তীব্র ক্ষোভের বিস্ফোরণ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের গর্ভপাত নীতিও একেবারেই পছন্দ নয় তরুণ এবং যুবসমাজের। ক্ষোভ ফুটে উঠেছে লস অ্যাঞ্জেলেসে এক তরুণীর হাতের প্ল্যাকার্ডে। তাতে লেখা, আমার গর্ভ থেকে বেরিয়ে যাও। বস্টনের এক প্রতিবাদী সংস্থার কথায়, আমরা এখানে জড়ো হয়েছি ফ্যাসিবাদ বন্ধ করতে। বিরোধী থেকে অভিবাসী, সকলকেই নির্বিচারে জেলে ভরে দিচ্ছেন ট্রাম্প। এই নেতাকে আমরা থামাতে চাই। কেউ বা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বন্ধুদের হারাচ্ছি আমরা। খারাপ হচ্ছে সম্পর্ক। বিভাজন তৈরি হচ্ছে দেশের মধ্যেও। আমাদের দেশ আজ আর মহান নেই।
আরও পড়ুন-দিল্লির বেসরকারি স্কুলগুলিতে লাগামহীন ফি, নিশ্চুপ ডবল ইঞ্জিন বিজেপি সরকার
দেড়শোরও বেশি সংগঠনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল চলছে আমেরিকার রাজপথে। ট্রাম্পের আচরণে বারবার ঔদ্ধত্য আর একনায়কতন্ত্রের প্রকাশ মিলছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ‘হ্যান্ডস অফ’ প্রোটেস্ট করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজনৈতিক কর্মী থেকে সাধারণ মানুষ। প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতির কথা জানার পর থেকেই তাঁরা ট্রাম্পকে ‘বদ্ধ উন্মাদ’ আখ্যা দিয়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে আসরে নেমে ট্রাম্পের হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে হোয়াইট হাউসকে।