বরুণ-নারিন ম্যাজিকে ধূলিসাৎ চেন্নাই দুর্গ

নারিন যখন দমাদম মারছেন, উইকেটের পিছনে ধোনিকে খুব হতাশ দেখাল। অল্প পুঁজি হলে শুরুতে বড় ধাক্কা দিতে হয়। এদিন হয়নি।

Must read

চেন্নাই, ১১ এপ্রিল : ম্যাচের শেষে গোটা চারেক পুরস্কার নিয়ে গেলেন সুনীল নারিন। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও। ১৩ বছর আগে এই চিপকে কেকেআর যখন প্রথম আইপিএল জিতেছিল, সেই দলে ছিলেন নারিন। এখনও আছেন। ম্যাচ জেতাচ্ছেন। কেকেআর সল্ট, স্টার্ক সবাইকে ছেড়ে দিতে রাজি, কিন্তু নারিনকে কেন নয় সেটা আরও একবার বোঝা গেল।
চেন্নাইয়ে আইপিএল মানে উৎসব। চতুর্দিকে ইয়েলো। বড় বড় কাট আউট, ব্যানার। হুইসল। এসবের অনেকটাই থালা-কেন্দ্রিক। থালা অর্থাৎ ধোনি। গ্যালারিতে যেমন ক্যাপ্টেন কুলকে নিয়ে সবার হাতে প্ল্যাকার্ড। কিন্তু পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের আর একটা খারাপ দিন গেল শুক্রবার। বোর্ডে ১০৩ রান জমা হওয়ার পর এরকমই কিছু হবে ধরে নিয়েছিলেন সিএসকে ভক্তরা। কিন্তু বল যেখানে ঘুরছে, তাতে লড়াইয়ের ছিটেফোঁটা ছাপ রাখতে পারেননি ধোনির স্পিনাররা। ৫৯ বল বাকি থাকতেই নাইটরা ম্যাচ জিতলেন ৮ উইকেটে। জিতে শুধু তিনে উঠে আসা নয়, নেট রান রেটও দাঁড়াল ০.৮০-তে।

আরও পড়ুন-ব্যাটিং নিয়ে তোপ ধোনির, রাহানে সন্তুষ্ট নারিন-বরুণে

নারিন যখন দমাদম মারছেন, উইকেটের পিছনে ধোনিকে খুব হতাশ দেখাল। অল্প পুঁজি হলে শুরুতে বড় ধাক্কা দিতে হয়। এদিন হয়নি। ৪৬-এ ডিকক (২৩) ফিরেছেন। ৮৫-তে নারিন (৪৪)। এই নারিনই ১৮ বলের ইনিংসে কেকেআরের জয় নিশ্চিত করে যান। অবাক লাগল যে উইকেটে কেকেআর স্পিনাররা টার্ন পেলেন, তাতে নুর আমেদ, অশ্বিন বল ঘোরাতে পারেননি। পারলেও হয়তো নাইটদের জয় আটকাতে পারতেন না। কিন্তু পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের হার আর একটু সম্মানজনক হত।
নারিন, বরুণ সিএসকেকে দাঁড়াতে দেননি এটা ঘটনা। কিন্তু পিছনে রাহানের মাথা ছিল। এক তো ঠিকঠাক উইকেট বুঝেছিলেন। চেন্নাই তাই অতি কষ্টে ১০৩/৯-এ যেতে পেরেছে। তার থেকেও বড় কথা, রাহানে দুই সেরা স্পিনারকে ঠিক সময়ে ব্যবহার করেছেন। বরুণ চিপককে অনেকের থেকে ভাল বোঝেন। যেহেতু তিনি চেন্নাইয়ের ছেলে। আরও বোঝা গেল টিম মিটিংয়ে দলকে চমৎকার ইনপুট দিয়েছেন। যার ফল পাওয়া গেল চেন্নাইকে এত কম রানে আটকে দিয়ে। মইনকে আগে এনে পরিস্থিতি বুঝতে চেয়েছিলেন রাহানে। নিশ্চিত হওয়ার পর নারিন ও বরুণ যা করার, করে দিয়ে গেলেন।
রাহানে বুঝেছিলেন এখানে স্পিনাররা সুবিধা পাবেন। তিনি নিজে দু’বছর সিএসকে-তে খেলেছেন। তাই দ্বিতীয় ওভারে মইন আলিকে নিয়ে এলেন। যিনি ওপেনার কনওয়েকে (১২) যখন ফেরত পাঠালেন, চেন্নাইয় ১৬। সেই রানেই ফিরতে হল রাচিন রবীন্দ্রকেও (৪)। সিএসকে যে মুশকিলে পড়ছে তার একটা আন্দাজ মিলল তখনই। রাচিন রানে ছিলেন। কিন্তু ছন্দ হারিয়েছেন। দুই ওপেনারের অফ ফর্ম পরের দিকে চাপ ফেলছে। না হলে মাথু হেডেন বলছিলেন এটা ১৮০ রানের উইকেট ছিল।
এই উইকেটে সিএসকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়েছিল। তারপর আর জয় নেই। এদিন চিপকে সর্বনিম্ন স্কোর হয়ে গেল আইপিএলে। কোচ ফ্লেমিং হোম অ্যাডভান্টেজ কোথায় বলে আওয়াজ তুলেছিলেন। সম্ভবত বল ঘোরার আশায় ছিলেন। শুক্রবার বল ঘুরল। তবে সুবিধা নিয়ে গেলেন নাইট স্পিনাররা। বরুণ বল ঘোরানোর থেকে বেশি নির্ভর করেন বৈচিত্র্যে। তাঁর অনেক বল ঘোরে না। যা বিপজ্জনক। জাদেজা (০) যেমন বল ভিতরে আসবে ধরে নিয়েছিলেন। এল না দেখে দূর থেকে খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হলেন।
চেন্নাইয়ের ইনিংসে শুধু দু’জন সামান্য রান করেছেন। বিজয় শঙ্কর (২৯) ও শিবম দুবে (৩১ নট আউট)। এমন নয় যে লাল মাটির উইকেটে বল সাংঘাতিক ঘুরেছে। বরুণ আর নারিন কিছুটা বাউন্স পেয়েছেন। তবে উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার ঘটনাই চোখে পড়ল। ঋতুরাজ টুর্নামেন্টের বাইরে যাওয়ায় ধোনি সিএসকের নেতৃত্ব দিলেন। তবে আট নম্বরে নেমে ৪ বলে ১ রান করে গিয়েছেন। ঘূর্ণি উইকেট বরুণ ও নারিনকে সিএসকে সামলাতে পারেনি। বরুণ ২২ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন। নারিন ১৩ রানে ৩ উইকেট। ২টি উইকেট নিয়েছেন হর্ষিত। এক উইকেট মইন ও বৈভবের।

Latest article