মাড়ির রোগ প্রতিরোধ

মজবুত দাঁতের ভিত হল সুস্থ মাড়ি। কিন্তু সচেতনতা এবং যত্নের অভাবে আমরা বেশিরভাগই দাঁত এবং মাড়ির সমস্যায় ভুগি। মাড়ি ফুলে যাওয়া, মাড়ি থেকে পুঁজ-রক্ত বা মুখে দুর্গন্ধও ইত্যাদি হয়। মাড়ির রোগ এবং তার প্রতিরোধ নিয়েই বিশিষ্ট দন্তচিকিৎসক ডাঃ পরিমল মণ্ডল-এর সঙ্গে কথা বললেন কাকলি পাল বিশ্বাস

Must read

মাড়ি আসলে কী?
মাড়ি হল দাঁতের গোড়া বা মূলকে ঘিরে থাকা উপরের এবং নিচের চোয়ালের টিস্যুকে দাঁতের মাড়ি বা জিঞ্জিভা বলা হয়। মাড়ি হল গোলাপি রঙের কেরাটিনাইজড মিউকোসা যেটি দাঁতকে ঘিরে রাখে এবং রক্ষা করে।
প্রথমেই বলে রাখা ভাল এই মাড়ির অসুখটা পৃথিবীতে সর্বাত্মক। যেমন আমাদের দাঁতে ক্যাভিটি বা দাঁতে গর্ত হয় তাতে একটি মাত্র দাঁত ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিন্তু এই মাড়ির অসুখটা হচ্ছে এমন একটি অসুখ এটা একটা জেনারালাইজ ফর্ম। মাড়ির রোগ হলে সেটা প্রায় সমস্ত মাড়িকেই প্রভাবিত করে।

মাড়ির অসুখের ধরন কি দাঁতের চেয়ে আলাদা?
সবটাই দাঁতের সঙ্গেই যুক্ত। মাড়ির যে অসুখ হয় তাকে প্রাথমিক অবস্থায় বলা হয় জিঞ্জিভাইটিস। এই জিঞ্জিভাইটিস হলে যখন চিকিৎসা করা হয় না অথবা অবহেলা করা হয়ে থাকে সেটাই দিনের পর দিন বাড়তে বাড়তে হয়ে যায় পেরিওডন্টাইটিস। অর্থাৎ জিঞ্জিভাইটিসকে অবহেলা করে দিনের পর দিন না চিকিৎসা করে রেখে দিলেই সেটা পেরিওডন্টাইটিসে পরিণত হয়।

আরও পড়ুন-ভুয়ো ভোটার নিয়ে কর্মীদের সতর্ক করলেন সাংসদ বাপি

মাড়ির সমস্যা বা রোগের লক্ষণ কী?
অনেক সময় মাড়ি ফুলে ওঠে, খেতে গেলে মাড়ি ব্যথা করে। অনেক সময় না খেলেও দেখা যায় যে মাড়িতে একটু ব্যথা হচ্ছে। কিংবা অনেক ক্ষেত্রে আবার একটানা ব্যথা হচ্ছে, কোনও কিছু কামড় দিয়ে খেতে গেলে রক্ত বের হচ্ছে, থুতু ফেলতে গেলে রক্ত বের হচ্ছে, ব্রাশ করতে গেলে রক্ত বের হচ্ছে, এই ঘটনাগুলো যখন ঘটে তখনই বোঝা যায় যে মাড়ির কোনও রোগ হয়েছে, অর্থাৎ মাড়ি রোগগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

মাড়ি প্রদাহের কারণ কী?
আমরা আমাদের মুখের ভেতরটা যতই পরিষ্কার করি না কেন আমাদের মুখের লালা থেকে দাঁতের ওপর একটা আঠালো-আঠালো স্তর তৈরি হয়। সেটাকে বলা হয় পেলিকেল। এছাড়াও আমাদের সবার মুখেই ব্যাকটেরিয়া আছে। কারও মুখে কম কারও মুখে বেশি কিন্তু ব্যাকটেরিয়া-মুক্ত মুখ আমাদের কারওরই নয়। আর এই সমস্ত ব্যাকটেরিয়াগুলো প্রচণ্ড সুযোগসন্ধানী হয়। আর সেই কারণেই যখন এই পেলিকেলের সঙ্গে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো যুক্ত হয়ে যায় এবং এরপরে যদি এদের উপর লক্ষ্য না রাখা যায় তাহলে এদেরকে বের করা একটু মুশকিল হয়ে পড়ে। আর তখনই মাড়ি ফুলে ওঠে। আসলে ব্যাকটেরিয়ার কাজই হল সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়া। আর যখন মাড়িতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তখনই মাড়ির প্রদাহ বা ইনফ্ল্যামেশন হয়। এটা হল মাড়ির একটি সাধারণ রোগ, যেখানে মাড়িতে ব্যাকটেরিয়া এবং প্লাক তথা পুঁজ জমা হওয়ার কারণে প্রদাহ হয়, যার ফলে মাড়ি ফুলে যায়, লাল হয়ে যায় এবং দাঁত ব্রাশ বা ফ্লস করার সময় রক্তক্ষরণ হতে পারে, মাড়িতে ইনফ্ল্যামেশন হয় অর্থাৎ মাড়ি ফুলে ওঠে। আর যখনই মাড়ি ফুলে ওঠে তখনই মাড়িতে ব্যথা যন্ত্রণা, রক্ত পড়া পুঁজ পড়া, মুখে দুর্গন্ধ এই সমস্ত জিনিসগুলো ঘটতে থাকে।

এক্ষেত্রে কী করণীয়?
এক্ষেত্রে খুব ভাল করে ব্রাশ করা উচিত। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে কীভাবে ঠিকমতো ব্রাশ করতে হয়। বেশিরভাগ মানুষজনই মুখে টুথব্রাশ দেওয়ার পরে যখন সেটা সারা মুখে ছড়িয়ে পড়ে একটা মুখের মধ্যে তরতাজা ভাব আসে তখনই মুখটা ধুয়ে নেয়। কিন্তু ব্রাশটাকে সঠিকভাবে চালনা করা, অর্থাৎ কীভাবে ব্যবহার করবে, কতক্ষণ ব্যবহার করবে, দাঁতের সঙ্গে কোন অ্যাঙ্গেলে ব্যবহার করলে সঠিকভাবে দাঁত পরিষ্কার করা যাবে সে সম্বন্ধে ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জন সঠিকভাবে জানে না। আর সেই কারণে এই রোগগুলো দেখতে পাওয়া যায়। আসলে ব্যাকটেরিয়া যদি মাড়ির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় তাহলে সে তার কাজ করতে শুরু করে অর্থাৎ মাড়িকে অসুস্থ করতে শুরু করে।

আরও পড়ুন-উজানযাত্রা থেকে ৪০৪৩ : দুই হুজুরের গপ্পোয় দুই সাহিত্যিকের প্রথম উপন্যাসের সাতকাহন

মাড়ির রোগের কারণ কী? সবটাই ভিটামিনের ঘাটতি?
সমস্ত মাড়ির অসুখই যেকোনও বিশেষ ভিটামিনের অভাবে হয় এমন ভেবে নেওয়া কিন্তু ঠিক নয়। ভিটামিনের অভাবে অনেক রোগই হয়। কিন্তু শুধুমাত্র মাড়ির অসুখ ভিটামিনের অভাবে হচ্ছে এটা ভুল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপুষ্টির কারণে, যেটা আগে খুব হত কিংবা খুব বেশি ধরনের অপুষ্টিতে ভুগছে তাদের কথা আলাদা। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ ভিটামিনের অভাবে কখনওই মাড়ির রোগে ভুগতে পারে না। ভিটামিনের অভাবে একটা মাত্র রোগ হয় সেটা হল স্কার্ভি। ভিটামিন সি-এর অভাবে এই রোগটি হয়। তবে এই রোগটা আগেকার দিনে হত এখন আর দেখা যায় না। তবে এই অসুখটি অপুষ্টির কারণে হত। তবে সাধারণ মাড়ির অসুখ আর স্কার্ভি জিনিসটা এক নয়। তাই অবশ্যই বলা যায় না যে বিশেষ কোনও ভিটামিনের অভাবে মাড়ির রোগ হতে পারে।

মাড়ির রোগের শুরুর কারণটা তবে কী?
আসলে মানুষজনের সচেতনতার অভাবে, প্রকৃত যত্নের অভাবে মাড়ির রোগগুলো হয়। আমরা সবকিছুকে গুরুত্ব দিই দাঁত আর মাড়ি নিয়ে একেবারেই ভাবি না। ওটা আমাদের রুটিনের মধ্যে পড়ে না তাই দিনে দিনে বাড়ছে দাঁত ও মাড়ির অসুখ।

মাড়ি থেকে রক্তপাত কতটা বিপজ্জনক?
যথেষ্ট বিপজ্জনক। যখন মাড়ির অসুখ প্রাথমিক অবস্থায় থাকে তখন কেউই এটাকে গ্রাহ্য করে না। যতক্ষণ না প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে ততক্ষণ আমরা কোনওভাবেই সচেতন হই না। যখন মাড়ির অসুখটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যায় তখন আমরা সচেতনতা দেখাই। মাড়ি যখন সংক্রামিত হয়ে নরম হয়ে যায়। অর্থাৎ মাড়িতে যখন ইনফেকশন হয় তখন মাড়ি নরম হয়ে দাঁত থেকে আলগা হয়ে যায়, ফুলে যায় এবং এর ফলে রাতে রক্ত সঞ্চালন আরও বেড়ে যায়। তখন মাড়ির বিভিন্ন তল বা পৃষ্ট ফেটে গিয়ে অর্থাৎ ছিদ্র হয়ে গিয়ে রক্তপাত হয়।

আরও পড়ুন-বিজেপি রাজ্য নেতার দুর্নীতি নিয়ে দলে প্রশ্ন চিঠি শাহ-নাড্ডাকেও

এরকম অবস্থা হলে কী করা উচিত?
এই সমস্যার সমাধান বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে সচেতনতা বৃদ্ধি। অর্থাৎ সবাইকে নিজের নিজের দাঁত মাড়ি এগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমরা যে খাবার খাই তার বেশিরভাগটাই খাদ্যনালির মধ্যে দিয়ে পেটে চলে যায়। কিন্ত খাবারটা যখন মুখে দিয়ে চিবানো হয় তখন মুখে একটা আঠালো-আঠালো ভাব হয়ে যায়, সেটা সাধারণত শুকনো রুটি চিবালেও হয়। এক্ষেত্রে চিবানোর সময় কার্বোহাইড্রেট একটা চটচটে জিলেটিন এজেন্ট তৈরি করে। আর এটা দাঁতের সঙ্গে আটকে থাকে। শাকসবজি খাওয়ার সময় বেশ কিছুটা ফাইবার দাঁতের ফাঁকে ঢুকে যায়, মাংস বা প্রোটিন খাওয়ার সময় বেশ কিছু ফাইবার দাঁতের ফাঁকে ঢুকে যায় এবং যখনই আমরা সেইগুলো ঠিকমতো পরিষ্কার না করি তখন তারা দাঁতের ফাঁকে মাড়ির মধ্যে জমে থেকে কিছুদিন পরেই ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। এবং আমাদের মুখে আগের থেকে যে ব্যাকটেরিয়াগুলো থাকে তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে তোলে। যখনই ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তখন দাঁতের সঙ্গে তাদের সংযুক্তি আরও বেড়ে যায়। ব্যাকটেরিয়াগুলো নিজেও জিলেটিন এজেন্ট প্রস্তুত করে। তাই মাড়ি ঠিক রাখার জন্য আমাদের প্রতিদিন খাওয়ার পর ঠিকমতো ব্রাশ করা দরকার। কিন্তু সেটা দৈনন্দিন জীবনে যখন সম্ভব হয় না তখন অন্তত দিনে দু’বার ব্রাশ করতে হবে একবার সকালবেলায় আর একবার রাতে শুতে যাওয়ার আগে। বিশেষ করে রাতের বেলা খাওয়ার পরে ঘুমোতে যাওয়ার আগে খুব ভাল করে ব্রাশ করে মুখ পরিষ্কার করা উচিত। আমরা রাত্রিবেলা যে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ঘুমাই, সেসময় আমাদের মুখের মধ্যে লালা ক্ষরণ কম হয়। রাত্রিবেলা ঘুমের সময় মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হল লালার উৎপাদন কমে যাওয়া, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
দিনের বেলায় মুখ থেকে লালা বের হয় যেটা প্রাকৃতিকভাবে আমাদের দাঁত আর মাড়িকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু রাতে ঘুমের সময় লালার উৎপাদন আশি শতাংশ কমে যায়, ফলে আমাদের মুখ ব্যাকটেরিয়ার প্রজননস্থলে পরিণত হয়। তাই এর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমাদের রাত্রিবেলা ঘুমোনোর আগে ব্রাশ করা অত্যন্ত জরুরি একটা ব্যাপার। কারণ পরিষ্কার জায়গায় ব্যাকটেরিয়া অতটা জন্মাতে পারে না। এবং এরপরে ঘুম থেকে উঠে সকালবেলায় খুব হালকা করে ব্রাশ করে নিলে কোনও অসুবিধা হবে না। এছাড়াও প্রত্যেকবার খাবার পরে মুখে অল্প জল দিয়ে চার-পাঁচবার অনেকক্ষণ সময় নিয়ে কুলকুচি করতে হবে।

তাহলে মাড়ি পরিষ্কার রাখাটা অত্যন্ত জরুরি?
হ্যাঁ, আসলে দুটো দাঁতের ফাঁকের অংশটাতেই খাবার বেশিরভাগ সময় আটকে থাকে। আর এর কারণে যেমন দাঁতের অসুখ হয় ঠিক তেমনি মাড়ির অসুখও হয়। তাই সব থেকে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে যারা রোগ সৃষ্টি করছে তাদের যদি আমরা তাড়িয়ে দিতে পারি তাহলেই রোগ হতে হওয়ার সম্ভাবনা অনেক পরিমাণে কমে যায়। এছাড়াও প্রাথমিক লক্ষণ দেখতে পাওয়া গেলেই আমরা যদি কোনও ডেন্টিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে নিই তাহলে মাড়ির রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুন-বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন পরিচালক অনুরাগ

পাইরিয়া জিনিসটা কী?
জিঞ্জিভাইটিস হওয়ার পর চিকিৎসা না করলে সেটা পরিণত হয় পেরিওডন্টাইটিসে। এই পেরিওডন্টাইটিস হচ্ছে ডাক্তারি ভাষা এটারই বহুল প্রচলিত তথা চলতি ভাষা হচ্ছে পাইরিয়া। পাইরিয়া কোনও আলাদা রোগ নয়। অনেকে আবার এই রোগটাকে বংশগত বা জিনগত রোগও বলে। কিন্তু এটা একদমই ভুল কথা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব, সচেতনতা অভাব, যত্নের অভাব এইসব অভাবের জন্য পাইরিয়া হয়ে থাকে। কোনও কোনও সময় এই পাইরিয়া আবার বেড়েও যায়।

কোন সময় বাড়ে?
যখন কোনও মহিলা গর্ভবতী থাকে। তখন অনেকের প্রেগনেন্সি জিঞ্জিভাইটিস দেখতে পাওয়া যায়। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভাবস্থায় নানারকম হরমোনের চেঞ্জ দেখতে পাওয়া যায় বা হরমোনাল চেঞ্জ হয়। যখন তাদের সাত-আট মাসের গর্ভাবস্থায় পৌঁছান তখন তাঁদের অনেকরকম শারীরিক কষ্ট হয়। এই সময় তাঁরা ঠিকমতো দাঁতের যত্ন নিতে পারেন না। আর তার ফলে এই সময় মাড়ির অসুখটা একটু বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যায়। আর সেই কারণে এটার নামই হয়ে গিয়েছে প্রেগন্যান্সি জিঞ্জিভাইটিস। সন্তান জন্ম হওয়ার পরে অবশ্য এটা আস্তে আস্তে কমে যায়।

মাড়িকে সুস্থ রাখতে কী কী করা দরকার?
কোনও অসুবিধা না হলেও বছরের দু’বার ডেন্টিস্ট-এর কাছে যাওয়া দরকার। প্রতিদিন পরিষ্কার করা ছাড়াও দাঁতে কিছু ময়লা জমলে, ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে সেটা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। এটা মাড়ির বা দাঁতের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার একটা বড় উপায়। কিছু খাওয়ার পর ভাল করে কুলকুচি করে মুখ ধুতে হবে। দিনে দু’বার ব্রাশ করতে হবে।
আঙুল দিয়ে ভাল করে মাড়ির ওপর ম্যাসাজ করতে হবে। এতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। দাঁতের যে অংশগুলোতে ব্রাশ পৌঁছয় না সেই অংশগুলো ডেন্টাল ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

Latest article