সুমন তালুকদার, বারাসত : রাজ্যকে মাছ উৎপাদনে স্বনির্ভর করতে এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা মাছের ওপর রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিন বছর ধরে চলছে সেই কর্মযজ্ঞ। ছোট মাছের পাশাপাশি বড় মাছের উৎপাদনের উপরও জোর দেওয়া হয়েছে রাজ্যে। আর তাতেই আসছে সাফল্য। সরকারি সহায়তায় মাছচাষ থেকে বাড়ছে আয়। ফলে খুশি মাছ চাষে যুক্ত মানুষরাও। পিছিয়ে নেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। ছোট মাছ তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এই মাছ রফতানি করা যায় না। বড় মাছ রফতানি করা সুবিধাজনক। সে কারণেই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বড় মাছ আসে রাজ্যে। এখানে বড় মাছ যেমন, রুই, কাতলার চাহিদাও বেশি। এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন এরাজ্যেও বড় মাছের চাষ করার জন্য। নির্দেশ মত উত্তর ২৪ পরগনার বড় বড় জলাশয়গুলির পাশাপাশি ছোট জলাশয়গুলিতেও ছোট মাছের সঙ্গে বড় মাছ চাষেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিঙি, মাগুর, পাঙ্গাশ-সহ অন্যান্য মাছের পাশাপাশি রুই, কাতলা, মৃগেলের মত বড় মাছের চাষও জোরকদমে শুরু করা হয়েছে। মাছচাষিদের উৎসাহ দিতে মাছের চারা ও মাছের খাবার বিনামূল্যে দিচ্ছে রাজ্য। মন্দির, মসজিদ, স্কুল, মাদ্রাসা-সহ সরকারি জলাশয়তেও বড় মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে। যাতে ওইসব প্রতিষ্ঠানগুলি অন্ধ্রের মাছ না কিনে তাদের জলাশয়ের মাছ থেকে চাহিদা পূরণ করতে পারে। এর জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯৪৯ টাকা। বিলি করা হয়েছে ১০-১২ সেন্টিমিটার লম্বা প্রায় ৭০ লক্ষ মাছের পোনা। জেলার ২২টি ব্লক-সহ কিছু পুর এলাকার ছোট জলাশয়ে এই বিপুল পরিমাণ মাছের পোনা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দিয়েছে জেলা মৎস্য দফতর।
আরও পড়ুন-নতুন সিজন আসছে দুই সিরিজের
জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী জানান, বাংলার মৎস্য চাষিদের স্বনির্ভর করতে মুখ্যমন্ত্রী অন্ধ্রের মাছের বদলে বাংলার বড় মাছ চাষে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পরিষদ ও জেলা মৎস্য দফতর একযোগে সেই কাজ করছে। আগামী বছর থেকেই আমাদের জেলা বড় মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা ডঃ পার্থসারথি কুন্ডু জানান, শুধুমাত্র এই জেলাতেই প্রতিবছর ১০-১২ হাজার মেট্রিক টন মাছ অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসে। সেই নিরিখে গোটা রাজ্যে বিপুল পরিমাণ মাছ ঢোকে। সেই বিপুল পরিমাণ মাছের চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাজ্যে বড় মাছ চাষের নির্দেশ বছর তিনেক আগেই দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতোই কাজ চলছে।