অপরাজিতা জোয়ারদার রায়গঞ্জ: লেখাপড়া করে যে, গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে। এমন কথা শুনে বড় হলেও সবার কি সুযোগ মেলে পড়ার! বিশেষ করে মেয়েদের। তাতেই সময় থাকতে অক্ষরজ্ঞান হয়নি সোফিয়া রােয়র। রায়গঞ্জের উদয়পুর খালপাড়ের বাসিন্দা। ছোটবেলায় হারিয়েছেন বাবা, মাকে। সব কিছুরই ব্যতিক্রম থাকে। ষাটোর্ধ্ব সোফিয়াও তাই।
এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্বপ্নসাথী নামে স্কুল চালায়। দুঃস্থ পরিবারের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা, গান, আবৃত্তি, নাচ শেখে। সরকারি স্কুলেও যায় তারা। এলাকার ছোট্ট শিশুদের স্বপ্নসাথীতে পড়তে দেখে ফের পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখেন সোফিয়া। নিজের নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সঙ্গেই পড়াশোনা করতে নিয়মিত চলে আসেন। অ-আ-ক-খ আবারও প্রথম থেকে শেখেন। বর্তমানে বেশ খানিকটা রপ্ত করে ফেলেছেন। নিজে পড়েন, পাশাপাশি ছোট্ট নাতনিকেও পড়ান। ৬০ পার হয়েছে সোফিয়ার। জানার কোনও শেষ নেই, শিক্ষারও কোনও বয়স নেই। তাই এই বয়সেও শিক্ষার আলো পেতে চান। বাড়িতে ৭০-ঊর্ধ্ব বৃদ্ধ স্বামী দশরথ রায় অসুস্থ। তাই সোফিয়া মন্দির পরিচর্যার কাজ করেন। ছেলে গোবিন্দ গাড়ি চালায়। স্বপ্নসাথীর শিক্ষিকা নিবেদিতা ভট্টাচার্য বলেন, সোফিয়ার পড়াশোনার প্রতি ভীষণ আগ্রহ। নাতি মণীশ, সুনীত, নাতনি সৃষ্টি, মিষ্টি— সকলেই সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ে। পাশাপাশি সপ্তাহে তিনদিন নিজের ঠাকুমা সোফিয়াকে নিয়ে স্বপ্নসাথীতে পড়তে আসে তারা। সোফিয়ার এই পড়ার আগ্রহ সত্যিই অনুপ্রেরণা জোগায়।