প্রতিবেদন: হিন্দুদের সম্পত্তি সংক্রান্ত বোর্ডে কোনও মুসলিমকে কি সদস্য হতে দেবে সরকার? বুধবার কেন্দ্রের কাছে সরাসরি একথা জানতে চাইল শীর্ষ আদালত। ওয়াকফ সংশোধনী আইনে যে বলা হয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য হতে পারবেন অমুসলিমরাও, তার যৌক্তিকতা কোথায়, সেটাই জানতে চায় শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ। এই প্রশ্নের মুখে পড়ে প্রায় হতবাক হয়ে যান কেন্দ্রের আইনজীবীরা। বেঞ্চের প্রশ্ন ছিল, আপনারা কি হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্টে মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করতে রাজি? শীর্ষ আদালত জানায়, এটি কেবল একতরফা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের অধিকার নির্ধারণের প্রশ্ন নয়, বরং ধর্মীয় সম্পত্তির সংরক্ষণ এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষ পদক্ষেপেরও প্রশ্ন।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে কর্মসৃষ্টি , অভিনব কাজ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের
শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আদালতের ঘোষণার মাধ্যমে ওয়াকফ হিসেবে স্বীকৃত সম্পত্তি, তা ওয়াকফ বাই ইউজার হোক বা দলিল-ভিত্তিক হোক, ডি-নোটিফাই করা উচিত নয়। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই মন্তব্য করে বলে, বহু প্রাচীন মসজিদ বা ধর্মীয় স্থাপনার দলিল থাকার সম্ভাবনা নেই, বিশেষত ১৪ থেকে ১৬ শতকের স্থাপনাগুলোর ক্ষেত্রে। বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ কি বাতিল করা হবে? এ ধরনের সম্পত্তি কীভাবে নিবন্ধিত হবে? ওয়াকফ বাই ইউজার বলতে বোঝায় এমন সম্পত্তি যা দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় ওয়াকফ হিসেবে গণ্য হয়, এমনকী দলিল না থাকলেও। নতুন সংশোধনী আইনে অবশ্য উল্লেখ করা হয়েছে, বিতর্কিত জমি ও সরকারি জমির ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না। শীর্ষ আদালত এ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলে, এমন সম্পত্তির ক্ষেত্রে দলিল চাওয়া বাস্তবসম্মত নয়। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আছেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথন।
আদালত জানিয়ে দেয়, সংশোধিত আইনে কালেক্টরের হাতে যেভাবে জমির মালিকানা নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা কার্যকর নয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে যুক্তি দেন, নতুন আইন ওয়াকফ ব্যবহার বন্ধ করার কথা বলে না, বরং সুবিধা দেওয়ার আগে যাচাইয়ের কথা বলে। কিন্তু বেঞ্চ পাল্টা প্রশ্ন তোলে, ভাড়া কোথায় যাবে? এই বিধান রাখার উদ্দেশ্য কী? উত্তরে মেহতা বলেন, এটি শুধুই সুবিধা স্থগিত রাখার ব্যবস্থা। এই আলোচনার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিতে চাইলেও, সলিসিটর জেনারেল ও রাজ্যগুলোর আপত্তির মুখে তা স্থগিত রাখা হয়েছে।